×

জাতীয়

তাপমাত্রা কমার কোনো আশা নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৩, ০৮:০৫ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=i8NctC0Ujj8

সাম্প্রতিক সময়ে তাপমাত্রা কমার কোনো আশা নেই এমন মন্তব্য করে পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেছেন, গ্রীণ হাউস গ্যাসের পরিমান বেড়েই চলেছে। প্রধান উদ্গীরনকারী দেশগুলো হচ্ছে ইউক্রেন, চায়না, ইউএসএ সৌদী আরব। এটা বেড়েই চলেছে। এর পরিমাণ ৩ দশমিক ৭, এটা বেড়ে ৪ হয়ে যেতে পারে। পৃথিবী যদি গুরুত্বসহকারে কাজ না করে তাহলে ৬ হয়ে যেতে পারে। এর ফলে পৃথিবী উত্তপ্ত হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রও। এতে জলজ প্রাণী আক্রান্ত হচ্ছে। এ উদ্গীরন না কমালে কোনো সুফল আসবে না।

মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত ইনস্টিটিউটের সভাকক্ষে ‘জলবায়ু ঝুঁকি নিরসন এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আইনুন নিশাত এসব কথা বলেন।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ফায়জুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ-উপস্থাপন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য মালিক ফিদা এ খান। আলোচক ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক আশরাফ আলী, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্টস ফোরামের মহাসচিব আসাদুজ্জামান সম্রাট।

সেমিনারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়াধীন বিভিন্ন দপ্তর, বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পরিচালক (প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠান) ড. মো. মারুফ নাওয়াজ। সেমিনার পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এ প্রতিষ্ঠানের উপপরিচালক (সংযুক্ত) তানিয়া খান। সেমিনারে সদ্য প্রয়াত সিনিয়র সাংবাদিক কামরুল ইসলামের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

গণমাধ্যমের ক্ষমতা অপরিসীম, তারা চাইলে যে কোনো জায়গায় যেতে পারে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. আইনুন নিশাত আরো বলেন, তবে সঠিক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংবাদ মাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এ লক্ষে সমন্বিত পানি সম্পদ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হতে সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রভৃতি বিষয়ের তথ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। তবে আমাদের যে পরিমান পরিকল্পনা করা হয়, তার বাস্তবায়ন করা হয় না।

তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি। এর জন্য খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া দরকার। পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোজনে মাথা ঘামায় না।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সমালোচনা করে এই জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর এমন দুর্বোধ্য ভাষায় আবহাওয়া বার্তা দেয় যা অনেকটা কথাশিল্পী শরৎ চন্দ্রের সেই সময়ের ভাষায়। আমার ক্ষমতা থাকলে আবহাওয়া অফিসের সব বদলে দিতাম।

বিশ্ব এখন তরুণদের দিকেই নজর দিচ্ছে, কারণ আজকের তরুণদেরকে বুঝে নিতে হবে আগামির পৃথিবীকে এমন মন্তব্যও করেন এই ইমেরিটাস অধ্যাপক।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে এমন মন্তব্য করে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য মালিক ফিদা এ খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয় একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিরসনে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি হ্রাস এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বিষয়টিকে উন্নয়ন পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করতেই হবে। কারণ দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০ মিলিয়নের মতো মানুষ অভিবাসী হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ক্লাইমেট ভালনারেবল ইনডেক্স অনুযায়ী বিশ্বের ১৯২টি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি ও অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় একটি বলিষ্ঠ অভিযোজন পরিকাঠামো গড়ে তোলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিকদের সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এর সঙ্গে যদি গণমাধ্যম আরো সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও সাফল্য অর্জন করতে পারবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App