×

খেলা

আফগান বধে কঠোর অনুশীলনে হাথুরুর শিষ্যরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৩, ১০:০২ পিএম

আফগান বধে কঠোর অনুশীলনে হাথুরুর শিষ্যরা

আফগান বধের ছক কষতে গুরু হাথুরুসিংসের সঙ্গে পরামর্শ করছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। ছবি: বিসিবি

ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে চোটে পড়েন সাকিব আল হাসান। এ জন্য সেই সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও মাঠে দেখা যায়নি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে। সিরিজ শেষে ক্রিকেটাররা দেশে ফিরে আসলেও সাকিব ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে গত সোমবার সকালে তিনি বাংলাদেশে ফিরেন। দেশে ফিরেই তিনি মঙ্গলবার মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দলের অনুশীলন পর্যবেক্ষণ করতে যান।

চোটের কারণে সাকিবকে চার সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসক। তাই আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজে খেলবেন না বাংলাদেশ টেস্ট দলের নিয়মিত এই অধিনায়ক। তার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ দলকে সাদা পোশাকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস। আগামী জুলাইয়ে আফগানদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ফের মাঠে নামবেন টাইগার অলরাউন্ডার।

মিরপুরে গিয়ে প্রথমে সাকিব বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যালয়ে যান সাকেব। সেখানে উপস্থিত সবার সঙ্গে মিটিং করে ইনডোরে দলের অনুশীলন দেখতে যান অধিনায়ক। সেখানে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলতে দেখা যায় তাকে। এরপর তিনি বিসিবি কার্যালয় হয়ে বেরিয়ে যান।

মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ সিরিজের সময়-সূচি নিশ্চিত করে বিসিবি। আগামী ১৪ জুন থেকে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট মিরপুর শেরেবাংলা বাংলা স্টেডিয়ামে শুরু হবে। খেলা শুরু হবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে। এরপর ১৬ দিন বিরতি দিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। সেখানে ৫, ৮ ও ১১ জুলাইয়ের তিন ওয়ানডে ম্যাচ শুরু হবে বেলা দুইটায়। প্রতিটি ওয়ানডে ম্যাচই হবে দিবারাত্রির। ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেই দুই দল পাড়ি জমাবে সিলেটের মাটিতে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৪ ও ১৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুটি ম্যাচ। টেস্ট সিরিজ খেলার জন্য আগামী ১০ জুন ঢাকায় পা রাখবে রশিদ খানের দল।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ সিরিজকে সামনে রেখে গত ২৯ মে থেকে প্রি সিরিজ ক্যাম্পে ব্যস্ত সময় পার করছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এরই মধ্যেই টেস্ট সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেচে বিসিবি। সেই দলে আধিক্য দেখা গেছে পেসারের। অন্যান্য সময় ঘরের মাঠের সিরিজগুলোতে স্পিন কেন্দ্রীক দল ঘোষণা করতে দেখা যেত। কেন না ঘরের মাঠে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি স্পিনাররা। তাদের বদৌলতে গত এক দশকে অনেক বড় বড় দলকে ধরাশায়ী করেছে টাইগাররা। তবে এবার আফগানদের বিপক্ষে পেসারদের কাছে ভালো কিছু আশা করছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

আফগানিস্তান দলের শক্তিশালি ইউনিট স্পিন বোলিং। সেখানে আছে রশিদ খানের মতো তারকা বোলার। তাছাড়া তাদের ব্যাটিং ইউনিটও বিশ্বমানের। তাদের সামনে এবার লাল বলে পেসারদের শক্তি যাচাই করে নিতে চায় বিসিবি। চলতি বছরে বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছে টাইগার শিবিরের পেসাররা। সাদা বলে চলতি বছরের সবগুলো সিরিজেই স্পিনারদের চেয়ে সফলতা দেখিয়েছে পেসাররা। ঘরের মাঠে আইরিশদের বিপক্ষে সিরিজের একটি ম্যাচে ১০টি উইকেটের সবকটিই তুলেছিলেন তাসকিনরা। এবার লাল বলে তাদের পরখ করে নেয়ার জন্যই দলে রাখা হয়েছে ৫ পেসারকে। এতোজন পেসার রাখার ব্যাখ্যাটা পাওয়া যায় বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর কাছ থেকে।

গত সোমবার তিনি জানান, ‘প্রচণ্ড গরমে পেসারদের খেলতে হবে। অনুশীলন করতে হবে। টেস্ট শুরু হতে এখনো অনেক দেরি। এর আগে কারো কোনো সমস্যা হলে যেন ব্যাকআপ প্রস্তুত রাখা যায়, সেজন্য পেসারদের তালিকাটা বড় করা হয়েছে। আমরা অনেকদিন আগে আফগানদের বিপক্ষে সাদা পোশাকে খেলেছি। আমাদের ক্রিকেটাররা এখন যথেষ্ট ম্যাচিউরড। যথেষ্ট অভিজ্ঞতা হয়েছে তাদের। এই টেস্টে নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে অবশ্যই ভালো ফলাফল পাব আমরা।’ তিনি যোগ করেন, ‘একটা টেস্ট ম্যাচ আমাদের আফগানিস্তানের সঙ্গে। খুব চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশন। এখন যথেষ্ট গরম। সব কিছু মিলিয়ে সেরা দলই আমরা দাঁড় করিয়েছি। আশা করছি, আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা নিজেদের সেরাটাই খেলব।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সর্বশেষ ২০১৯ সালে টেস্ট ম্যাচ খেলে। সেই ম্যাচই ছিল আফগানদের বিপক্ষে টাইগারদের একমাত্র টেস্ট ম্যাচ। ঘরের মাঠে খেলা সেই ম্যাচে ভালো কোনো স্মৃতি তৈরি করতে পারেনি বাংলাদেশ দল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে তারা বাংলাদেশি বোলারদের ব্যর্থ প্রমাণ করে বড় সংগ্রহ তৈরি করে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করতে এসে ব্যর্থ হয় টাইগার ব্যাটাররাও। তাদের ফলো অনে না ফেলে আফগানরা নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যবধান বাড়িয়ে ইনিংস ঘোষণা করে। সেই ইনিংসে অবশ্য বোলাররা কিছুটা সফলতা পেয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। এবার তাই প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। যে কোনো মূল্যেই তারা এবার আফগানদের হারাতে মরিয়া।

টেস্ট ম্যাচ শুরু হওয়ার পর পরই ওয়ানডে দলের খেলোয়াড়রা অনুশীলন শুরু করবে। তাই বাংলাদেশ ‘এ’ দল ও বাংলাদেশ টাইগার্সের জন্য কাজ করা জেমি সিডন্সকে রাখা হয়েছে জাতীয় দলের ট্রেনিং স্টাফে। তাকে জাতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত করার কারণ জানতে চাইলে বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ম্যানেজার নাফীস ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্রিকেটারদের নিয়ে জেমির কাজ করার কথা। টাইগার্সের অনেক ক্রিকেটার জাতীয় দলের ক্যাম্পে রয়েছে। এছাড়া, টেস্ট ম্যাচ শুরু হয়ে গেলে সাদা বলের ক্রিকেটারদের আলাদা অনুশীলন করাতে হবে। জেমি এবং আরো কয়েকজন কোচ সে কাজটি করবেন। সে কারণে জাতীয় দলের সঙ্গে রাখা হয়েছে তাকে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App