×

রাজধানী

মেয়র আতিকের হুশিয়ারি

২৭ এপ্রিল থেকে ভবনে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেলেই মামলা-জরিমানা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৭ পিএম

  ২৭ এপ্রিল থেকে ভবনে এডিসের লার্ভা  পাওয়া গেলেই মামলা-জরিমানা

ছবি: ভোরের কাগজ

আগামী ২৭ তারিখ থেকে যার বাড়িতে এডিসের লার্ভা পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গেই মামলা ও জরিমানা করা হবে বলে কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম।  তিনি বলেছেন, সরকারি অফিস ভবন থেকে শুরু করে  সিটি কর্পোরেশনের অফিস ও ছাড় পাবে না। টাকার পরিমাণ আগের চেয়ে আরো বাড়বে। তাই এডিস মশা নিধনে ভবন মালিকদের সর্তক হওয়ার আহ্বান জানান মেয়র। 

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর মিরপুর রূপনগরে মাস ব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মেয়র আতিক এ হুশিয়ারি দেন। এ সময় তিনি উপস্থিত এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে স্লোগান ধরেন- ‘তিন দিনে একদিন জমা পানি ফেলে দিন।’ অনুষ্ঠানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ টেস্টগুলো প্রতিটি ওয়ার্ডে সহজ করার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধ কমিটি করার তাগিদ দেন উপস্থিত কীটতত্ত্ববিদরা। একই দিনে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৫৪ টি ওয়ার্ডে একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু হয়। 

ছবি: ভোরের কাগজ

মেয়র আতিক বলেন, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে অ্যাওয়ারনেসের জন্য। একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের ফেলে দেয়া খালি কৌটা, প্যাকেটেই জন্ম নিচ্ছে এডিস মশা। আমরা কেনো টায়ার, রঙের কৌটা ছাদে রেখে দেবো? চিপসের প্যাকেট রাস্তায় ফেলবো? পরিত্যক্ত এসব আবর্জনা স্থানীয় কাউন্সিলের কাছে নিয়ে আসুন, ক্যাশ টাকা নিয়ে যান। 

তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় দুই বাড়ির মাঝখানে ময়লা আর ময়লা, সবাই বলে আমি করি নাই, তাহলে কে করেন? কারা করেন? এডিস মশার জন্ম আমার-আপনার বাড়িতে স্বচ্ছ পানিতে। তাই আমাদের নিজের ঘরবাড়ি নিজেদেরই পরিষ্কার করতে হবে। 

মেয়র বলেন, সিটি কর্পোরেশনের নিজের কোনো জমি নেই। কোনো সংস্থা যখন সিটি কর্পোরেশনকে দেয় তখন তা সিটি কর্পোরেশনের হয়। তিনি বলেন, ন্যাশনাল হাউজিং সোসাইটির করা হয়েছে অথচ, খেলার মাঠ নেই, কমিউনিটি সেন্টার নেই। আন্ডার টেবিলের মাধ্যমে খেলার মাঠে বিল্ডিং তৈরির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। এগুলো করা থেকে বিরত থাকুন। ভয় পাই না, অন্যায় যে করবে তার বিরুদ্ধে আমি দাঁড়াবো। 

ঢাকা ১৪ আসনের সংসদ সদস্য মাইনুল হোসেন নিখিল বলেন, সিটি কর্পোরেশনকে অভিনন্দন জানাই ঢাকা ১৪ আসন থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম শুরু করেছেন। জনগণ আমাদের কথা শুনুক বা না শুনুক আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাবো। মশার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেতে সাহসী উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সামাজিকভাবে চেষ্টা করবো বিগত বছরগুলো থেকে এবার অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে ডেঙ্গু মুক্ত থাকতে। 

সিটি কর্পোরেশনের কিছু অবহেলা তুলে ধরে নিখিল বলেন, ওয়ার্ডের অলিতে গলিতে যত্রতত্র ময়লা পড়ে থাকে, সিটি কর্পোরেশনে ফোন দিলে তারা নানা অজুহাত দেখায়, গাড়ী নেই, লোক নেই, আর এসব অজুহাত শুনতে চাই না। তিনি বলেন, মেয়র খালে নেমে, ড্রেনে নেমে পরিষ্কার অভিযান চালান, কিন্তু তিনি যে নির্দেশনা দিয়ে আসেন তা সংশ্লিষ্টরা পালন করেন না। এ বিষয়ে নজর দেয়া জরুরী।

ছবি: ভোরের কাগজ

তিনি আরো বলেন, নগরের রাস্তা গুলো কেটে রাখা হয়, সংস্কার হয় অত্যন্ত ধীর গতিতে ফলে জনগণের ভোগান্তির শেষ থাকে না। এ সময় উত্তর সিটির ৭ নং ওয়ার্ডে খেলার মাঠ, কবরস্থান ও কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান ঢাকা ১৪ আসনের এই জন প্রতিনিধি। 

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কখনোই সম্ভব নয়। জনগণ সচেতন হলে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে সহজেই ডেঙ্গু নিধন কার্যক্রম সফল করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের হটস্পটে ট্যাক বসানো হয়েছে, কর্পোরেশনে কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে যাতে জনগণ নিজেরা সরাসরি ডেঙ্গু বিষয়ক যে কোনো তথ্য সিটি কর্পোরেশনকে জানাতে পারেন এবং যে কোনো সুবিধা অসুবিধার বিষয়ে সরাসরি মেয়রের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। 

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, এডিশ মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণ ধোঁয়া দিয়ে ঔষধ প্রয়োগ পছন্দ করে, কিন্তু ধোঁয়ার চেয়ে ট্যাবলেট দিয়ে মশা বেশি মরে। তিনি বলেন, নগরবাসীকে আহ্বান জানাবো, আমার বাড়ি, আমার আঙ্গিনা ডেঙ্গু মশার প্রজনন হতে দেবো না। আমরা ‘সার্চ এন্ড ডেস্ট্রয়’ নীতি নিয়ে ডেঙ্গু নিধন কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবো। এ বছরে সবাই মিলে ডেঙ্গু মুক্ত হবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App