×

সারাদেশ

মেরিন ড্রাইভ সড়কে ভাঙন: সেন্টমার্টিনে প্লাবিত ঘরবাড়ি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২২, ০৯:০২ এএম

মেরিন ড্রাইভ সড়কে ভাঙন: সেন্টমার্টিনে প্লাবিত ঘরবাড়ি

সেন্টমার্টিনের মেরিন ড্রাইভ সড়ক। ছবি: ভোরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্লাবিত হয়েছে দুই শতাধিক বসতবাড়ি। বেড়িবাঁধে ভাঙন ধরায় আতঙ্কে আছেন স্থানীয়রা। দুই শতাধিক চিংড়ির ঘের জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। এক হাজারের বেশি পানের বরজ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ভাঙন ধরেছে মেরিন ড্রাইভ সড়কেও।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায় ৬-৭ ফুট উচ্চতায় প্লাবিত হয়েছে। জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালীর ধলঘাটা, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, সদর উপজেলার কুতুবদিয়া পাড়ায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। এসব এলাকায় দুই শতাধিক গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫ হাজার ঘরবাড়ি। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি ঘের। চলতি ২-৩ সপ্তাহ ছিল চিংড়ি মৌসুম।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান জানান, জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে সিত্রাংয়ের ক্ষয়ক্ষতির এখনো পূর্ণাঙ্গ বিবরণ আসেনি। সব উপজেলা প্রশাসনকে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিক হিসাবে জেলার ৪৭টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক এবং ১৪শ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। জেলার ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ সড়কের একটি অংশে ভাঙন ধরেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, এই দ্বীপে প্রায় ৫-৬ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক বসতবাড়ি। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর লোকজন নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে এখনো আতঙ্ক কাটেনি। বেড়িবাঁধের চারদিকে ভাঙন ধরেছে। দ্রুত মেরামত না করলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।

কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহান আকতার পাখি জানান, পৌর এলাকার সমিতির পাড়ায় অন্তত দেড় শতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। আমরা শুরু থেকে নিম্নাঞ্চলের লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে এনেছি। তাদের শুকনো খাবারসহ যাবতীয় সহযোগিতা করেছি।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি ঘের। স্থানীয়দের দেয়া তথ্যমতে প্রায় দুই শতাধিক চিংড়ি ঘেরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন মালিকরা। মহেশখালীর কালারমালছড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রাসেদ কামাল জানিয়েছেন জলোচ্ছ্বাসে সব চিংড়ি ঘের একাকার হয়ে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে মাছ। জলোচ্ছ্বাসের কারণে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ঘের মালিকরা। এমন কোনো ঘের নেই যেটি প্লাবিত হয়নি।

কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম জানান, জলোচ্ছ¡াসে অন্তত ৫ শতাধিক বসতবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। অবিলম্বে বেড়িবাঁধ মেরামত করা না হলে কুতুবদিয়া জোয়ার-ভাটায় পরিণত হবে। মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার মো. আলী জানিয়েছেন কিছু পানের বরজ লবণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অধিকাংশ বরজ দমকা হাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা আবার মেরামত করে চাষ করা সম্ভব নয়। অনেকেই জমি বন্ধক দিয়ে পান চাষে নেমেছিলেন। কিন্তু চাষিদের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে সিত্রাং।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App