×

সারাদেশ

ছাতকে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম চাষাবাদে সফল চাষি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২২, ০৪:৩৬ পিএম

ছাতকে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম চাষাবাদে সফল চাষি

ছাতকের নুরুল্লাপুর গ্রামে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম বাগানে কৃষক সদরুল হককে পরামর্শ দিচ্ছেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান। ছবি: ভোরের কাগজ

সুনামগঞ্জের ছাতকে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম চাষাবাদ করে সফলতার মুখ দেখছেন চাষি সদরুল হক। তার ফসলের মাঠে গাছে গাছে ঝুলছে ড্রিম, চয়েজ, মেশি ও সুইট বিউটি-৩ জাতের ক্যাপসিকাম। ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক সদরুলের মুখে হাসি। সদরুল সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের নুরুল্লাপুর গ্রামের মাজুল হকের ছেলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেলে ও দোআঁশ মাটিতে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম ফলন ভালো হয়। ক্যাপসিকাম এখানে মিষ্টি মরিচ হিসেবে পরিচিত। গত বছরের অক্টোবর মাসে বীজ থেকে ক্যাপসিকামের চারা উৎপাদন করেন সদরুল। এরপর ৫ বিঘা জমির উপর রোপন করেন চারা। চারা রোপনের পর পর্যায়ক্রমে ডিএপি, এমওপি, জিং ও জৈব সার ব্যবহার করা হয়েছে ক্যাপসিকাম বাগানে। গত বছরে তার এক বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষাবাদ ভালো ফলন হওয়ায় এবার তিনি ৫ বিঘা জমিতে এ সবজি চাষাবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৫ বিঘা জমিতে প্রায় সোয়া ৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

গত ১৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ক্যাপসিকাম বিক্রি। এ সবজি বিক্রি চলবে আগামী মার্চ-এপ্রিল মাস পর্যন্ত। মোট খরচ বাদে ক্যাপসিকাম বিক্রিতে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় হবে বলে ধারণা স্থানীয় কৃষি বিভাগের।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ সবজিতে ভিটামিন বি, ই, কে থিয়ামিন অ্যাসিড, ফলিক অ্যাসিড, রাইবোফ্ল্যাভিন ইত্যাদি পাওয়া যায়। বড় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলো এ ক্যাপসিকামের মূল ক্রেতা। তারা এটি খাবারের সঙ্গে সালাদ হিসেবে বেশী ব্যবহার করে থাকে। সঠিক পরিচর্যা ও সময়মত ঔষুধ প্রয়োগে এ সবজি থেকে স্বল্প সময়ে ভালো লাভের সুযোগ রয়েছে। বিদেশী সবজি ক্যাপসিকাম উৎপাদন বাড়লে স্থানীয় কৃষকরা অনেকেই স্বাবলম্বী হবেন, এমনটাই প্রত্যাশা করছে কৃষি বিভাগ।

এক সময় শহরের পাকা ভবনের ছাদের টবের মধ্যে শখের বশে বিদেশি সবজি ক্যাপসিকাম চাষ করতেন অনেকেই। এখন আর ছাদে নয়, ফলন ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ক্ষেতের জমিতে বিদেশী এ সবজিটি চাষাবাদ শুরু হয়েছে। মূলত সবজিটির চাষ উপজেলার চারদিকে ছড়িয়ে দিতেই কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

ক্যাপসিকাম চাষি সদরুল হক বলেন, বীজ বপনের পর গাছগুলো নিয়মিত পরিচর্যা করতে হয়। গাছ লাগানোর ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে ফুল আসতে শুরু করে। ফুল আসার ২৫ দিনের মধ্যে ফল বিক্রির উপযুক্ত হয়। কয়েক মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায় এসব গাছ থেকে। তিনি বলেন, চলতি বছরে স্বল্প পরিসরে তিনি বিদেশী এ সবজি চাষাবাদ করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা কেজি ধরে ক্যাপসিকাম বাজারে বিক্রি করেছেন। ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর ‘স্বপ্ন’তে বিক্রি করা হচ্ছে ক্যাপসিকাম। এগুলো পাইকারীও বিক্রি করা হচ্ছে।

উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ একটি জনপ্রিয় বিদেশী সবজি। এ সবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমানণে ভিটামিন। বাণিজ্যিকভাবে ছাতকে এখন ক্যাপসিকাম চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক হোসেন খান বলেন, বীজ রোপণের পর থেকেই ক্যাপসিকাম স্থানীয় চাষিকে নানা ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App