×

বাজেট

যেসব পণ্যের দাম কমছে-বাড়ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২০, ০৬:৪৩ পিএম

যেসব পণ্যের দাম কমছে-বাড়ছে

পণ্য

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ বাজেটে তিনি কিছু পণ্যের ওপর থেকে ট্যাক্স বা আমদানী শুল্ক কমিয়েছেন, আবার কিছু পণ্যের ওপর ট্যাক্স বা আমদানী শুল্ক বাড়িয়েছেন। যার ফলে প্রতিবছরের মত এবারের বাজেটের পরে কিছু দ্রব্য বা সেবার মূল্য কমা-বাড়া হবে বলে মনে করা যাচ্ছে।

দাম কমতে পারে যেসব পণ্যের:

প্রস্তাবিত বাজেটে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় মাস্ক, পিপিই, গ্লাভস, গগলস, নানা ধরনের রাসায়নিক পণ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানিতে সব ধরনের কর মওকুফ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম কমতে পারে। এ ছাড়া করোনাভাইরাস শনাক্তে কিট উৎপাদনের কাঁচামাল, এ সংক্রান্ত কাজে গবেষণার জন্য ব্যরবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য ও যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে এসবের দামও কমবে।

এছাড়া দাম কমবে হাসপাতালের আইসিইউ, সিসিইউসহ জরুরি সেবায় ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের। জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসকে উৎসাহিত করতে এ সংক্রান্ত যাবতীয় যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া হবে। ভেন্টিলেটর উৎপাদনে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে গবেষণা ও উৎপাদনে আরো আকৃষ্ট করতে এ সংক্রান্ত যন্ত্রাংশে বিশেষ শুল্ক ও ভ্যাট ছাড় থাকছে বাজেটে। তাই এসব পণ্যের দাম কমবে।

স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনে উৎসাহিত করতে বাজেটে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত ক্ষুদ্র শিল্পের কাঁচামালে অগ্রিম কর কমানো হয়েছে। ফলে ক্ষুদ্র শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম কমতে পারে। শুল্ক ছাড়ের ফলে কমতে পারে পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য শিল্প এবং অগ্নিনির্বাপণে ব্যবহৃত উপকরণের দাম।

আরো যেসব পণ্য ও সেবার দাম কমবে তার মধ্যে ধরা যায় চার্জার কানেকটর পিন, ক্যান্সার প্রতিরোধক ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত ৪৩টি উপকরণের দাম, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, লিফট প্রস্তুতকারী শিল্পে ব্যবহৃত আমদানি করা সকল উপকরণ, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপন ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ, কমপ্রেসর প্রস্তুতকারী শিল্পে ব্যবহৃত আমদানি করা সব উপকরণ, জুতা শিল্পের বিভিন্ন উপকরণ, পাউরুটি, বিস্কুট ও কেক, স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রপাতি।

এছাড়া বাজেটে স্বর্ণের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, এতে করে স্বর্ণের দাম কমবে। অটোমোবাইল ফ্রিজ এসির ওপর মূসক অব্যাহতির কারণে তুলা বীজ, পাম নাটস, রেফ্রিজেরেটর শিল্পের স্টিল প্লেটের দামও কমছে। বজ্রপাত থেকে প্রতিরক্ষাকারী পণ্য লাইটিং অ্যারেস্টারের আমদানি শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রস্তাবে এ পণ্যের দাম কমতে পারে। দেশীয় শর্ষের তেলে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ডিটারজেন্টের কাঁচামালের ওপর শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। ইস্পাত শিল্পের রিফ্রাক্টরি সিমেন্টের ওপর শুল্ক কমানো হবে। এলপিজি সিলিন্ডারের দাম কমতে পারে। রেফ্রিজারেটর ও এসির কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান রেয়াতি সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে যাতে করে এসব পন্যের দাম কমতে পারে।

দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের:

বাজেটে কিছু পণ্যের শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করায় এসব পণ্যের দাম বাড়বে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও তামাক ও তামাকজাত পণ্যের ওপর আরো কিছুটা করারোপ করায় বিড়ি সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্যের দাম কিছুটা বেড়ে যাবে। এছাড়া সব চেয়ে সমস্যায় পড়বেন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীরা। কেননা এখানে ধনী দরিদ্র নির্বিশেষে সকলের হাতে মোবাইল রয়েছে। বাজেটে মোবাইলে কথা বলার সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে বাড়তি কর টেলিযোগাযোগ কোম্পানি নিজেরা বহন না করলে গ্রাহকের ওপর চাপবে। নতুন কর হারে মোবাইল ফোন সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ১৫ শতাংশ, সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ ও সারচার্জ ১ শতাংশ। ফলে মোট করভার দাঁড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি ১০০ টাকা রিচার্জে সরকারের কাছে কর হিসেবে যাবে ২৫ টাকার কিছু বেশি। এতদিন সরকার পেত ২২ টাকার মতো।

এছাড়া বাজেটে বিলাসবহুল জীবন যাপনকারীদের আরো কিছুটা করের বোঝা চাপিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। যেমন গাড়ি ব্যবহারকারীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিআরটিএ প্রদত্ত অন্যান্য সার্ভিস ফির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লঞ্চ, বাসের টিকিট খরচ বাড়বে। আগে ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ছিল, নতুন অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। চার্টার্ড বিমান ও হেলিকপ্টার ভাড়ার ওপর সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রসাধনসামগ্রীর ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানিতে কিছুটা শুল্ক আরোপ হবে। দামি আসবাব কেনায় মূসক বেড়েছে। ৫ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। সিরামিকের সিঙ্ক বেসিনের ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। মধুর বাল্ক আমদানি শুল্ক বাড়ছে। বিদেশি মধুর দাম বাড়বে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App