×

সারাদেশ

শাল্লায় বোরো রোপণ শেষের দিকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ০৪:৪৮ পিএম

শাল্লায় বোরো রোপণ শেষের দিকে

ছবি : ভোরের কাগজ

উপজেলায় ঝুলে আছে পিআইসি

সুনামগঞ্জের শাল্লায় এখনো ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামতের জন্য পিআইসি কমিটি গঠনের কাজ ঝুলে আছে। কৃষকদের অভিযোগ, লোক দেখানোর জন্য গত ১৫ ডিসেম্বর ৮ থেকে ৯টি পিআইসি কমিটির উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের সময় কয়েক টুকরি মাটি ফেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে পিআইসি কমিটি কর্তৃক বাঁধ নির্মাণের কাজ। বাঁধের নির্মাণ কাজ বিলম্বে শুরু করা হয় প্রতি বছরই। শেষে তাড়াহুড়া করে বাঁধ মেরামত করতে গিয়ে দায়সারাভাবে কাজ করা হয়। ফলে বাঁধের কাজ হয় নড়বড়ে। যেকারণে সামান্য পানির চাপেই ভেঙে যায় বাঁধ। এভাবে দেরিতে কাজ শুরু হওয়ায় প্রায় বছরই একমাত্র বোরো ফসল থাকে চরম ঝুঁকির মধ্যে।

অন্যদিকে উপজেলার কৃষকেরা ঘরে বসে নেই। হাওরে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এবছর ১৫ দিন আগেই বোরোজমিতে রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায় সূর্য ওঠার আগেই শীতের প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, কুয়াশা ও গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জমিতে চারা রোপণের কাজ শেষ করছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে নিম্নাঞ্চলের বোরোজমিতেও রোপণের কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু পিআইসি কমিটি গঠন ও বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছেন কৃষকরা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে উপজেলায় বাঁধ নির্মাণ ও মেরামতের কাজ হবে ১৬০ কি.মি.। উপজেলার ১১৯টি গ্রামের জমি রয়েছে ৬টি হাওরে। হাওরগুলো হলো ছায়ার হাওর, কালিকোটা হাওর, উদগল হাওর, ভান্ডাবিল হাওর, বরাম হাওর ও কুশিয়ারা ডানতীর। এসব হাওরে বোরো আবাদ করা হয় ২১ হাজার ৬৯৪ হেক্টর জমিতে। এই বোরো ফসলের উপরই জীবিকানির্বাহ করেন উপজেলার ২৪ হাজার, ৬১৫ জন কৃষক। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের এই তথ্য ২০১৪ সালের।

এবিষয়ে হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন, হাওরের বোরোজমিতে রোপণের কাজ প্রায় শেষের পথে। কিন্তু পিআইসি কমিটি এখানো গঠন করা হয়নি। উপজেলাই ঝুলে রয়েছে। পিআইসি কবে গঠন করা হবে, কাজই বা কবে শুরু হবে। হাওরে পানি তো শুকিয়ে গেছে। গত বছর ছায়ার হাওর উপ প্রকল্পের আওতায় (মাইতির) ৮১ নং পিআইসির বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকে ছায়ার হাওর তলিয়ে গিয়েছিল। এতে কৃষকের ধান ও খড়ের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন এই বাঁধটি বড় ক্লোজার। কিন্তু এখনো এই বাঁধে কাজ শুরু হয়নি। উপজেলায় এধরণের আরও অনেক ক্লোজারের কাজ শুরু না হওয়ায় হাওরগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান তিনি।

পাউবোর উপজেলা শাখা কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমরা উপজেলায় পিআইসি গঠন করেছি ১১টা। কয়েকটি প্রকল্পের কাজও চলমান আছে। বাকি পিআইসি দ্রুতই গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।

কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ইতোমধ্যেই বেশকিছু পিআইসি গঠন করা হয়েছে। কাজও চলমান রয়েছে। বাকি পিআইসিগুলো সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই গঠন করা হবে।

২০২১-২০২২ অর্থ বছরে উপজেলায় ৮৭ কি.মি. ভাঙা বন্ধকরণ ও মেরামত কাজে বরাদ্দ ছিল ২৪ কোটি টাকা। প্রকল্প ছিল ১৩৮টি। তবে চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরের বরাদ্দ ও প্রকল্পের সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা ২০১৭ অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়েছে ও ২৮ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App