×

সারাদেশ

সাগরে উৎপাত বেড়েছে জলদস্যুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১৫ পিএম

সাগরে উৎপাত বেড়েছে জলদস্যুর

ছবি: সংগৃহীত

গত ৩ সপ্তাহ সাগরে তেমন মাছ না পাওয়ায় লোকসানের কারণে সাগরে যায়নি অধিকাংশ ফিশিং ট্রলার। তবে সম্প্রতি মাছ পেতে শুরু করেছেন জেলেরা। একই সঙ্গে জলদস্যুর উৎপাত বাড়ায় উদ্বিগ্ন জেলেরা। জলদস্যু দমনে প্রশাসনের প্রতি আরো জোরদার তৎপরতার দাবি ট্রলার মালিক ও মাঝি-মাল্লাদের।

জেলেরা সাগরে মাছ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জলদুস্যতা। প্রতিদিন সাগরের কোনো না কোনো মোহনায় জলদস্যুদের হামলার শিকার হচ্ছেন জেলেরা। গত ২৬ জানুয়ারি রেজুরখালের মোহনায় অস্ত্রের মুখে একটি ফিশিং ট্রলার নিয়ে যায় জলদস্যুরা। ফিশিং ট্রলারের মালিক মহেশখালীর তাজিয়াকাটার মোহাম্মদ হোসেন জানিয়েছেন, রেজুর খালের সামনের ফাঁড় থেকে ৩ দিন মাছ ধরার পর জলদস্যুরা জিম্মি করে ট্রলার নিয়ে গেছে। জলদস্যুদের চিহ্নিত করা না গেলেও বিভিন্ন মাধ্যমে তারা টাকা দাবি করছে। সাগরে মাছ বৃদ্ধি পেলেই জলদস্যুরা তৎপর হয়ে উঠে। যার ফলে আমরা নিরাপত্তাহীতায় থাকি।

মুহুরাকাটার ফিশিং ট্রলারের মালিক নুরুল আবচার জানান, তিন সপ্তাহ সাগরে যায়নি ট্রলার। গত ৫ তিন দিন আগে সাগরে গিয়ে ৪ দিনে ৫ লাখ টাকার মাছ পেয়েছি। এরপর প্রায় ২ লাখ টাকার তেল-বাজার নিয়ে ২৭ জানুয়ারি সাগরে যাত্রা করলে কুতুবদিয়ার মোহনায় ধাওয়া করে একদল জলদস্যু। কোনো উপায় না দেখে ট্রলার নিয়ে বাঁশখালীতে চলে আসতে হয়। এতে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। এর আগে একই স্থানে আরো ২টি ট্রলার লুট করেছে জলদস্যুরা। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পেলে ঝুঁকি নিতে চাইবে না কোনো ট্রলার মালিক। গত ৩ সপ্তাহে কক্সবাজারের আরো ১২টি মাছ ধরার ট্রলারে লুটপাট, জেলেদেরকে মারধর ও জাল ছিনিয়ে নিয়েছে দস্যুরা।

শহরের নুনিয়াছড়ার আবদুস শুক্কুর মাঝি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন অলস সময় কাটানোর পর এখন আবারো ট্রলার নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে জলদস্যুদের তৎপরতা বাড়ায় শ্রমিক পেতে সমস্যা হচ্ছে। উচ্চমূল্য দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সবাই নিরাপত্তা চায়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে অনেক ট্রলার সাগরে যেতে পারবে না। সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া ও রেজুরখালের মোহনায় জলদস্যুর তৎপরতা বেড়েছে। মাছ নিয়ে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার আড়তে আসতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলদস্যুরা। একটু সতর্ক না থাকলে লাখ লাখ টাকার জাল কেটে নিয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় ইঞ্জিনের মূল্যবান পার্টস খুলে নিয়ে যায়। ট্রলার অচল করে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। যার ফলে মাঝি-মাল্লারা চরম নিরাপত্তাহীতায় থাকে। সবার পরিবার থাকে প্রতিনিয়ত উদ্বিগ্ন।

কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন জানিয়েছেন সাগরে জলদস্যুতা বাড়ায় আমরাও উদ্বিগ্ন। ট্রলার নিয়ে সাগরে যেতে মাঝি-মাল্লারা ভয় পেলে আড়তে মাছও কমে যায়। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আমাদের ব্যবসায়ও লোকসান যাবে। কোস্ট গার্ড তৎপরতা বাড়ালে জলদস্যুদের দমনে অনেকটা অগ্রগতি হতো।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, জলদস্যুদের তথ্য পেলেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া কোনো ফিশিং ট্রলারের মালিক পক্ষ অভিযোগ করেনি। জলদস্যুদের ব্যাপারে উপকূলীয় সব থানাকে সতর্ক থাকতে নির্দেশনা দেয়া আছে। থানায় অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App