×

খেলা

ফাইনালে জকোভিচের প্রতিপক্ষ রুড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৩, ১০:৪২ পিএম

ফাইনালে জকোভিচের প্রতিপক্ষ রুড

নোভাক জকোভিচ ও ক্যাসপার রুড। ফাইল ছবি

ফরাসি ওপেনের সেমিফাইনাল ম্যাচে গত শুক্রবার কার্লোস আলকারাজের বিপক্ষে লড়াই করেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা নোভাক জকোভিচ। সেই ম্যাচের মাঝপথেই আলকারাজ চোটের মুখোমুখি হন। তারপরও তিনি পুরো খেলা চালিয়ে যান। তবে জকোভিচের বিপক্ষে তিনি খুব একটা লড়াই করতে পারেননি। তাই ৬-৩, ৫-৭, ৬-১, ৬-১ ব্যবধানে সেমিফাইনাল জিতে ফ্রেঞ্চ ওপেনের শিরোপা জয়ের পথে এক পা দিয়ে রাখলেন ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা সার্বিয়ান তারকা। রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় ক্যাসপার রুডের বিপক্ষে শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হবেন নোভাক জকোভিচ।

জকোভিচ ও আলকারাজের মধ্যে বয়স ও অভিজ্ঞতার পার্থক্য অনেক। তারপরও দুই তারকার লড়াইটা জমবে বলেই ধারণা করছিলেন টেনিস ভক্তরা। তরুণ তারকা আলকারাজ চোটে না পড়লে হয়তো জকোভিচকে লড়াই করেই ফাইনালে পা রাখতে হতো। তিনি চোটে পড়ায় সহজেই জয় তুলে নেন জকোভিচ। আলকারাজ এখন পর্যন্ত একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন।

জকোভিচ দাপট দেখিয়েই শুরু করেন ফাইনালে পা রাখার লড়াই। প্রথম দুটি সার্ভ ধরে রেখে তিনি ২-১ গেমে এগিয়ে যান। এই গেমে জকোভিচের একটি ক্রসকোর্ট ফোরহ্যান্ড উইনার দেখেইে ভক্তরা বুঝে যায় ম্যাচে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় পরের গেমেই। আলকারাজকে ব্রেক করেন জকোভিচ। কিন্তু ১৪ শটের যে র‌্যালি দেখা যায়, তা শেষ হওয়ার পর কেউই আর নিজের আসনে বসে থাকতে পারেনি। দুই খেলোয়াড়ের র‌্যাকেট থেকেই বেরোল ড্রপ শট। তবে শেষ পর্যন্ত ৬-৩ ব্যবধানে সেট জয় করে নেন জকোভিচই।

প্রথম সেট শেষ করতে দুই তারকা ৫৯ মিনিট সময় নেন। দ্বিতীয় সেটে তারা আরো বেশি সময় ধরে লড়াই করেন। সেই সেট শেষ হয় ৭৭ মিনিট পর। অর্থাৎ দুটি সেট শেষ হতে প্রায় আড়াই ঘণ্টার কাছাকাছি সময় লাগে। প্রতিটি পয়েন্টের জন্য যেভাবে আলকারাজ লড়াই করছিলেন, যেভাবে অনায়াসে কোর্টজুড়ে ছুটে বেড়াচ্ছিলেন, তাতে ৩৬ বছরের জোকোভিচকে দেখে মনেই হচ্ছিল ম্যাচটা কঠিন হতে চলেছে। দ্বিতীয় সেটে দুর্দান্ত লড়াই করে সার্বিয়ান তারকাকে পরাস্ত করেন আলকারাজ। তিনি জয় পান ৭-৫ পয়েন্টের ব্যবধানে। পয়েন্ট দেখেই যে কেউ বুঝতে পারার কথা লড়াই কেমন হয়েছিল।

প্রথম দুই সেট দর্শকদের উত্তেজনার মধ্যে রেখে তৃতীয় সেটের শুরুতেই চোটের মুখে পড়েন আলকারাজ। তাই প্রথম দুই সেটে যে রকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছিল সেটি আর তৃতীয় সেটে দেখা যায়নি। পুরো কোর্টজুড়ে দৌড়ে বাড়তি পরিশ্রম করছিলেন আলকারাজ। অতিরিক্ত চাপের কারণে তৃতীয় গেমের সময় তার ডান পায়ের পেশিতে টান ধরে। একটি শট রিটার্ন করতে গিয়ে ঠিকমতো ল্যান্ডিং করতে পারেননি আলকারাজ। এরপরই তাকে শারীরিকভাবে দুর্বল দেখাতে শুরু করে। শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে দুর্বল অবস্থায় পেয়ে তার পূর্ণ সুবিধা নেন জকোভিচ। ব্রেক করেন স্প্যানিশ তরুণ তারকাকে। এ সময় পুরো সেটজুড়েই শারীরিকভাবে বেশ অস্বস্তিতে দেখায় আলকারাজকে। জোকোভিচ ৬-১ পয়েন্টের ব্যবধানে জয় পাওয়াতে সেটা আরো পরিষ্কার হয়ে ওঠে।

চতুর্থ সেটেও দেখা যায় একই চিত্র। আলকারাজ ম্যাচটা ছেড়ে দেবেন কিনা সেই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কারণ যে কোর্ট কভারেজের জন্য তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন, সেই আলকারাজকেই দেখা যাচ্ছিল একের পর এক বল ছেড়ে দিতে। বলের ধারেকাছেই পৌঁছাতে পারছিলেন না তিনি। ফলে জোকোভিচের কাছে খেলাটা অনেক সহজ হয়ে যায়। পয়েন্টের জন্যে সেরকম কষ্টই করতে হচ্ছিল না তাকে। চতুর্থ ও শেষ সেটেও নোভাক জকোভিচ ৬-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ক্যারিয়ারের ২৩তম গ্র্যান্ড স্ল্যামের দিকে এক পা বাড়ান। এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো ফ্রেঞ্চ ওপেনের ফাইনালে উঠলেন জোকোভিচ।

ক্যাসপার রুডকে হারিয়ে শিরোপা জিততে পারলে নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবেন নোভাক জকোভিচ। তার নামের পাশে বর্তমানে রয়েছে ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম। ফাইনালে জিতলে তিনি প্রথম পুরুষ টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের স্বাদ পাবেন। এককভাবে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের চূড়ায় উঠতে জকোভিচের প্রয়োজন আর একটি মাত্র জয়। বর্তমানেও জকোভিচ সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী পুরুষ খেলোয়াড়। তবে সেটা যৌথভাবে। তার সঙ্গে যৌথভাবে শীর্ষস্থানে আছেন ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী আরেক তারকা রাফায়েল নাদাল। একটি জয় ছিনিয়ে জকোভিচ রাফায়েল নাদালকে পেছনে ফেলতে পারবেন।

জকোভিচের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যাসপার রুড আলেক্সান্ডার ভিরেভকে ৩-০ সেট ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে পা রাখেন। প্রথম সেটে তিনি ৬-৩ পয়েন্ট ব্যবধানে অনায়াসে জয় তুলে নেন। দ্বিতীয় সেটেও দেখা যায় একই দৃশ্য। ভিরেভ লড়াই করে দ্বিতীয় সেটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করলেও রুড ৬-৪ ব্যবধানে জয় তুলে নেন। তৃতীয় ও শেষ সেটে রুড ভিরেভকে পাত্তাই দেননি। শুরু থেকে দাপট দেখিয়ে তিনি ৬-০ পয়েন্ট ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App