তদন্তে ভারতকে সহযোগিতা করতে বললো যুক্তরাষ্ট্র

আগের সংবাদ

যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তদের নাম প্রকাশ করে না

পরের সংবাদ

অভিযানের নেপথ্যে মন্ত্রীর ছেলে

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ২:১৬ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ , ২:৪২ অপরাহ্ণ
প্রেসক্রিপশন পয়েন্টে অভিযানের নেপথ্যে মন্ত্রীর ছেলে

রাজধানীর বনানীতে প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট লি. নামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবহার করে অভিযানের ও তালা দেয়া এবং তা দখলের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিকের হাত আছে বলে অভিযোগ করেছেন হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবুল খায়ের।

রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের আয়োজনে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

খন্দকার আবুল খায়ের বলেন, প্রেসক্রিপশন পয়েন্টের মতো একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে একটি কুচক্রি মহল বেআইনিভাবে বন্ধ করে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালেকের নির্দেশেই তা করা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করতে আইন আদালতকে তোয়াক্কা করা হয়নি, শুধুমাত্র ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক তা করা হয়েছে। আমাদের এ সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ও ভবনটি দখল করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

এই প্রতিষ্ঠানে অভিযান ও তালা দেয়ার নেপথ্যে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের মনে হয় এখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে রাহাত মালিকের হাত আছে। উনি আমাদের ম্যানেজারকে বলেছিল তিনি প্রেসক্রিপশন পয়েন্ট কিনে নিতে চান। তখন আমাদের ম্যানেজার তাকে বলেছিল আপনার তো টাকা আছে আপনাকে এটা কিনে নিতে হবে কেন? তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলে বলেছে যদি বাড়ি ছেড়ে না দেন তাহলে সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না, আঙ্গুল বাঁকা করতে হবে।

গত বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এনে হাসপাতালটি তালাবদ্ধ করে দেয়। এ দিন সেখানে থাকা থানা পুলিশ কিংবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কেউ কথা বলেননি।

আবুল খায়ের আরও বলেন, যেখানে সরকারি অফিসে টাকা দিয়েও ফাইল নড়ানো যায় না, সেখানে সরকারী ফাইল কীভাবে দ্রুত গতিতে নড়ে? এতো তাড়াহুড়ো করার উদ্দেশ্য নিশ্চয় এখানে ওপর মহলের হাত আছে।

এসময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অভিযোগ করে বলেন, অভিযানের দিন আসা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের লোকজন আমাদের সুনির্দিষ্ট কোন কারণ দেখাতে পারেনি। শুধু বলছে আপনারা দ্রুত মালামাল সরিয়ে নেন। এর জন্য কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেনি। তারা আমাদের লাইসেন্স স্থগিত করতে পারে, কার্যক্রম বন্ধ করতে পারে কিন্তু আমরা কবে মালামাল সরিয়ে নিবো তাতো বলতে পারে না। তারা যেহেতু মালামাল সরিয়ে নিতে বলছে অবশ্যই তাদের অভিপ্রায় আছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমরা জানতে পেরেছি প্রতিষ্ঠানটি ৬ কোটি টাকায় বিক্রি হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ছেলের ঘনিষ্ট ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান তা ক্রয় করেছে। অথচ এই সম্পত্তির দাম ৪৫ কোটি টাকার বেশি হবে। ফলে সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আরেকটি কথা, নামমাত্র মূল্যে এই সম্পত্তি কিনে নিলেও তারা আমাদের বাড়ি ছাড়ার কোনো নোটিশ দেয়নি। বরং তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

খন্দকার আবুল খায়ের জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে এখন প্রায় ২০০ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত। এছাড়াও ৫০জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়মিত চেম্বার করে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের গত ১৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শন দল সেখানে যান। এরপর ১৮ মে তারিখ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে চিঠি পাঠানো হয়। একই সঙ্গে কোন প্রকার কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ও লাইসেন্স স্থগিত করার আদেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আপিল করলে তা অগ্রাহ্য করে ৭ই জুন তাদের চিঠি দেয়। পরে নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করলেও তারা রহস্যজনকভাবে নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। পরে তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। হাইকোর্ট খুললে সেটির শুনানি হবে বলেও জানান তিনি।

এসএম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়