রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছেকাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। সিটিটিসির দাবি আটককৃতরা সবাই জেএমবির অনুসারী। তারা তাবলিগের নামে সৌদিআরব গিয়ে ইমাম মাহাদীর সংগে সাক্ষাতের আশায় একমাস আগে থেকে কথিত ‘হিজরত করছিল।

সোমবার (৪ মে) সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় কাকরাইল মসজিদের বিপরীত পাশে পাবলিক হেলথ্ কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান সিটিটিসি ইউনিট এর অতিরিক্ত এডিসি তোহিদুল ইসলাম। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের ১৯টি মুঠোফোন ফোন, ২ লাখ ৩৪ হাজার বাংলাদেশী টাকা ও ৯২২ আমেরিকান ডলার জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জেএমবির সদস্য বলে স্বীকার করেছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো: হায়দার আলী (৪৪), মো: মাহমুদুল হাসান ওরফে মাসুম, মো: জামিরুল ইসলাম (২৪), মো: বিল্লাল হোসেন (৩৮), মো: শেখ আরাফাত ওরফে জনি (৪৮), মো: ইমরুল হাসান ওরফে ইমন (২৫), মো: সাইফুল ইসলাম (২৫), মো: মোজাম্মেল হক (৩৩), মো: শাহজালাল(৩৪), মো: আক্তারুজ্জামান (৩০), মো: মাহমুদুল হাসান ওরফে সাব্বির (২৩), মো: আবিদ উল মাহমুদ ওরফে আবিদ (২২), মো: সোহাইল সরদার (৩৩), মো: ওবায়দুল ইসলাম ওরফে সুমন (৩০), মাহমুদ হাসান ওরফে শরীফ (১৮), মো: মাজেদুল ইসলাম ওরফে মুকুল ( ২৮) ও মো: সোহাগ হাসান (২০)।

এডিসি তোহিদুল ইসলাম বলেন, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমান নামে এক প্রকৌশলী বাংলাদেশ থেকে ৩ বছর আগে সৌদি আরবে যান ও অদ্যবধি সেখানে অবস্থান করছেন। তিনি জিহাদের পক্ষে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসাবে বিভিন্ন বক্তব্য ও গাজওয়াতুল হিন্দ নামক স্থানে মুসলিমদের পক্ষে জিহাদ করার আহব্বান জানিয়ে অডিও ভিডিও প্রকাশ করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে তার সংগে যোগাযোগ করে ঈমাম মাহাদীর সৈনিক হিসাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি সরূপ সৌদি আরব যাওয়ার চেষ্টা করেন।

তিনি বলেন, পলাতক রবিউল সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমআনের সংগে তারা যোগাযোগ রাখতেন ও গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় তারা পরস্পর যোগাযোগ করে হিজরতের সিদ্ধান্ত নেন। তাবলিগ-জামায়াতের আড়ালে সাতক্ষীরা বা বেনাপল সীমান্ত দিয়ে তারা ভারত-কাশ্মীর সীমান্ত হয়ে সৌদি আরব পৌঁছাবে। তাদেরকে বলা হয়েছিলো করোনার দূর্যোগে আকাশ থেকে একধরনের গজব নেমে আসবে ও সমস্ত কিছু ধোঁয়াছন্ন হয়ে যাবে তখন সীমান্তে কোন পাহারা থাকবেনা এই সময় তারা যেন চলে আসেন। এই বিশ্বাস নিয়ে গত ১৮ মার্চ তারা প্রথমে সাতক্ষীরা ও পরে যশোর সীমান্তের কাছে বিভিন্ন মসজিদে অবস্থান করেন ভারতে যাওয়ার জন্য। তাদেরকে আরও জানানো হয়েছিলো আগামী চল্লিশ দিন সূর্য উঠবে না, আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে, কাফিররা সবাই মারা যাবে, ঈমানদারদের শুধু হালকা কাঁশি হবে, ঈমাম মাহাদির আগমন এই রমজানে সমাগত তাই তারা যেভাবে পারে সেভাবে যেন আসার চেষ্টা করে। তারা সাতক্ষীরা ও যশোর সীমান্ত দিয়ে পার হতে না পেরে ঢাকা হয়ে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং সে মোতাবেক তারা ঢাকায় আসেন।

এডিসি তোহিদ বলেন, সৈয়দ মোস্তাক বিন আরমানের প্ররোচনায় ও তার সংগে যোগাযোগ করে ইতোমধ্যে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ছাত্র গত জানুয়ারি মাসে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে গমন করে আর ফিরে আসেননি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় সা’দ, কাউসার, শরীফ, তোফাজ্জল, গিয়াসউদ্দিন, আলী আজম ও রাশেদ নামে আরো ৭ জন ঈমাম মাহাদির সৈনিক হিসেবে যোগদানের উদ্দ্যেশে সৈাদিআরব হিজরত করেছেন বলে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান। তাদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে।