×

সারাদেশ

চরম ঝুঁকিতে হাওরের ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:৫৫ পিএম

চরম ঝুঁকিতে হাওরের ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল

ছবি: ভোরের কাগজ

সুনামগঞ্জের শাল্লায় পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনের উত্তর অংশের দিরাই শাল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে হবিবপুর ইউপির আনন্দপুর গ্রামের ফুটবল খেলার মাঠ পর্যন্ত প্রায় ৩০মিটার বাঁধে এ বছর মাটি পড়েনি। বাঁধটির উপরের অংশের মাটি গত বর্ষার বন্যায় ক্ষতি করেছে। কিন্তু ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ১৯৭টি প্রকল্প দেয়া হলেও, এখানে কোনো প্রকল্প দেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে বাঁধ সংলগ্ন দাঁড়াইন নদীর পানি বেড়ে গেলে চরম ঝুঁকিতে পড়বে উপজেলার সবচেয়ে বড় ছায়ার হাওরের ৫ হাজার হেক্টর বোরো জমির ফসল।

এলাকার কৃষকরা বলছেন, সরকার কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে হাওরের ফসল রক্ষার জন্য। অথচ মাত্র ১শ ফুট জায়গায় কোনো প্রকল্প দেয়া হয়নি। এখন যদি নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়, তাহলে পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনের উত্তর-পূর্ব অংশ দিয়ে পানি ঢুকে আনন্দপুর দক্ষিণ হাটির ব্রিজের নিচ দিয়ে ছায়ার হাওরে পানি প্রবেশ করবে। তলিয়ে যাবে ছায়ার হাওরের কৃষকের একমাত্র বোরো ফসল। পল্লী বিদ্যুতের উত্তর পূর্ব অংশের জায়গাটি এমনিতেই নিচু।

২০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনের উত্তর ও পূর্ব অংশটি ছোট একটি খালের মত হয়ে গেছে।

আনন্দপুর গ্রামের কৃষক অমলেন্দু দাশ বলেন, আমি যখন ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে পিআইসির কাজ করি, তখন দিরাই শাল্লা রাস্তা হতে খেলার মাঠ পর্যন্ত এই বাঁধটি প্রথম আমরাই কাজ করেছি। এরপর আর কেউ এই বাঁধে মাটি ফেলেনি। এবার বন্যায় বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বাঁধে আরও ৩থেকে ৪ফুট উঁচু করে মাটি ফেলার প্রয়োজন। অন্যথায় ছায়ার হাওর চরম ঝুঁকিতে থাকবে। ফসলের কোনরূপ ক্ষয়ক্ষতি হলে এই দায় কে নেবে? একই গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হরেন্দ্র চন্দ্র দাশ বলেন, এই বাঁধটিকে আরও উঁচু না করলে ছায়ার হাওরের বিপদ। দাঁড়াইন নদীতে পানি বাড়লে বাঁধ উপচে দক্ষিণ হাটির কালভার্ট দিয়ে পানি ঢুকবে হাওরে। এখানে অন্তত ৩ফুট মাটি ফেলে বাঁধ উঁচু করার দাবি মুক্তিযোদ্ধা হরেন্দ্র দাশের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক কৃষক বলেন, ওই জাগাখান না রাখলে গাঙে পানি আইলে ঘরের বউ, বাচ্চা-কাচ্চা মিইল্যা আমরা উড়া, কোদাল লইয়া বান্দ মাডি (মাটি) কাটা যাইতাম নানি?

এ বিষয়ে উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আর এল ধরা হয়েছে ৬.৫ আর রোডস এন্ড হাইওয়ের আর এল কিন্তু আরও বেশি। এ কারণে রাস্তার সাথে মিলাইলে ডাউন হতে পারে। রোডস এন্ড হাইওয়ের আর এল আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের আর এল কিন্তু এক না। তারপরও আমি এসও সাবকে বলব বিষয়টি দেখার জন্য। তিনি নিজেও সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান তিনি।

এব্যাপারে এসও আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এইডা আবার কোন জায়গা? মানে নদীর পানি ঢুকবে? আমার এখনো মাথায় আইতাছে না কোন জায়গার কথা বলছেন! আর এখন তো নতুন করে প্রকল্প দেয়ার সুযোগ নাই। তারপরও আমি কেন ঝুঁকি নেব। অফিসের কাজ সেরে পরিদর্শনে যাবেন বলে জানান উপজেলা কাবিটা স্কিম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির এই সদস্য সচিব।

উল্লেখ্য, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে উপজেলায় ১৬০ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারে সরকার বরাদ্দ দিয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App