×

রাজধানী

গরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, ডিএমপির সচেতনতা কার্যক্রম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১১:২৫ পিএম

গরমে লোকালয়ে ঢুকছে সাপ, ডিএমপির সচেতনতা কার্যক্রম

ছবি: ভোরের কাগজ

  • সচেতনা সৃষ্টির মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব দংশনে মৃত্যুর সংখ্যা

বেশকিছু প্রজাতির সাপের প্রজনন মৌসুম কাছাকাছি হওয়ায় ও গরমে আরামদায়ক পরিবেশের সন্ধানে জঙ্গল ছেড়ে এ প্রাণিটি ফাঁকা ঘরবাড়ি ও বাসগৃহসংলগ্ন ছায়াযুক্ত পরিবেশে চলে আসছে। এতে মানুষের সঙ্গে সংঘাতসহ সাপে কাটার ঘটনা বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভয় না পেয়ে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সাপের দংশনে মৃত্যুর সংখ্যা বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছে স্নেক রেসকিউ টিম বাংলাদেশ (এসআরটিবিডি)।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে এসআরটিবিডির সহযোগিতায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দারুস সালাম জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রচারণা অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। 

এসময় সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী উদ্ধার এবং পুনর্বাসনে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবীরা এমন পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করে সাপের কামড় থেকে আত্মরক্ষার নানা কলাকৌশল সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। শাহআলী ও দারুস সালাম থানা এবং এর অন্তর্গত পুলিশ ফাঁড়ির বিভিন্ন পদমর্যাদার কমকর্তাসহ মিরপুরের স্থানীয় শতাধিক মানুষ এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সচেতনামূলক প্রচারাভিযানে এসআরটিবিডি'র বক্তারা বলেন, মানুষের বিপদে সবার আগে এগিয়ে আসেন পুলিশের সদস্যরা। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ থেকেও সাপ উদ্ধারের আহবান পাওয়া যায়। পুলিশ সদস্যরা সাপের দংশনে করণীয় বিষয়ে স্বচ্ছ জ্ঞান অর্জন করলে গ্রাম ও শহরে বসবাসকারী মানুষকে সঠিক পরামর্শ দেয়ার মাধ্যমে জীবন রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। 

এরমধ্য দিয়েই ব্যাপকভাবে কমে আসতে পারে সাপের দংশনে মৃত্যুর সংখ্যা। প্রতিবছর সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ সাপের কামড়ে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন উল্লেখ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত এসব তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা সাপে কাটা রোগীকে ওঝার কাছে না পাঠিয়ে অনতিবিলম্বে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। 

এসআরটিবিডি'র স্বেচ্ছাসেবী মো. জোবায়দুর রহমান, মেহেদি বলেন, সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে রোগীর শরীরে এন্টিভেনম প্রয়োগ করার মাধ্যমে মৃত্যুহার বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। 

সাপ সম্পর্কিত প্রাচীন মতবাদ ও ভুল ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারলে মৃত্যুর হার বহুলাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব বলে অভিমত খাদিজাতুল কোবরা বেলী নামের নারী স্বেচ্ছাসেবীর। 

তিনি আরো জানান, বাংলাদেশে প্রায় ১০৫ প্রজাতির সাপ রয়েছে। এরমধ্যে সচরাচর দেখতে পাওয়া যায় এমন বিষধর সাপের সংখ্যা ১০ টির মতো। বাকীগুলো দুর্লভ বললেই চলে। সুতরাং আমরা যদি একটু সচেতন হই, খুব সহজেই এতো অল্পসংখ্যক সাপের কামড় থেকে জনগণকে বাঁচাতে পারি।

সাপের প্রজাতির ধারণা দিয়ে স্বেচ্ছাসেবী আল আমিন হোসেন জানান, দাঁড়াস সাপ, ঘরমনি, জলধোড়া, দুধরাজ, লাউডগা, কালনাগিনী, হেলে প্রভৃতি উপকারী ও বিষহীন সাপের পাশাপাশি পদ্ম গোখরা, খৈয়ে গোখরা, রাসেল ভাইপারস (চন্দ্রবোড়া), কালাচ, শঙ্খিনী প্রভৃতি বিষাক্ত প্রজাতির সাপের দেখা মিলে। 

সম্প্রতি বিষযুক্ত রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ উদ্ধারের ঘটনা উল্লেখ করে এসআরটিবি'র স্বেচ্ছাসেবী সাদ আহমেদ অপু বলেন, এই সাপকে অনেকে অজগরের বাচ্চা ভেবে হেলাফেলা করেন। অসচেতনতার কারণে রাসেল ভাইপারস সাপের কামড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। 

ছবি: ভোরের কাগজ 

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের ভারসাম্য রক্ষাসহ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য সৃষ্টি, চোরা শিকারী ও বন্যপ্রাণী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী প্রক্রিয়া গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

মিরপুর ডিভিশনের অধীন দারুস সালাম জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মফিজুর রহমান পলাশ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এতে দারুস সালাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল উদ্দিন, শাহআলী থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মোঃ হাবিবুর রহমান, বিভিন্ন ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ সদস্য সহ বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধি সাব্বির আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App