×

সারাদেশ

পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০ টাকা কমলো!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১১:১৪ পিএম

পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০ টাকা কমলো!

দেশে পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু-মুনাফাখোর ব্যবসায়িরা ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাধারণ নাগরিকদের পকেট থেকে। কিন্তু যেইমাত্র কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিলো তখন চট্টগ্রামের পাইকারি বাজরে সুড়সুড় করে কেজিপ্রতি দাম কমে গেলো অবিশ্বাস্যভাবে কমে যেতে শুরু করেছে। কিন্তু সাধারণ সচেতন নাগরিকদের প্রশ্ন- এসব ‘সিন্ডিকেট’ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কেন কোন ব্যবস্থা নেয়নি?

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ এলাকায় যে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকায়, তা সোমবার এক লাফে ৩০ টাকা কমে ৬০ টাকা হয়ে গেছে। অথচ প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের টীম অভিযান চালিয়েও সঠিক দামে বিক্রি করাতে ব্যর্থ হয়েছেন। অথচ কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ আমদানীর অনুমতি দেয়াতেই জাদুমন্ত্রের মতো দাম কমিয়ে দিলেন ব্যবসায়ীরা।

এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন সোমবার (৫ জুন) দুপুরে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার পরিদর্শন করে এ বিষয়ে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সরকার প্রান্তিক কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে এতদিন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেননি। কিন্তু প্রান্তিক কৃষকদের কাছে আজ কোনো পেঁয়াজ নেই। সব পেঁয়াজ সিন্ডিকেট করে কিনে নেয়া হয়েছে। তাদের চাহিদাকৃত দামে ব্যবসায়ীদের বাধ্য করা হচ্ছে। তিনি বলেন এভাবে সিন্ডিকেট করে প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে জনগণকে অহেতুক কষ্ট দেয়া হচ্ছে। অথচ বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই ব্যবসায়ীদেরকে নানা রকম সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকেন শুধুমাত্র পণ্যসামগ্রী জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য। অথচ আমরা দেখছি বাজারে এর কোনো প্রভাবই নেই। অহেতুক কয়েক দিন পর পর একেকটি পণ্যের দাম বৃদ্ধি করা হয়। কখনো আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধি, কখনো এলসি সমস্যা, আবার কখনো ডলার সংকট বলে পণ্যের অতিরিক্ত দাম আদায় করা হয় ভোক্তাদের কাছ থেকে। এ ধরনের ঘৃণ্য মানসিকতা থেকে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের বের হয়ে আসারও অনুরোধ জানান তিনি।

সুজন অভিযোগ করে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি পাঁচটি গ্রুপের কাছে দেশের জনগণের অতি চাহিদাকৃত চিনি ও ভোজ্যতেলের বাজার জিম্মি। তারা ইচ্ছে করে এসব পণ্যের দাম বাড়ায়, আবার কমায়। কারসাজি করে এখন আদার দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। দেখা যায়- রমজান মাস আসলে চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল, আটা, ময়দার দাম বৃদ্ধি করা হয়। এখন কোরবানির আগে রসুন, পেঁয়াজ, আদা, মসলার মূল্যবৃদ্ধি করা হচ্ছে। এভাবে একের পর এক দাম বৃদ্ধি করতে থাকলে জনগণ কোথায় যাবে সে প্রশ্নও রাখেন তিনি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক প্রশাসক সুজন ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা আল্লাহরওয়াস্তে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখুন, তা নাহলে সামাজিক আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে। ,তিনি গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এসব অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। পাশাপাশি, এসব মুনাফাখোর ব্যবসায়িদের নাম-পরিচয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশ করার আহ্বান জানান যাতে জনগণ এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে পারে।

এদিকে, কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ সভাপতি নাজের হোসাইন বলেছেন, পেঁয়াজ এখনো আমদানি করা হয়নি, শুধু আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। তাতেই ব্যবসায়িরা তড়িঘড়ি করে দাম কমিয়ে দিয়েছেন। অর্থাৎ এতদিন এরা সিন্ডিকেট করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো সাধারণ জনগণ এমনকি সরকারকেও জিম্মি করেছিল। অবৈধভাবে তারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন দাম কমিয়ে সাধু সাজার চেষ্টা করছেন যা কোনভাবেই কাম্য নয়, বরং তাদেরকে শাস্তি দেয়া উচিত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App