×

ক্যারিয়ার

শেষ দিনে ৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন চবি উপাচার্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২৪, ১২:৪৩ পিএম

শেষ দিনে ৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন চবি উপাচার্য

ছবি: সংগৃহীত

৫ বছর উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর শেষ কর্মদিবসে ড. শিরীণ আখতার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন। তিনি আলোচিত হয়েছেন অনিয়মতান্ত্রিকভাবে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগ ইস্যুতে। নিয়োগের ক্ষেত্রে নানান দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। আর এসব অনিয়ম-অভিযোগ থেকে বের হতে পারেননি নিজের শেষ কর্ম দিবসেও।

অধ্যাপক শিরীণ আখতারকে সরিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মো. আবু তাহেরকে গত মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ১৯তম উপাচার্য হিসেবে বুধবার (২০ মার্চ) তিনি দায়িত্ব নেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দায়িত্বের শেষ দিনেও ৩৭ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন চবির সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর শিরীণ আখতার। 

অভিযোগ উঠেছে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের অনেকে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা শিক্ষক এবং প্রভাবশালী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের আত্মীয়স্বজন। এছাড়া রয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক অনেকে।

এ নিয়ে গত ৩ মাসে একই প্রক্রিয়ায় অন্তত ১০৫ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। উপাচার্যের পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেয়ার জন্য শিক্ষক সমিতির আন্দোলন শুরু হলে একের পর এক নিয়োগ দেন তিনি।

নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া ৭জন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের ফতেপুর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার অধ্যায়। তবে নিজের শেষ দিনে এসেও তিনি নিয়োগ দেয়া থেকে নিজেকে দমিয়ে রাখতে পারেননি। এদিন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে, হল ও দফতরে অন্তত ৩৭ জনকে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেককেই দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে আলাদা কোনো নিয়োগ বোর্ড বসানোর প্রয়োজন পড়ে না। রেজিস্টারের স্বাক্ষরের ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার পর উপাচার্য তা অনুমোদন দেন। এরপর অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগকৃত এসব পদের বিপরীতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে নিয়োগপ্রাপ্তরা এর বিপরীতে আবেদন করে নিয়োগ স্থায়ী করার সুযোগ পান। এই সুযোগ নিয়ে সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিকভাবে লোকবল নিয়োগ করে আসছিলেন বলে শিক্ষক সমিতিসহ সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করে আসছে।

সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার উপাচার্য পদে দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে। দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তিনি দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই নিয়োগ দেন ১৭২ জনকে। এর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণির ১১৫ আর চতুর্থ শ্রেণির ৫৭ জন। এর বাইরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ৩৬৮ জন শিক্ষক ও কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে শিক্ষক ১৩০ জন। অন্যরা কর্মচারী।

কোনো শূন্য পদে নিয়োগ দিতে হলে বিজ্ঞপ্তি দিতে হয়। যাচাই-বাছাই শেষে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীদের নিয়োগ সুপারিশের আবেদন অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে পাঠানো হচ্ছে নিয়ম। সিন্ডিকেট নিয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। কিন্তু বিদায়ী উপাচার্য কখনো যেমন এসব নিয়ম মানেননি। শেষ দিনেও এসব নিয়মনীতি মানা হয়নি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. শামীম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেট থেকে একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম, যাতে করে কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত না মেনে তিনি নিজের মনগড়া নিয়োগ দিয়ে গেছেন। সিন্ডিকেটে কমিটি গঠনের ওই তারিখের পর থেকে এ রকম যতগুলো নিয়োগ হয়েছে প্রত্যেকটাই অবৈধ।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App