×

সারাদেশ

কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে প্রথম দিনে ১৮৬ জনকে হস্তান্তর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৫:০২ পিএম

কুতুপালং ট্রানজিট ক্যাম্পে প্রথম দিনে ১৮৬ জনকে হস্তান্তর

ছবি: ভোরের কাগজ

শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্প পুড়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে সরকার।

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দিনে ৩৬টি পরিবারের ১৮৬ জনকে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শূন্যরেখার বসবাসরত রোহিঙ্গা আরেফ আহাম্মদ জানিয়েছেন, গত ১৮ জানুয়ারি ভোর থেকে শূন্যরেখা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গোলাগুলি শুরু হয় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসা ও আরএসও’র মধ্যে। পরে বিকেলে ক্যাম্পটি পুড়িয়ে দেয়া হয়। আগুনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা। সেদিনের স্মৃতি মনে করলে এখনো আঁতকে ওঠেন রোহিঙ্গারা। এমন দুর্দশাগ্রস্ত সময়ে তাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মিজানুর রহমান আরো বলেন, ‘শূন্যরেখায় বসবাসরত রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমারের বিদ্রোহী সন্ত্রাসীদের যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে তা মানবিকদৃষ্টিতে তাদের সরিয়ে উখিয়ার কুতুপালং পার্শ্বে ট্রানজিট ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এর মধ্যে স্থানান্তরকৃত যেসব রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যাবে, তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হবে।

অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দোজা জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়। সেই কমিটি দুই হাজার ৯৭০ জনের একটি তালিকা তৈরি করে। তাদের প্রথমে উখিয়ার বালুখালী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসছে। পরে সেখান থেকে যারা আগে থেকেই নিবন্ধিত তাদের উখিয়া-টেকনাফের নিজ নিজ ক্যাম্পে পাঠানো হবে। বাকিদের নিবন্ধন করে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় দেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিলেও প্রায় ৬৩০ পরিবার চার হাজার ৩০০ জন রোহিঙ্গা তুমব্রুর শূন্যরেখায় ক্যাম্প গড়ে তুলেছিলেন। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসলেও গত ১৮ জানুয়ারি দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে অগ্নিসংযোগ করা হলে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যায় ক্যাম্পটি তখন থেকেই ঘুমধুম ইউনিয়নের পার্শ্বে তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁবু দিয়ে বসবাস করে আসছিল।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, তুমব্রুতে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের গণনা শেষে ৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসন, আরআরআরসি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিনিধিরাসহ জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে ৩৬ পরিবারের ১৮৬ জন সদস্যকে ট্রানজিট ক্যাম্পে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বিকালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আইআরসিআরসির সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সোমবার বিকেলে রোহিঙ্গা সংখ্যা গণনার কাজ সম্পন্ন করেছে।’

একজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যের সমন্বয়ে দুইদিনে মোট আটজন এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। এখানে ৫৩৭টি পরিবারে মোট দুই হাজার ৯৭০ জন রোহিঙ্গাকে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চেয়ারম্যান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App