×

জাতীয়

স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৩, ০৯:৪৬ এএম

স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ

তারিক আফজাল

বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক হিসেবে ১৯৮২ সালে যাত্রা শুরু করে আরব বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তির পর ব্যাংকটির নাম বদলে হয়েছে এবি ব্যাংক। দেশের বেসরকারি খাতের প্রথম ব্যাংক হওয়ায় নতুন নতুন অনেক সেবা চালু হয় এ ব্যাংকের হাত ধরে। চার দশকের বেশি সময়ে এ ব্যাংকটিতে সাফল্যের নতুন আরো একটি পালক যুক্ত হয়েছে ‘স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ’।

২০১৯ সালে এবি ব্যাংকের এক কঠিন সময়ে হাল ধরেন প্রেসিডেন্ট এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল। তার নেতৃত্বেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংকটি। করপোরেট ফোকাস থেকে সরে এসে দেশের কৃষি ও সিএমএসএমই খাতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে এবি ব্যাংক। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন, গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করা, সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলায় শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে কৃষকদের হাতে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি ঋণ তুলে দিচ্ছেন তারিক আফজাল। এবি ব্যাংকই প্রথম এ সেবা চালু করে দেশের ব্যাংকিং খাতে আরো একটি ইতিহাস সৃষ্টি করল। অতি স¤প্রতি ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের গল্প শোনালেন তারিক আফজাল।

তিনি জানান, এর মাধ্যমে শুধু কৃষির উন্নয়ন হচ্ছে, তা নয়। নতুন নতুন ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন হচ্ছে, নতুন গ্রাহক তৈরি হচ্ছে, মন্দ ঋণের মাত্রা কমিয়ে আনার সম্ভাবনা থাকবে এবং সারাদেশের বহু মানুষ ব্যাংকিংয়ের সেবার আওতায় চলে আসবে।

তারিক আফজালের সঙ্গে ভোরের কাগজের আলাপচারিতা প্রশ্নোত্তর আকারে তুলে ধরা হলো।

ভোরের কাগজ : প্রতি বছর বাংলাদেশ ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণে একটি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়। প্রায় বেশিরভাগ ব্যাংক নিজেরা সরাসরি ঋণ না দিয়ে এনজিওর মাধ্যমে ঋণ দেয়। এতে কৃষি ঋণের সুদহার ৮ শতাংশ হওয়ার কথা থাকলেও কৃষকদের দিতে হয় ২০-৩০ শতাংশ। এমন পরিস্থিতিতে সারাদেশে কৃষকদের মধ্যে স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি ঋণ বিতরণ করা এবং রিফাইন্যান্স স্কিমগুলো কৃষকদের হাতে পৌঁছাতে উদ্যোগী ভূমিকা রাখছেন। এ ধরনের চিন্তা সৃষ্টি হলো কীভাবে?

তারিক আফজাল : ৪-৮ শতাংশ সুদে ঋণ না দিয়ে ২৫-৩০ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হলে কৃষকরা খুব হতাশ থাকে, ঋণবিমুখ হয়ে যায়। এজন্যই এবি ব্যাংক সরাসরি কৃষকদের হাতে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পৌঁছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। কৃষি ঋণের আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এবি ব্যাংক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আধুনিকতার ছোঁয়া এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নকে আমলে নিয়ে তারই ধারাবাহিকতায় কাজগুলো করে যাচ্ছি। আমাদের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত কৃষি মন্ত্রণালয়। দেশের ১৪টি জেলায় গিয়েছি। আরো বাড়বে ধারাবাহিকভাবে। প্রত্যেকটি জেলায় একটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আছে এবং প্রত্যেকটি জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কৃষি অফিসার আছে। তারা আমাদের নির্ধারিত টিমের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেন। নির্ধারিত কৃষকদের প্রত্যেককে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে একটি কৃষি কার্ড দেয়া হয়। সেটা এনআইডির সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেসব কৃষক আমাদের কাছ থেকে ঋণ নিচ্ছেন বা পাচ্ছেন, তাদের সেই কৃষি কার্ড দেখেই প্রাথমিক অবস্থায় স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খুলে আমাদের গ্রাহক করা হচ্ছে। আমার অজানা অনেক কিছু ছিল। এর মধ্যে প্রথম ছিল- আমি আমার দেশকেই জানি না। দেশের উন্নয়নে কোন খাতকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন সেটা সঠিকভাবে আমার জানা ছিল না। আমার মতো একজন ব্যাংকারের সার্বক্ষণিক চিন্তা থাকে ব্যাংকের মালিক বা স্পন্সর যারা তাদের ডিভিডেন্ড দিতে হবে, ভালো একটি মুনাফা সংগ্রহ করতে হবে এবং শহরে থেকে যাদের কাছে অর্থ আছে তাদের সেবা বেশি দিতে হবে প্রভৃতি। কিন্তু আমার কাছে মনে হলো, অনেক কিছুই অমাার অজানা রয়ে গেছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকে কৃষিঋণ নিয়ে কাজ করা আমার প্রথম পদক্ষেপ। যারা এতদিন ব্যাংকে আসতে পারত না বা আসতে ভয় পেত, অর্থাৎ ইচ্ছা বা অনিচ্ছাকৃতভাবে যারা এতদিন ব্যাংকের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি, তাদের আমরা ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিয়ে আসছি। যদিও কৃষি ঋণ এখানে গুরুত্ব পাচ্ছে, কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় তারা ব্যাংকিংয়ের আওতায় আসছে।

স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা আমার জন্য পরীক্ষামূলক ছিল। এবি ব্যাংকের যেখানে কোনো শাখা নেই সেখানে কৃষক ঋণ পরিশোধ করবেন কীভাবে। বিকাশের মাধ্যমে কৃষক ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন, কিন্তু স্থানীয় এলাকায় সেগুলো চলমান আছে কিনা সেটা ছিল প্রথম পরীক্ষা। আমি যদি স্পটে না যাই, তাহলে কৃষকের চাহিদা, প্রয়োজন বুঝতে পারব না। সরকার সারে ভর্তুকি দিচ্ছে, কৃষকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে। তার বীজের প্রয়োজন হয়, একটা ট্রাক্টরের প্রয়োজন হয়, সেচের প্রয়োজন হয়। এ রকম আনুষঙ্গিক যে প্রয়োজন কৃষকের দিক থেকে থাকে, সেগুলোর চাহিদা কতখানি, আর্থিক সাহায্য কতখানি প্রয়োজন- তা আমরা প্রথমেই নিরূপণ করেছিলাম।

কৃষকের জমিতে আগে একটা ফসল হতো, এখন ঋণ নিয়ে তিনটা ফসল করবে। গত মার্চে কৃষিমন্ত্রীর সঙ্গে টাঙ্গাইলের মধুপুরে গিয়েছিলাম। সেখানে একজন আদিবাসী নারী কৃষক আমাকে বললেন, টাকাটা যদি আমাকে ফেব্রুয়ারিতে দিতেন তাহলে আমি আরো কিছু আনারস লাগাতাম, কিছু পেয়ারা আর কিছু টিউলিপ লাগাতাম। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, একজন আদিবাসী নারী কৃষক আমার থেকে বেশি জ্ঞান তো রাখেনই, অনেকের থেকেও বেশি জ্ঞান রাখেন। মাত্র এক লাখ টাকা আমি যে তাকে দিয়ে এলাম তা কিন্তু তাকে বহুগুণ রিটার্ন দেবে। তিনি যে আবাদ করবেন তা দেশের মানুষকে তো খাওয়াবেনই, সেই সঙ্গে বাইরেও রপ্তানি করবেন।

ভোরের কাগজ : ব্যাংকগুলো বেশিরভাগ এজেন্ট ব্যাংকিং এবং উপশাখার মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আমানত সংগ্রহ করছে। এসব জায়গায় নিজস্ব চ্যানেলে কৃষকদের পাশাপাশি এসএমই ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ঋণ পৌঁছে দিতে পারে। আপনি কী মনে করেন?

তারিক আফজাল : আমরা যেখানে গিয়েছি, সেখানে আমাদের শাখা ছিল না। তার পরও আমরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষি ঋণ দিচ্ছি। পাশাপাশি উপশাখাও খোলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে শুধু কৃষির উন্নয়ন হচ্ছে, তা নয়। নতুন নতুন ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন হচ্ছে, নতুন গ্রাহক তৈরি হচ্ছে, মন্দ ঋণের মাত্রা ভবিষ্যতে কমতে থাকবে এবং সারাদেশের বহু মানুষ ব্যাংকিংয়ের সেবার আওতায় চলে আসবে। আমাদের বৃহৎ ঋণ আছে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণ আছে, কৃষিঋণ আছে। এ ঋণের সঙ্গে আলোচিত একটি নাম হচ্ছে মন্দ ঋণ। গত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত তথা অর্থনীতিকে ভোগাচ্ছে। এটার বিবিধ কারণ আছে। এ বৃহৎ মন্দ ঋণের সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার উপায় হচ্ছে ঋণ প্রক্রিয়াকে ডাইভার্সিফাই করা। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্র, মাঝারি, নারী উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ডাইভার্সিফাই করা যেতে পারে। এর ফলে প্রত্যেক বছর নতুন নতুন গ্রাহক সৃষ্টি হবে। যিনি ক্ষুদ্র ঋণ নিচ্ছেন তিনি একদিন মাঝারি উদ্যোক্তাদের কাতারে আসবেন। ক্রমে তারা কোনো একদিন বৃহৎ শিল্পে আসার সক্ষমতা অর্জন করবেন। এতে ঋণ ব্যবস্থাপনার ঝুঁকি কমে যাবে। মন্দ ঋণের মাত্রা কমতে সহায়তা করবে।

ভোরের কাগজ : দেশের জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদানের তুলনায় কৃষিঋণ বিতরণ যথেষ্ট নয়। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের উপায় কী?

তারিক আফজাল : আমাদের জিডিপিতে কৃষি সরাসরি সম্পৃক্ত। আমরা যে কার্যক্রমের আওতায় মানুষকে নিয়ে আসছি এটা শহরভিত্তিক নয়, এটা সারা বাংলাদেশ ভিত্তিক। এলডিসিতে এ উন্নয়নের ভূমিকা অপরিসীম। আমাদের সবার সক্ষমতা বাড়লে সরাসরি তা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্বচ্ছ এবং সত্যিকার ছবি রিফ্লেক্ট করবে। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি বৃহৎ উদ্যোগ। প্রধানমন্ত্রী আমদানির উপর নির্ভরশীল থাকতে চান না। বর্তমানে বৈশ্বিক যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, সেখানে আগামীতে যেন বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে এজন্য কৃষি একটি বিশাল ভূমিকা রাখছে। ১৯৭২ সালে এ দেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি, বর্তমানে বেড়ে প্রায় ১৮ কোটি হয়েছে। এতটুকু জমি বাড়েনি, বরং কমেছে। জনসংখ্যার এতো বিস্ফোরণ, অথচ মানুষ না খেয়ে নেই। কোথাও কোথাও এক জমিতে তিনবার করে ফসল ফলানো হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে, কৃষিতে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নতি করেছে। আমাদের দেশের মানুষ বাড়ছে, কিন্তু সংকট তৈরি হয়নি। অন্য অনেক দেশ আছে যেখানে নির্ধারিত পরিমাণ পণ্যের বেশি কেনা যায় না। অথচ আমাদের দেশে আমার চাহিদা অনুযায়ী ইচ্ছেমতো পণ্য কিনতে পারছি।জনসংখ্যা বাড়ল, জমি বাড়ল না। কিন্তু কৃষির এত ব্যাপক উন্নয়ন কিভাবে সম্ভব হলো- এ বিষয়ে আমার কৌতুহল ছিল। আমরা প্রথমে টুঙ্গিপাড়া থেকে এ স্মার্ট কার্ড বিতরন শুরু করেছি। এটা আমার পরীক্ষামূলক এবং চ্যালেঞ্জ হিসেবে ছিল। এখন ১৩টি জেলায় ২০ হাজারের বেশি কৃষকের কাছে স্মার্ট কার্ড পৌঁছে দিয়েছি, অর্থাৎ আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।

প্রথমে ভেবেছি কোথায় থেকে শুরু করব। আমি ইতিহাস ঘেটে দেখলাম, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশকে তৈরি করার জন্য কৃষিকে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছেন। এ বিষয়কে আমি স্বরণে-শ্রদ্ধায় রেখে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুল থেকে একটি সামিয়ানা টাঙিয়ে এর যাত্রা শুরু করি। কিছু স্কুল শিক্ষক, ৮০০ জন কৃষক, এবি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় নেতারা সে সময় উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গিয়ে আমরা আবিষ্কার করলাম, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কোনো ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড দেয় না। আমরা তাদের ক্রেডিট কার্ড দিলাম। আমি সেখান থেকে অনেক কিছু শিক্ষা নিয়েছি। বিশেষ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থার বাইরে মানুষ কেন সেবা পাচ্ছে না এ বিষয়টি খুঁজে বের করলাম।

সেখানে চ্যালেঞ্জগুলো কি, সেবা বহির্ভূত সেবার আওতায় কি কি আনা যায়- এগুলো আবিষ্কার করলাম। এ বিষয়গুলো একজন ব্যাংকার হিসেবে আমাকে ব্যাপকভাবে আলোড়িত করেছিল। আমার অজানা অনেক কিছু ছিল। এর মধ্যে প্রথম ছিল- আমি আমার দেশকেই জানি না। দেশের উন্নয়নে কোন খাতকে গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন সেটা সঠিকভাবে আমার জানা ছিল না। আমার মতো একজন ব্যাংকারের সার্বক্ষণিক চিন্তা থাকে ব্যাংকের মালিক বা স্পন্সর যারা তাদের ডিভিডেন্ড দিতে হবে, ভালো একটি মুনাফা সংগ্রহ করতে হবে এবং শহরে থেকে যাদের কাছে অর্থ আছে তাদের সেবা বেশি দিতে হবে। কিন্তু আমার কাছে মনে হলো অনেক কিছুই অমাার অজানা রয়ে গেছে। সেই অনুপ্রেরণা থেকে কৃষিঋণ নিয়ে কাজ করা আমার প্রথম পদক্ষেপ।

ভোরের কাগজ : কৃষিঋণ নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী?

তারিক আফজাল : তিনটি দিককে আমি প্রাধান্য দেই। কৃষকের ন্যায্য পাওনা, কৃষির উন্নয়ন ও খাদ্যে স্বনির্ভরতা। এছাড়া রপ্তানির উন্নয়ন এবং দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন। এ নিয়েই আমার আগামীর পরিকল্পনা।

ভোরের কাগজ : নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণেও আপনারা অগ্রণী ভূমিকা রাখছেন। এ পর্যন্ত নারী উদ্যোক্তাদের কি ধরনের সহায়তা করেছেন?

তারিক আফজাল : নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। চুক্তির আওতায় ঋণের সুদে কোনো পরিবর্তন হবে না। নারী উদ্যোক্তাদের যে ডাটাবেজ তাদের কাছে আছে, সেখান থেকে তারা সুপারিশ করবেন। কিংবা তাদের মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তারা আমাদের কাছে আসবেন, আমাদের গ্রাহক হবেন, ঋণগ্রহীতা হবেন। আমরা যেমন কৃষি মন্ত্রণালয় বা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঙ্গে কাজ করে কৃষির স¤প্রসারণ করছি, তেমনিভাবে আমাদের শাখা-উপশাখা ছাড়াও আমাদের নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগামী করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠান আমাদের ব্যাপক সহযোগিতা করে চলছে। একটি শক্তিশালী অর্থনীতি, ব্যাংক, সংগঠন তৈরি করতে নারী-পুরুষ উভয়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এ সমন্বয় এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা- এ রকম একটি উদ্যোগ থেকে আসতে পারে। আমি মনে করি, শুধু শহরভিত্তিক ব্যাংকিং নয়। আমাদের সবার বাংলাদেশভিত্তিক ব্যাংকিং করা উচিত। শুধু ঢাকা শহরের গ্রাহক নয়, সারাদেশের গ্রাহক আমাদের প্রয়োজন। সরকার অনেক আগেই বুঝেছে। বর্তমান সরকার এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে, আধুনিকায়ন করেছে এবং এগিয়ে নিয়ে গেছে। অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। পদ্মা সেতু হয়েছে, আরো ১০০ ব্রিজ হয়েছে। নতুন রাস্তার সংযোগগুলো ব্যাংকারদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার পথ সহজ করে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কৃষি মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সবার আন্তরিকতা আমাদের মুগ্ধ করে। এখন এর সদ্ব্যবহার আমাদের করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App