পূর্ণিমা তিথিতে শিল্পকলার সাধুমেলা
আশ্বিনেরও শীতের দেখা নেই। দিনভর কাঠফাটা রোদ্দুর। গরমের তীব্রতা ছিল অসহনীয় পর্যায়ে। ভ্যাঁপসা গরমে অস্থির রাজধানীবাসী। তবে সন্ধ্যায় সেই গরমে জল ঢেলে দিলেন শেকড়ের সুরের বাউলরা। পূবের সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাওয়ার কিছু পরেই সুরের ডালি নিয়ে বসেন দেশের প্রখ্যাত বাউলরা। অমিয় বাণীর কথা ও সুরে অনন্য হয়ে উঠল আশ্বিনের সন্ধ্যাটা।
ভাববাদী গান ও লালনের সুরের দ্যোতনায় দুলতে থাকেন সুরের আসরে আগত সঙ্গীত সমঝদাররা। পরিবেশনার পরতে পরতে মায়াজাল ছড়িয়ে বাউল গানের আসরকে উপভোগ্য করে তোলেন সুরের সাধকরা। এমন দৃশ্যকল্পই ছিল শিল্পকলা একাডেমির বাউল গানের আসর সাধুমেলার ৫৩ তম আসরে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় রাজধানীর গুলশানে বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে বসল পূর্ণিমা তিথির সাধুমেলার আসরটি।
অনুষ্ঠানে বাউল গানের সুরে সুরে দর্শক শ্রোতাদের বিমোহিত করেন বাউল শিল্পীরা। এদের মধ্যে সুবর্ণা বাউলের কণ্ঠে পরিবেশিত হয়- ‘না জানি কোন সময়, কোন দশা ঘটে আমার’, কৃষ্ণ বাউলের কণ্ঠে ‘পাড়ে কে যাবি নবীর নৌকাতে আয়’, রিতা মন্ডলের কণ্ঠে ‘বিনা কাজে ধন উপার্জন কে করতে পারে’, শাহীন বাউলের কণ্ঠে ‘বাসূলের দিন সত্য মানো, ডাকো তারে মওলা বলে’ এবং সুবর্ণা হামজার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘আমার ঘর খানায় কে বিরাজ কর’।
বাউল আয়নাল হক পরিবেশন করেন ‘বড় সংকটে পড়িয়া দয়াল’, মিতুল বাউল ‘বাড়ির কাছে আরশি নগর’, বাউল এম আর মানিকের কণ্ঠে ‘লন্ডনে রুপের বাতি জ্বলছে রে সদয়’, পিউ বাউল গেয়ে শোনান ‘আধাঁর ঘরে জ্বলেছে বাতি’, ফারুক বাউলের কণ্ঠে ‘অমৃত মেঘের বাড়ি মুখের কথায় কি মিলে’ এবং বাউল ফারজানা ইভার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘ধন্য আশেকিজনা এদিন দুনিয়ায়’। এছাড়া ছিল ক্ষ্যাপা বিদ্যুৎ সরকারের কণ্ঠে গান’।
ছিল জেলা থেকে আগত মানিকগঞ্জের বাউল শিল্পী কিরন চন্দ্র রায়, কুষ্টিয়ার শফি মন্ডল, চট্টগ্রামের ফকির সাহাবুদ্দিন, কুষ্টিয়ার চন্দনা মজুমদার, ঝিনাইদহের দিল আফরোজ রেবা এবং ফরিদপুরের আরিফ বাউলের পরিবেশনাও।
এছাড়া দলীয় সংগীত পরিবেশন করেন বাউল রুমা আক্তার, জাকারিয়া শেখ, লিনা খাতুন, সেলিম বাউল, সজিব বাউল, মেহবুব সুফিয়ান, নুরুল ইসলাম শেখ, সলেমান শেখ, রিতা মন্ডল, শাহেদ আলী, রনি বাউল, সেন্টু বাউল, আবু বক্কর সিদ্দিক, খাইরুল বাউল, মাহমুদা, শিফা বাউল, মাহাবুব বাউল, তানিয়া বাউল, মিজান বাউল, বাউল কন্যা চৌধুরী, বাউল ওমর আলী, উপমা বাউল, ক্ষ্যাপা মিরাজ বাউল, ফারুক বাউল, বাউল মিনা পাগলা, বাউল এলিজা পুতুল, বাউল নয়ন সাধু, পলি বাউল, ফারুক বাউল এবং বাউল আফসানা ইমু প্রমুখ।
একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো এবং বাউলরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।