×

সারাদেশ

লামায় রাবার কোম্পানির লীজ বাতিলের দাবিতে সমাবেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২২, ০৮:১০ পিএম

লামায় রাবার কোম্পানির লীজ বাতিলের দাবিতে সমাবেশ

সোমবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সাত দফা দাবিতে আদিবাসী ছাত্র-যুব সংগঠনের নাগরিক সমাবেশ। ছবি: ভোরের কাগজ

বান্দরবানের লামায় রাবার কোম্পানি কর্তৃক ম্রো এবং ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা বন্ধ এবং প্রাণ প্রকৃতিবিনাশী কোম্পানির লীজ দ্রুত বাতিলসহ সাত দফা দাবিতে নাগরিক সমাবেশ করেছে আদিবাসী ছাত্র-যুব সংগঠন।

সোমবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা লামায় তিনটি গ্রামের অধিবাসীদের ৪০০ একর জমি বেদখল করা, সেখানে বসবাসকারী ৩৯টি ম্রো এবং ত্রিপুরা পরিবার উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র, ভূমি রক্ষায় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, ম্রো আদিবাসীদের ৩০০ কলাগাছ কেটে ফেলা, ম্রো কার্বারি পাড়ার গ্রামবাসীদের অন্তত ৫০টি আম গাছ এবং আনুমানিক ২০ একর পরিমাণ গ্রামের বন কেটে ফেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় থাকা রাবার কোম্পানিটির দ্রুত শাস্তির দাবি জানান।

এসময় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাবেক সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন বলেন, সরকার রাষ্ট্রে বৈচিত্রতা আছে এটা বোঝাতে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলোতে পাহাড়ি ভাই বোনদের নিয়ে এসে নাচ গান করায়। যা মূলত তাদের অনুষ্ঠানগুলোকে পূর্ণতা দেয়। কিন্তু একদিকে তাদের ব্যবহার করে আর অন্যদিকে তাদের নির্মুল করার জন্য কৌশলে তাদের বাসস্থান ধ্বংস করে। সরকার দুর্ভিক্ষের কথা বলে একখণ্ড জমি অনাবাদী রাখতে নিরুৎসাহী করেছেন অপরপক্ষে পাহাড়ী এলাকায় যেসব জমিতে চাষাবাদ হতো সেগুলো রাবার কোম্পানির হাতে তুলে দিচ্ছেন। এতে কী হলো? আমরা কি খাবার খেয়ে বাচঁবো! আমরা রামায় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।

এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খায়রুল চৌধুরী বলেন, পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পার হলেও পাহাড়ে শান্তি ফিরছে না। যা অত্যন্ত হতাশাজনক। আজো পাহাড়ে বসবাসকারী নাগরিকদের জমি দখল, শষ্যক্ষেত পুড়িয়ে দেয়া, গাছ কেটে ফেলাসহ নানা ধরনের নিপীড়ন চালানো হয়। আমরা পাহাড়ীদের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, পাহাড়ীদের ওপর অনবরত হামলা ও নির্যাতনের কোনো বিচার হয়না। এবিষয়ে আমরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক জগদীশ চাকমার সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সদস্য সচিব চঞ্চনা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুমসহ আরো অনেকে।

সমাবেশে সাত দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হলো

প্রাণ প্রকৃতি বিনাশী লামা রাবার কোম্পানির লীজ বাতিল করা, স্থানীয় ম্রো এবং ত্রিপুরাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ৪০০ একর বেদখল প্রচেষ্টা বন্ধের লক্ষ্যে প্রশাসনকে যথাযথ আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, ম্রো এবং ত্রিপুরাদের প্রথাগত ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যকর করা এবং অগ্নিকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক শাস্তি নিশ্চিত করা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App