বাংলাদেশ-জার্মানির মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

আগের সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি পেয়ে বদলে গেছে ভূমিহীনদের জীবন

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে ঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করছে ২শত শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ , ২:১৫ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৩ , ২:১৫ অপরাহ্ণ
সীতাকুণ্ডে ঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করছে ২শত শিক্ষার্থী

ছয় শিক্ষকের ক্লাশ নেন তিন শিক্ষক

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড পশ্চিম বাকখালি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত দুই বছর যাবৎ দুইশত শিক্ষার্থী খোলা আকাশের নিচে পড়ালেখা করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়,মনে হবে গ্রাম বাংলার কোন কাচারি ঘর। যেখানে এলোমেলো ভাবে পড়ে আছে বাড়ির পুরাতন ও অকেজো আসবাবপত্র, চেয়ার, টেবিল ও চারপাশে ভাঙ্গা বেঁড়া। টিনের চাল বেয়ে পড়ছে পানি। তবে কোন পরিত্যক্ত ঘর নয় এটি বাকখালি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সীতাকুন্ড থেকে সংবাদদাতা জানান, বিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন নির্মান কাজের জন্য অস্থায়ী ভাবে তৈরি করা হয় টিনের চালাটি। দীর্ঘদিন নতুন ভবনের কাজ শেষ না হওয়াতে, ভাঙ্গা ঘরেই ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। নতুন ভবন নির্মান কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়ে ২০২২ সালের শেষে হওয়ার কথা ছিল।

কিন্তু প্রায় ৩ বছর হলেও এখনো বিদ্যালয়ের নির্মানের ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়নি। নানা জটিলতায় আটকে আছে নির্মান কাজ। একের পর এক ঠিকাদার পরিবর্তনসহ নানা অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে বিদ্যালয় নির্মানকারী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।

দীর্ঘদিন বিদ্যলয়ের নির্মান কাজ ও শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হওয়ায় এনিয়ে এলাকাবাসীর চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পাশাপাশি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে শত শত শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন। বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ৬ পদের মধ্যে শিক্ষক আছে মাত্র তিনজন। তাদের পক্ষে পাঠদানে অসম্ভব বলে জানান বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান। শিক্ষার্থীদের নেই কোন স্যানেটারি ল্যাট্রিন ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা।পর্যাপ্ত চেয়ার-টেবিলের সংকটে দাঁড়িয়ে থাকে অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী, শিক্ষকদেরও নেই কোন উপযুক্ত বসার স্থান।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হাসেম জানান, দীর্ঘদিন এলাকার বিদ্যালয়ের এই চরম দূরঅবস্থা । এখানে শিক্ষার কোন পরিবেশ নেই। গ্রামের শতশত শিক্ষার্থীর জীবন আজ হুমকির মুখে, কারো মাথা ব্যাথা নেই। আমাদের এলাকাবাসীর গণদাবি, দ্রত ভবনের কাজ শেষ করে, শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন,আমরা একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে সময় পার করছি। কখন এ দূরাবস্থা শেষ করে নতুন ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু হবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে আমরা এমন প্রতিকূল পরিবেশেও নিয়মিত পাঠ দান করে যাচ্ছি।শিক্ষক সংকটসহ নানা সম্যাসায় জর্জরিত বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে পাশ্ববর্তী মাদরাসায় ভর্তি হতে বাধ্য হয়েছে । বিদ্যালয়ের দ্রুত নির্মান কাজ শেষ হয়ে শিক্ষার সুস্থ পরিবেশ সৃষ্টিহোক এটাই আমাদের একমাত্র প্রত্যশা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নূরসফা বলেন,এই বিষয়ে এলজিআরডি প্রকৌশলী বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি অনেক অভিযোগ করেছি কিন্তু কার্যকর হয়নি। ঠিকাদারের কোন অদৃশ্য বলয়ে দীর্ঘদিনেও কাজ হচ্ছে না,আমাদের জানান নি! বিদ্যালয়ের ২শত শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে গেছে। প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদার অস্থায়ী ঘরটি মানসম্মত ও শিক্ষার পরিবেশবান্ধব হওয়ার কথা। কিন্তু তারা নিম্নমানের বাঁশ-কাঠ দিয়ে তৈরি করাতে যা অল্পদিয়ে ভেঙ্গে যায়। আমাদের কোন অভিযোগ তারা কর্ণপাত করে না।আমরা চাই দ্রুত শিক্ষার্থীরা নীজ আঙ্গিনায় আসুক।

এলজিইডি কর্মকর্তা মনির হায়দার বলেন, জেলাতে এবিষয়টি একটি প্রতিবেদন পাঠানো হবে। আশা করি দ্রুত কাজ শুরু হবে। উক্ত বিষয়ে নবনিযুক্ত উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।এলজিআরডি কর্মকর্তার সাথে এবিষয়ে আলোচনা করে সমাধান করার কথা জানান তিনি।

এসএম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়