সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ চার দফা দাবিতে শাহবাগ মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ।

শনিবার (১০ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান গ্রহণ করেন। এতে চারপাশের সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে তাদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।

শাহবাগ থানা সূত্র জানিয়েছে, পরবর্তীতে নয়জন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন আব্দুর রহমান (২৭), আরিফ হোসেন (২২), আবু বকর ছিদ্দিক (৩০), রোকন হোসেন (৩০), শরিফুল হাসান শুভ (৩২), তাসনিমুল হাসান অর্ণব (২৭), রাকিবুল হাসান (২৮), মো.মামুন রশিদ রতন (৩০) ও মো. জাকির হোসেন (২৯)।

‘সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের’ সদস্য সচিব মোহাম্মদ রাসেল ভোরের কাগজকে বলেন, পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দিয়েছে। আমাদের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এর আগে দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। বাধা পেয়ে সেখানেই বসে পড়েন তারা। পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখে বেলুনে বেঁধে তা উড়িয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে ত্রিশোর্ধ্বরা শিক্ষা সনদ ছিঁড়ে ফেলেন।

আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে আরো রয়েছে, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন অনুষদে বঙ্গবন্ধুর নামে ‘বঙ্গবন্ধু ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও একটি ম্যুরাল) স্থাপন করা।

সংগঠনটির আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম শুভ বলেন, বর্তমান সরকার ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরের বয়স দুই বছর বৃদ্ধি করে ৫৭-৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। ফলে দেশে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

তিনি আরো বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পদযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের বাধা দেয়ায় আমরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করি। পরে পুলিশ আমাদের সরিয়ে দিয়েছে।

ডিএমপি রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. আশরাফ হোসেন, তারা শাহবাগ অবরোধ করলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেয়া হয়। প্রতিমন্ত্রী তাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা কথা বলেন ও তাদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন। প্রতিমন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হয়ে তারা প্রথমে চলে যেতে চাইলেও পরে আবারো শাহবাগ অবরোধ করেন। আমরা তাদের হুইসেল বাজিয়ে ও সতর্ক করে সেখান থেকে সরিয়ে দিই। তাদের ওপর কোনো ধরনের লাঠিচার্জ করা হয়নি।