ফেনীতে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায় আওয়ামী লীগ কর্মীরা, ভিডিও ভাইরাল
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪ পিএম
জুলাইয়ের শুরুতে কোটা সংস্কারের দাবিতে দানা বাধতে থাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যা ধীরে ধীরে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় শেখ হাসিনা। তবে আন্দোলন শুধু রাজধানীতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
৪ আগস্ট। উত্তপ্ত ছিল ফেনী শহর। ছাত্রলীগ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের দখলে ছিল ফেনীর অলি গলি। যেখান থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালায় দলের নেতাকর্মীরা। শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালানোর বেশ কিছু ছবি হাতে এসেছে ভোরের কাগজের।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে ফেনী পৌর যুবলীগের আহবায়ক আশরাফুল হাসান মোহনকে। মাথায় হেলমেট ও লাল টিশার্ট পরা অবস্থায় হাতে রাইফেল নিয়ে গুলি ছুড়ছেন। আরও একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে নির্মাণাধীন একটি ভবনের সামনে কিছু কর্মীদের সাথে নিয়ে অস্ত্র রেডি করতে। এরপর সেখান থেকে চলে আসেন রাস্তায়। এসময় তার সাথে থাকা সবার হাতেই ছিল ভারী অস্ত্র।
আশরাফুল হাসান মোহন মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তার বাড়ি ফেনীর আবু বকর সড়কের মিজান রোডে। বর্তমানে গা ঢাকা দিয়ে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
ছাত্র আন্দোলন দমানোর আরেক কাণ্ডারি ফেনীর ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোকন হাজারী। ছবিতে দেখা যাচ্ছে শর্টগান হাতে সামনে থেকে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। মাথায় হেলমেট ও টিশার্ট গায়ে কর্মীদের সাথে নিয়ে তিনি গুলি ও ইট পাটকেল ছুড়েন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে। তিনি মাষ্টারপাড়া এলাকার চুটটু মিয়া হাজারির সন্তান। বর্তমানে খোকন হাজারি গা ঢাকা দিয়ে কুমিল্লায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
খোকন হাজারীর সাথে আন্দোলনে যোগ দেন আওয়ামী লীগ কর্মী মিষ্টার মিয়া। সিসিটিভির ওই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জিয়া উদ্দিন বাবলুর সাথে হাতে অস্ত্র নিয়ে গুলি ছুড়তে। গোলাপী রংয়ের শার্ট পড়া অবস্থায় হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র শর্টগান নিয়ে গুলি ছুড়ছেন আন্দোলনকারীদের উপর।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন ফেনী সদরের আওয়ামী লীগ কর্মী মিষ্টার মিয়া। বর্তমানে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের একদফা কর্মসূচির সমর্থনে মহিপাল ফ্লাইওভারের নিচে অবস্থান নেন ছাত্র-জনতা। এদিন দুপুর দেড়টা থেকে কর্মসূচিতে হামলা চালায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় অনেকের হাতে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে। গুলিতে নিহতের সংখ্যা কারও মতে ১১ জন, কারও মতে ১৭ জন।