খোলামেলা পোশাকে গনেশ দেখতে এসে বিপাকে দিশা

খোলামেলা পোশাকে দিশা, গনেশ দেখতে এসে পড়লেন বিপাকে

আগের সংবাদ

তাপসের বক্তব্যে জমিদারি-সন্ত্রাসী ভাব রয়েছে

পরের সংবাদ

ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সংরক্ষণের দাবি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ১:৫৩ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৩ , ৮:১০ অপরাহ্ণ

স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্মসহ তার স্মৃতিচিহ্ন হারিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন সময়ের তার ভাস্কর্য নকল করে মৌলিক শিল্পকর্ম হিসেবে প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করছেন। কেউ কেউ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সামান্য পরিবর্তন বা বিকৃত করে নিজেদের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন।

তাই ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সংরক্ষণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিশিষ্টজনরা। পাশাপাশি তার শিল্পকর্মের চৌর্যবৃত্তি রোধেরও দাবি জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াড আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর কন্যা ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী। আরও বক্তব্য রাখেন অভিনেত্রী শম্পা রেজা, জাগরণ সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের নির্বাহী সভাপতি ও আবৃত্তিশিল্পী শওকত আলী, মানবাধিকারকর্মী শারমিন শামস মুনমুন, লেখক শাশ্বতী দীপ্ত ও তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা শাহাদাত রাসেল প্রমূখ।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির বলেন, ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর সংরক্ষণ না হওয়ায় তার শিল্পকর্ম হারিয়ে যেতে বসেছে। তার শিল্পকর্মের চৌর্যবৃত্তি হচ্ছে। এসব শিল্পকর্মগুলো সরকারি উদ্যোগে সংরক্ষণ করা দরকার। তবে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকর্মগুলো কপিরাইট করা ঠিক নয়। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সরকার প্রতিটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু এখনও সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অবিলম্বে সরকারকে প্রতিটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানাচ্ছি।

শিল্পকর্ম নকল করা, কপি করা হলো শিল্পসন্ত্রাস বলে অভিযোগ করে শম্পা রেজা বলেন, এসব ব্যাপারে সরকারের চোখ বন্ধ কেন? ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন কপি হয়ে যাচ্ছে। এসব ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন। তিনি এ সময় চৌর্যবৃত্তির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় শাস্তিরও দাবি করেন।

শওকত আলী বলেন, সরকার উদ্যোগ নিলে জাতীয় জাদুঘর ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সংরক্ষণ করা সম্ভব। তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান।

লিখিত বক্তব্যে ফুলেশ্বরী প্রিয়নন্দিনী বলেন, একাত্তরের বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর অনবদ্য সৃষ্টিকে মানুষের কাছে পৌছে দিয়ে তাকে পরিচিত করেছিলেন কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান। তার শিল্পকর্মগুলো কেবল দৃষ্টিনন্দনই নয়, এই শিল্পকর্মের সাথে জড়িয়ে আছে ১৯৭১- এর মহান মুক্তিযুদ্ধে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার এবং যুদ্ধপরবর্তী সময়ে পরিবার ও সমাজে নিগৃহীত একজন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা নারীর আগুনপাখি ফিনিক্স হয়ে ওঠার গল্প। কিন্তু শিল্পকর্মগুলো চৌর্যবৃত্তি হচ্ছে, সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, সম্প্রতি নিউইয়র্ক প্রবাসী জনৈক আখতার আহমেদ রাশা নিউ ইয়র্ক, ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর বিভিন্ন সময়ের ভাস্কর্যসমূহের নকল করে মৌলিক শিল্পকর্ম হিসেবে প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি কেউ কেউ ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর শিল্পকর্ম সামান্য পরিবর্তন বা বিকৃত করে নিজেদের নামে চালিয়ে দিচ্ছেন। মৌখিকভাবে বহুবার অনুরোধের পরও আখতার আহমেদ রাশার এ চৌর্যবৃত্তিকে নিবৃত্ত করা সম্ভব হয়নি, তাই আইনি প্রক্রিয়া নিতে বাধ্য হচ্ছি। তিনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর রেখে যাওয়া অমূল্য ভাস্কর্যসমূহ যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।

এমকে

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়