×

সারাদেশ

যদি ক্ষমাই করতে না পারি তাহলে কিসের শিক্ষক: হৃদয় মণ্ডল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৮ এএম

যদি ক্ষমাই করতে না পারি তাহলে কিসের শিক্ষক। ক্ষমাই আমার ধর্ম। ১৯ দিন জেলে থাকার পর জামিনে বেরিয়ে গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে একথা বলেন বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডল।

মুন্সীগঞ্জের বিনোদপুরের শতবর্ষ পার হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক তিনি। ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে গত ২২ মার্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ওই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। পরে ১০ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।

সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে হৃদয় মণ্ডল বলেন, তারা কোমলমতি শিশু। হয়তো নোংরা কোনো মানুষের প্রভাবে ওরা পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনা আমার ভাগ্যে হয়তো ছিল। হয়তো খোদা আমার ভাগ্যে এটাই লিখে রেখেছিলেন- তোর জীবনে এটিই ঘটবে। আবার ওপরে যাব- এটাও হতে পারে।

আলবার্ট আইনস্টাইনের একটি কথা আছে, ধর্ম ছাড়া যে বিজ্ঞান সেটা হলো পঙ্গু, আর বিজ্ঞান ছাড়া যে ধর্ম সেটা হলো অন্ধ। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। তবে, প্রত্যেককে অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। সমাজে যারা ধর্মান্ধ আছেন তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার বিজ্ঞান।

শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গে হৃদয় মণ্ডল বলেন, ওরা ছোট মানুষ। ওরা এটা করে ফেলেছে। এখন ওদের ক্ষমা করে দিতে হবে আর ওরা যাতে না করে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু এ স্কুলই না, সারা বাংলাদেশের স্কুলে যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

এসময় হৃদয় কৃষ্ণ বলেন, আলবার্ট আইনস্টাইনের একটি কথা আছে, ধর্ম ছাড়া যে বিজ্ঞান সেটা হলো পঙ্গু, আর বিজ্ঞান ছাড়া যে ধর্ম সেটা হলো অন্ধ। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। তবে, প্রত্যেককে অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে হবে। সমাজে যারা ধর্মান্ধ আছেন তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার বিজ্ঞান।

হৃদয় কৃষ্ণ মণ্ডলের নামে মামলাটি করেন তারই স্কুলের একজন অফিস সহায়ক, যার এ ঘটনার সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা ছিল না। হৃদয় মণ্ডল পুলিশের কথায় মামলার বিষয়ে রাজি হলেও জানতেন না যে, তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৯৫ এবং ২৯৫ (ক) ধারায় মামলা করা হয়েছে। এ দুই ধারাতেই শাস্তি সর্বোচ্চ শাস্তি দুই বছর কারাদণ্ড।

দণ্ডবিধির ২৯৫ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি, এরূপ অভিপ্রায়ে বা এরূপ অবগতি সহকারে জনগণের যে কোনো শ্রেণির উপাসনালয় বা উক্ত শ্রেণির ব্যক্তিবর্গ কর্তৃক পবিত্র বলে বিবেচিত কোনো বস্তু ধ্বংস, অনিষ্ট বা অপবিত্র করে যে, তদ্বারা জনগণের যে কোনো শ্রেণির ধর্মের প্রতি অবমাননা বলে বিবেচনা করার সম্ভাবনা রয়েছে, সে ব্যক্তি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে, যার মেয়াদ দুই বছর পর্যন্ত হতে পারে, বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। দণ্ডবিধির ২৯৫/ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি, বাংলাদেশের নাগরিকদের যে কোনো শ্রেণির ধর্মীয় অনুভূতিতে কঠোর আঘাত হানার অভিপ্রায়ে স্বেচ্ছাকৃত ও বিদ্বেষাত্মকভাবে কথিত বা লিখিত শব্দাবলীর সাহায্যে বা দৃশ্যমান কল্পমূর্তির সাহায্যে উক্ত শ্রেণির ধর্ম বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অবমাননা করে বা অবমাননা করার উদ্যোগ গ্রহণ করে, সে ব্যক্তি কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে, যার মেয়াদ দুই বছর পর্যন্ত হতে পারে, বা জরিমানা বা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

হৃদয় মণ্ডল বলেন, আমি তো এর কিছুই করিনি। আমি তো কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে ভাঙচুর করিনি। আমি ছিলাম ক্লাসের মধ্যে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App