×

সারাদেশ

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:০৯ পিএম

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর সামসুজ্জোহার মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার

ছবি: সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক, ভাষা সৈনিক ও মরণোত্তর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত প্রয়াত জননেতা একেএম শামসুজ্জোহার ৩৬ তম মৃত্যুবার্ষিকী সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি)।

প্রয়াত একেএম শামসুজ্জোহা ছিলেন একাধারে আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, গণ পরিষদের সদস্য ও স্বাধীনতা পরবর্তী জাতীয় সংসদ সদস্য। মরহুম একেএম সামসুজ্জোহা এদেশের অন্যতম ঐহিত্যবাহী ওসমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম জননেতা খান সাহেব ওসমান আলীও ছিলেন একজন ভাষা সৈনিক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং সাবেক এমএনএ।

ঐতিহ্যবাহী এই পরিবারের আদি নিবাস নারায়ণগঞ্জের ‘বায়তুল আমান ভবন’ আজও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেখানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার বীজ বপন করা হয়েছিল। মহান ভাষা আন্দোলনের সময় এই বায়তুল আমান ভবনে তৎকালীন পুলিশ প্রবেশ করে ওসমান পরিবারের সদস্যদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীতেও উঠে এসেছে ভাষা আন্দোলনে এই বায়তুল আমান ভবন ও ওসমান পরিবারের ত্যাগের কথা।

মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরনার্থী শিবিরে মরহুম সামসুজ্জোহা ‌ত্রাণবন্ধু নামে পরিচিত ছিলেন। প্রয়াত এই জননেতা সর্বপ্রথম ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর হাইকোর্টে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে বিজয়ের বার্তা প্রচার করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্ত থাকার আহবান জানান। ওই দিন অপরাহ্নে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পাক সেনাদের হাতে আটক বঙ্গবন্ধু পরিবারকে মুক্ত করতে গিয়ে পাক সেনা কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জের একটি সুধী সমাবেশে সেই ঘটনাটি নিজ মুখে বর্ণনা করেছিলেন এবং মহান জাতীয় সংসদেও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই ঐতিহ্যবাহী ওসমান পরিবারের ত্যাগ-তীতিক্ষার কথা স্মরণ করে বক্তব্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীকে গর্বিত করেছিলেন।

সামসুজ্জোহার বড় ছেলে প্রয়াত জননেতা ও সাবেক এমপি নাসিম ওসমান বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিশোধ নিতে ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট নবপরিনীতা বধূকে রেখেই প্রতিরোধ যুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর সামসুজ্জোহাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতার হত্যাযজ্ঞের সময় তিনি ও শহীদ জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন মনসুর আলী একই সেলে বন্দি ছিলেন। সামসুজ্জোহা ছিলেন ওই কলঙ্কিত ইতিহাসের অন্যতম সাক্ষী।

প্রয়াত সামসুজ্জোহার মেঝ ছেলে বিএমইএ’র সভাপতি একেএম সেলিম ওসমান এমপি ও ছোট ছেলে একেএম শামীম ওসমান এমপি একাধিকবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় প্রয়াত সামসুজ্জোহাকে ২০১২ সালে স্বাধীনতা পদক (মরণোত্তর) এ ভূষিত করা হয়।

প্রয়াত শামসুজ্জোহার সহধর্মীনি ও রত্নগর্ভা প্রয়াত নাগিনা জোহাও ছিলেন ভাষা সৈনিক। তিনি ২০১৬ সালের ৭ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে একেএম সামসুজ্জোহার ৩৬ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের পরিবার ও নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠন দিনভর কর্মসূচি পালন করবে।

এছাড়া ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়নে সামসুজ্জোহা এম.বি ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও আজ ২০ ফেব্রুয়ারি দিনব্যাপী পবিত্র কোরআন খানি, শোক র‌্যালী, কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারতের পাশাপাশি মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে চাষাড়া হীরা মহলে বাদ আছর প্রয়াত একেএম সামসুজ্জোহা ও প্রয়াত বেগম নাগিনা জোহার রুহের মাগফেরাত কামনায় মিলাদ ও দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

মরহুমের মেঝ ছেলে সেলিম ওসমান এমপি ও ছোট ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা একেএম শামীম ওসমান এমপি সকলকে রুহের মাগফেরাত কামনায় চাষাড়াস্থ পৈত্তিক বাড়ি হীরা মহল ও পার্শ্ববর্তী মসজিদে বাদ আছর আয়োজিত মিলাদ ও দোয়ায় অংশ গ্রহণ করার আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App