রিমান্ডে বাঁশখালীর ইউপি চেয়ারম্যান লেয়াকত
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৪:২৪ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকায় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বাদী এসআই মাসুদ ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বাঁশখালী সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট মাঈনুল ইসলামের আদালত চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা, আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান মো. লেয়াকত আলীর জামিন নামঞ্জুর করে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া আগামী ১৬ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা করেছেন। এদিকে, লেয়াকত আলীকে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসার সময় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় বাঁশখালী সিনিয়র জুডিয়সিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঈনুল ইসলামের আদালত এ রায় দেন। এ সময় আসামি পক্ষ জামিন চেয়ে আবেদন করে। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ সময় আদালতের বিচারকক্ষ থেকে বের হয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠার সময় আদালত প্রাঙ্গণে উৎসুক জনতার সামনে পুলিশ ও থানার ওসিকে দম্ভোক্তি করে বিএনপির এই বহিস্কৃত নেতা বলেন, ওয়া ওসি সাব এ রকম ৩/৪ মামলা দিলে কি হবে, ১০০ মামলা দিলেও কোন সমস্যা নাই, কিছুই হবে না।
আসামিপক্ষের আইনজীবী নুরুল আবছার, দীপংকর দে, ও দিদারুল আলম বলেন, লেয়াকত আলীকে হুকুমদাতা হিসেবে আসামি করা হয়েছে। কোথায় থেকে হুকুম দিয়েছেন সেটা উল্লেখ্য করা হয়নি। আদালত লেয়াকত আলীর একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এছাড়া আরো দুইটি (চাঁদাবাজি ও অস্ত্র আইনের) পৃথক মামলায় পুলিশ লেয়াকত আলীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত আগামী ২০ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এ সময় সরকার পক্ষের কৌশলী ছিলেন সিএসআই মাকসুদ।
এদিকে, এ বিষয়ে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, ‘তিনি (চেয়ারম্যান) আদালত থেকে বের হয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠে আমাকে বলেছেন, শুধু এই একটি নয়; উনাকে আরও একশ মামলা দিলেও কিছু করতে পারবো না। উনি আসামি তাই উনার হাতে হাতকড়া পরানো হয়েছে। উনি আসামি না হয়ে এমনি কেউ হলে আইনগত ব্যবস্থা নিতাম। এরপরও আইনি প্রক্রিয়ায় জিডি করে রাখা হবে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি গণ্ডমারায় এস.এস. পাওয়ার প্ল্যান্টের বাইরে বালি সাপ্লাইয়ের পাইপ পরিবহনের সময় বেঁড়িবাধ সড়কে আবদুল খালেক গংদের সাথে ঠিকাদার সায়মনের লোকজনের সাথে তর্কাতর্কি থেকে সংঘর্ষের রুপ নেয়। এ সময় গাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল লুট করা হয়।
এরপর রাতে দফায় দফায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সায়মন ও পুলিশসহ ১৩ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এ ঘটনায় রাতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় বাঁশখালী থানার এসআই লিটন চাকমা বাদী হয়ে ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ১০০/১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জাহিদ হাসান বাদী হয়ে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ৩০ জন অজ্ঞাতসহ আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রাতে অভিযান চালিয়ে লেয়াকত আলীকে অস্ত্র-গুলিসহ গ্রেপ্তার করে জেলা ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে ডিবির উপ-পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে তাকে একমাত্র আসামি করে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।