×

মুক্তচিন্তা

স্মার্ট বাজেট, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৩, ১২:৫১ এএম

স্মার্ট বাজেট, অর্থনীতি, রাজনীতি ও সমাজ

বর্তমান সরকারের শেষ অর্থবছরে (২০২৩-২৪) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন। তার আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় ৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। একই সময়ে আয়ের প্রাক্কলন হচ্ছে ৫ লাখ কোটি টাকা, ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ঘাটতির হারে ৫.২ শতাংশ। অর্থমন্ত্রী এমন সময় বাজেটটি পেশ করলেন, যখন অর্থনীতিতে একদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও অন্যদিকে ডলার-সংকটের কারণে আমদানি হুমকির মুখে অথচ ডলারের সংস্থান কিংবা মুদ্রাস্ফীতি কমানোর কোনো দিকনির্দেশনা বাজেটে তেমন উল্লেখিত হয়নি। বাজেটে বড় ব্যয়ের পরিকল্পনা থাকলেও কীভাবে আয় বাড়ানো যাবে, তারও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা চোখে পড়েনি। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ আছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ব্যক্তি করসীমা বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ বাড়ানো এবং কিছু বিলাসী পণ্যের আমদানিকে নিরুৎসাহিত করা, আমদানি পণ্যে ব্যাপকভাবে সম্পূরক শুল্কারোপ, জমি-ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় বৃদ্ধি, দ্বিতীয় গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে করারোপে স্বল্প আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু সরকারি সেবা পেতে প্রত্যেক নাগরিককে ২ হাজার টাকা ন্যূনতম কর দেয়ার বিধান কতটা যৌক্তিক হয়েছে, তা ভেবে দেখা দরকার। একজন দিনমজুরেরও সরকারি সেবা নিতে হয়, তাকেও কি ২ হাজার টাকা কর দিতে হবে? অর্থমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চারটি ভিত্তির ওপর কাজ চলছে। এগুলো হলো স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি। সরকার আগামীর বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে, যেখানে প্রতিটি জনশক্তি স্মার্ট হবে, সবাই প্রতিটি কাজ অনলাইনে করতে শেখবে, ইকোনমি হবে ই-ইকোনমি, যাতে সম্পূর্ণ অর্থ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল ডিভাইসে করতে হবে, আমাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মযোগ্যতা সবকিছুই ই-গভর্ন্যান্সের মাধ্যমে হবে, ই-এডুকেশন, ই-হেলথসহ সব কিছুতেই ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করা হবে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ এগুলো করা সম্ভব হবে এবং সেটা মাথায় রেখেই কাজ চলছে। কিন্তু বাজেটে এর তেমন কোনো প্রতিফলন সেভাবে নেই। এবারের বাজেটেও কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথনির্দেশ কম আছে। অর্থমন্ত্রী বেসরকারি বিনিয়োগ ২৭ শতাংশে উন্নীত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন, তাও বাস্তবসম্মত নয় বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার চালিকাশক্তি হিসেবে তরুণ-তরুণী ও যুবসমাজকে প্রস্তুত করে তোলার উদ্দেশ্যে গবেষণা, উদ্ভাবন ও উন্নয়নমূলক কাজে আগামী বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এখন সমাজ, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে যারা ভাবেন, তারা এই বাজেটকে কীভাবে বিশ্লেষণ করছেন তা দেখার বিষয়। পত্রিকা খুললেই বাজেট নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মন্তব্য দেখা যায়, যা অনেকটা রাজনৈতিক, অনেকটা অর্থনৈতিক, আবার কিছুটা সমাজনীতিও বটে। সিপিডির বাজেট পর্যালোচনায় বলা হয়, একদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ থেকে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়েছে, অন্যদিকে ন্যূনতম কর ২ হাজার টাকা করা হয়েছে, যাদের করযোগ্য আয় নেই, তারাও এই করের আওতায় পড়বেন, এ কারণে উদ্যোগটি নৈতিকতার দিক থেকে ঠিক নয়, আবার যৌক্তিকও নয়। বর্তমান বিশ্ব প্রেক্ষাপট এবং অভ্যন্তরীণ নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যে এই বাজেট বাস্তবায়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয় বিশেষ করে বাজেটের প্রধান দুটি লক্ষ্য- ৭.৫ শতাংশ জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। রেমিট্যান্স নিম্নমুখী, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও কিন্তু নিম্নমুখী, ২৯ বিলিয়ন ডলারের নেমে এসেছে, বিদ্যুৎ এবং জ¦ালানি খাতে ব্যাপক একটা ঘাটতি দেখা গেছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে, সরকারি বিনিয়োগের হার ৬.২ শতাংশ আর ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২৭.৪ শতাংশ ধরা হয়েছে, যা কীভাবে সম্ভব হবে। আমদানিকৃত মূল্যস্ফীতির কথা বলা হলেও বৈশ্বিক বাজারে এখন সব পণ্যের দাম নিম্নমুখী। তাই মূল্যস্ফীতিকে এর ওপর চাপিয়ে দেয়া ঠিক হবে না। দেশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অনেক দুর্বলতা আছে যেমন- করকাঠামোর, প্রাতিষ্ঠানিক ও মনিটারি পলিসির মুদ্রানীতির সঙ্গে আর্থিক নীতির সমন্বয় না থাকা ইত্যাদি। আবার করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা করা ‘খুবই ভালো এবং সময়োপযোগী’ উদ্যোগ। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে মোট ৬৬ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পক্ষ থেকে ভর্তুকি হ্রাসের চাপ থাকলেও এ বরাদ্দ ব্যাপকমাত্রায় বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে টাকার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বৃদ্ধির কথা বলছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের সময় সহায়ক প্রকাশনা হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগ থেকে ‘?মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি’ প্রকাশ করা হয়। বিপিডিবি সূত্র ব্যবহার করে সামষ্টিক অর্থনীতি অনুবিভাগের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আগামী অর্থবছরে ডলারের বিনিময় হার ১ টাকা বাড়লে শুধু বিদ্যুতেই ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে ৭৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। টাকার অবমূল্যায়নে ভর্তুকির ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি সরকারের প্রকল্প ব্যয়ও উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়বে। অনেক সরকারি বৃহৎ প্রকল্প আমদানি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে সরকারের আর্থিক বোঝা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। সরকারের রাজস্ব আহরণেও এর নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা, ডলারের বিনিময় হারের ঊর্ধ্বগতিতে বেসরকারি খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের আশঙ্কা, ডলারসহ প্রধান বৈদেশিক মুদ্রাগুলোর বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন সরকারের ঋণের বোঝাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। একই সঙ্গে তা সরকারের আয় ও ব্যয়- দুটোর ওপরই ফেলতে যাচ্ছে মারাত্মক ও নেতিবাচক প্রভাব। যদিও অর্থনীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ ও ঋণের সুদ পরিশোধের চাপ সামনের দিনগুলোয় মন্ত্রণালয়ের প্রক্ষেপণের চেয়ে আরো অনেক বেশি হওয়ার জোর আশঙ্কা রয়েছে। বৈদেশিক ঋণের এ বোঝা ক্রমেই রিজার্ভসহ সার্বিক অর্থনীতির ওপর ক্রমেই আরো ভারী হয়ে চেপে বসছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এবং তারল্য সংকট এড়িয়ে চলতে দক্ষ ঋণ পরিশোধ ব্যবস্থাপনা জরুরি। যদিও বৈচিত্র্যপূর্ণ অর্থায়ন উৎস ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গড়ে তোলার জন্য সরকারি প্রচেষ্টার ফলে এটি সহনীয় সীমার মধ্যে থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূলধনি হিসাবে (ক্যাপিটাল অ্যাকাউন্ট বা ব্যালান্স অব পেমেন্টে নির্দিষ্ট একটি বছরে বিদেশিদের সঙ্গে মোট লেনদেনের খতিয়ান। এসব লেনদেনের মধ্যে রয়েছে আমদানি-রপ্তানি, মূলধনি বিনিয়োগ, ঋণ, অনুদান, রেমিট্যান্স ইত্যাদি) ইত্যাদির তেমন পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু আর্থিক হিসাবের (ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্ট, যা ব্যালান্স অব পেমেন্টের একটি উপাদান। এর আওতাধীন বিষয়গুলো হলো দেশের বাইরে মোট দাবি ও দায় যেমন প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ, পোর্টফোলিও বিনিয়োগ, রিজার্ভ সম্পদ ইত্যাদি) ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে যা হয়েছে, তা উদ্বেগের বিষয়। গত ৭ বছরে ব্যক্তি খাতে ঋণ বেড়েছে এবং সেগুলো কিন্তু সভরেন গ্যারান্টি দেয়া। বিষয়টি বড় উদ্বেগের। কারণ স্বল্পমেয়াদি ঋণ এখন বেড়ে যাচ্ছে। চলতি হিসাবের ঘাটতি থাকবে। সেটি রেমিট্যান্স দিয়ে পূরণ করা যাবে। কিন্তু ঋণ বাড়ানোর কারণে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকাউন্টের যে আউট ফ্লো তৈরি হবে, সেটিই বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। এটার কারণেই রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাবে। এখন আগের সমস্যার সঙ্গে নতুন সমস্যা যুক্ত হয়ে পুঞ্জীভূত হলো। তার সঙ্গে আবার যুক্ত হলো মুডিসের ঋণমান অবনমন। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হলো সমাজ উন্নয়নের একটি বড় ক্ষেত্র, যার প্রভাব সমাজের সর্বশ্রেণির মানুষের ওপর পড়ে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, শিক্ষা বাজেট ১৫ শতাংশের বেশি বাড়ানো হলেও আগের বছরের চেয়ে মাত্র ৮.২৪ শতাংশ বেড়েছে। শিক্ষা বাজেট ৮৮ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট বাজেটের ১১.৫৭ শতাংশ (চলতি বছরে ১২ শতাংশের বেশি ছিল)। জিডিপির শতাংশ হিসেবেও শিক্ষা বাজেট ছোট হয়ে এসেছে। প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য বাজেট ৩৮ হাজার কোটি টাকার বেশি, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। এক দশক ধরেই এই অনুপাত অপরিবর্তিত আছে। বরাদ্দের গতানুগতিকতার কারণে আউট অব পকেট স্বাস্থ্য ব্যয় কমানো সম্ভব হচ্ছে না। মনে রাখতে হবে আমাদের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের মাত্র ২৩ শতাংশ আসে সরকারের বরাদ্দ থেকে আর ৬৮ শতাংশই বহন করতে হয় ব্যক্তিমালিকানায়। তাই বাজেটে স্বাস্থ্যের অংশ বাড়ানো গেলে নাগরিকদের ওপর চাপ কিছুটা কমত। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়নের অদক্ষতার কারণেই হয়তো স্বাস্থ্যের অংশটি বাড়ানো যাচ্ছে না। আবার বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী বলছে, প্রস্তাবিত বাজেট সাংস্কৃতিক জাগরণের অনুকূল নয়, যা দেশের সংস্কৃতিকর্মীদের হতাশ করেছে। সমাজ টিকে থাকে সংস্কৃতির ক্রমবর্ধমান বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে। দীর্ঘদিন ধরে দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে, নানাভাবে তারা এ দেশে মৌলবাদী, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। এসব অপতৎপরতা রোধ এবং সামাজিক সংকট মোকাবিলায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সংস্কৃতি চর্চা। দেশকে অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদমুক্ত, মানবচেতনাসম্পন্ন ধারায় পরিচালনা করা এবং প্রজন্মের মানবিক গুণাবলির উৎকর্ষ সাধনেও সংস্কৃতির অপরিহার্যতা অনস্বীকার্য। কিন্তু সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রটি বরাবরই উপেক্ষিত থাকছে। এবারের বাজেটেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি, যা মোট বাজেটের ১ শতাংশেরও কম রয়েছে। আর তা শিল্পকলা একাডেমিতে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ আর শিল্পকলা একাডেমিকেন্দ্রিক শহুরে মানুষের চিত্তবিনোদনের কাজেই শেষ হয়ে যায়। সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটাতে গেলে যে ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা দরকার, তার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রতি বছরই বাজেটে সংস্কৃতি খাত অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। দেশের যে বিশাল জনগোষ্ঠী গ্রামে বসবাস করে, তাদের সংস্কৃতির বিকাশে কর্মরত যেসব ব্যক্তি-উদ্যোগ বা প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ রয়েছে, সেখানে এই বাজেট বরাদ্দের কণামাত্রও পৌঁছায় না। তাহলে সমাজের পরিবর্তন আসবে কীভাবে। আর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ৪টি উপাদানের মধ্যে স্মার্ট সমাজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সমাজ চিন্তাবিদদের এ নিয়ে এগোতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাপ্রসূত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের উদ্যোগগুলো প্রশংসার দাবি রাখে সত্যি কিন্তু এর বাস্তবায়ন শতভাগ না করা গেলে কাক্সিক্ষত অর্জন সম্ভব নয়। তার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতার প্রয়োজন রয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, যা নিয়ে ঘরে-বাইরে আলোচনা, সরগরম মাঠ-ময়দান, রাজনীতি বর্তমানে দেশ অঙ্গন ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিচরণ করছে, যা নিয়ে সমাজের মানুষের ভাবনার শেষ নেই। বাজারে মূল্যবৃদ্ধি রয়েছে, সমাজের মানুষের কষ্ট আছে, তবুও সরকারের মানবিক সুবিধাগুলো পেয়ে তারা কিছুটা হলেও স্বস্তিতে রয়েছে। বাজেট আসবে বাজেট যাবে, সরকারও আসা-যাওয়ার মধ্যে থেকে যাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এর মধ্যেই দেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি যারা বর্তমানে ক্ষমতায় রয়েছে, তাদের গত ১৪ বছরের পথপরিক্রমায় দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কাজেই আগামীতে সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রেখে আগামীতেও সরকার পরিচালনায় আমরা সহায়তা করব এই প্রত্যাশা রইল।

ড. মিহির কুমার রায় : কৃষি অর্থনীতিবিদ ও গবেষক; ডিন, সিটি ইউনিভার্সিটি। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App