×

জাতীয়

চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৩, ০৮:২৭ পিএম

চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর
চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর

চট্টগ্রামের লালখানবাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীরা নুর আহমদ সড়কে বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে তাতে অগ্নি সংযোগ করে। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর

চট্টগ্রামের লালখানবাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর
চট্টগ্রামে আ.লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর

চট্টগ্রামে বিএনপির পদযাত্রা শেষে নগরীর লালখানবাজারে চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা, প্রচারণার গাড়ি ও যানবাহন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর শেষে চলে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারি একটি বাস আটকে কমপক্ষে ২৫ জনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। হামলা-ভাঙচুরের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের পাশাপাশি নগরীর নুর আহমদ সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও এর প্রতিবাদে বিএনপি অফিসে ভাঙচুরের ঘটনায় নগরীর লালখানবাজার থেকে শুরু করে কাজীর দেউড়ি ও নুর আহমদ সড়কে বিএনপি অফিস এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ঘটনার পর এসব এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

‘খবর পেয়ে আমরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা একত্র হয়ে জিইসি মোড় থেকে দ্রুত ওয়াসার মোড়ের দিকে এগোতে থাকলে তারা বাসে উঠে পালানোর চেষ্টা করে। তখন আমরা ব্যারিকেড দিয়ে বাসটি আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি। সেই বাসে কমপক্ষে ২৫-৩০ জন বিএনপি নেতাকর্মী ছিল। তারা নিজেদেরকে উত্তর জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে’ - নুরুল আজিম রনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগ

প্রত্যক্ষদর্শী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকরা জানিয়েছেন, বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে নগরীর খুলশী থানার লালখান বাজারে জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের মূল ফটকের বিপরীতে প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

[caption id="attachment_448978" align="aligncenter" width="1280"] চট্টগ্রামের লালখানবাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীরা নুর আহমদ সড়কে বিএনপির ব্যানার ছিঁড়ে তাতে অগ্নি সংযোগ করে। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

ঘটনাস্থলে উপস্থিত নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি বুধবার সন্ধ্যায় ভোরের কাগজকে বলেন, ‘ওয়াসার মোড়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের রিজার্ভ বাস দাঁড়ানো ছিল। পদযাত্রা শেষ করে কিছু নেতাকর্মী সেই বাসে ওঠার জন্য যাচ্ছিল। এসময়েই তারা অতর্কিতে আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর শুরু করে। আমাদের প্রচারণার একটি পাজেরো, একটি প্রাইভেট কার ও ১০-১৫টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। এরপর সড়কেও তারা নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর করে। সব মিলিয়ে ২৫টিরও বেশি গাড়ি তারা ভাঙচুর করেছে।’

নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রচার সেলের সমন্বয়ক ও নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক বলেন, ‘আমরা উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ডে প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারণায় ছিলাম। সেখানে খবর পাই, বিএনপির পদযাত্রা শেষে লালখান বাজারে আমাদের যে মূল নির্বাচনী কার্যালয় আছে, সেখানে হামলা হয়েছে। কার্যালয়ে সেসময় নেতাদের মধ্যে কেউ ছিলেন না। কয়েকজন কর্মী ছিল। এই সুযোগে বিএনপির নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে।’

[caption id="attachment_448979" align="aligncenter" width="1156"] চট্টগ্রামের লালখানবাজারে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

প্রত্যক্ষদর্শী আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী জানান, বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে লালখান বাজারে নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা হেঁটে যাচ্ছিলেন। আকস্মিকভাবে নির্বাচনী কার্যালয় লক্ষ্য করে তারা ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। কয়েকজন ভেতরে গিয়ে প্রচারণার কয়েকটি ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে ও চেয়ারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এছাড়া কার্যালয়ের সামনে রাখা নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেন। এরপর তারা সড়কেও গাড়ি ভাংচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলের দিকে আসতে থাকলে তারা চলে যায়।

চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি জানান, হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে লালখান বাজার মোড় থেকে ওয়াসার মোড় পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। এসময় তারা শ্লোগান দিয়ে হামলাকারীদের বিচার দাবি করেন। সেখানে নগর আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মাহমুদ হাসনী, মাহমুদুল হক, যুবলীগ নেতা দিদারুল আলম, এসএম মাসুদ, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে হামলার খবর পেয়ে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নগরীর নুর আহমদ সড়কে নাসিমন ভবনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে এগোতে থাকে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমার নেতৃত্বে কর্মকর্তারা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। নাসিমন ভবনের সামনে মিছিল আসার পর পুলিশ তাদের আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কয়েক শ’ নেতাকর্মী পুলিশের বাধা এড়িয়ে ভেতরে ঢুকে যান।

বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে ও এর আশপাশে ঝোলানো ব্যানারগুলো তারা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে নাসিমন ভবনের সামনে সড়কে ব্যানার জড়ো করে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ভাঙচুর শেষে চলে যাওয়ার পর আরেক গ্রুপের নেতাকর্মীরা নগরীর নন্দনকানন থেকে মিছিল নিয়ে নাসিমন ভবনের সামনে আসেন। তারা নাসিমন ভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে পুলিশ তাদের আটকে দিয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App