দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়ার খবরে পাবনায় বইছে আনন্দের বন্যা। সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সমাজে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে রাষ্ট্রপ্রতি পদে মনোনয়ন দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুসহ পাঁচ এমপি, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা পরিষদ, পাবনা পৌরসভা, পাবনা প্রেস ক্লাবসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও ব্যক্তি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই অভিনন্দন বার্তা দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং দলের পার্লামেন্টারি পার্টির প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হতে যাচ্ছেন সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। তিনি ১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বাড়তে থাকে নেতাকর্মীদের ভিড়। শুরু হয় মিষ্টি বিতরণ, আনন্দ উল্লাস ও তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল। জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক পথচারী ও রিকশাচালকদের মিষ্টি খাওয়ান। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লালের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল বের হয়। শহরের রাধানগর মজুমদার একাডেমি স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি সোহেল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়ে তা শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।

রবিবার সকালে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নের খবর পাবনায় জানাজানি হলে শহরবাসীর মুখে মুখে বিষয়টি প্রচার হতে থাকে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম বলেন, সাহাবুদ্দিন চুপ্পু আমাদের অহংকার ও গর্ব। তিনি একজন নিরহংকার ও সজ্জন মানুষ। এমন একজন ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। একজন যোগ্য মানুষকে তার যোগ্য সম্মান দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স বলেন, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী একজন সৎ, সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়ন দেয়ায় পাবনাবাসী আবেগ আপ্লুত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এমন সংবাদে শুধু আমরাই নই, সমস্ত পাবনাবাসী আনন্দিত।

পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ স ম আবদুর রহিম বলেন, এমন সংবাদে আমরা আনন্দিত। সত্যি দীর্ঘদিন পর পাবনাবাসী রাষ্ট্রপতি পেল।

এ বিষয়ে সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর বাল্যবন্ধু ও বীরমুক্তিযোদ্ধা রবিউল ইসলাম রবি বলেন, তার এই প্রাপ্তি আমার জীবনের সেরা আনন্দ। এর চাইতে খুশি কোনো দিন হইনি। ওর এই অর্জনে বন্ধু হিসেবে ও পাবনাবাসী হিসেবে আমি গর্বিত।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু পাবনা প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য। তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক হাবিবুর রহমান স্বপন বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বৃহত্তর পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এমন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতির মতো দায়িত্বশীল পদে মনোনয়ন দেয়ায় আমরা আনন্দিত।

পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএম ফজলুর রহমান বলেন, খবরটি শোনার পর আমরা অনেকটাই অবেগাপ্লুত। এই প্রাপ্তি পুরো জেলাবাসীর প্রাপ্তি।