×

সারাদেশ

ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগে জেলহাজতে দুই শিক্ষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২৩, ১২:৫৪ এএম

ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগে জেলহাজতে দুই শিক্ষক

মাদ্রাসা ছাত্রকে অপহরণ করে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনসহ মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়ার অভিযোগে ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর মতিয়ার রহমান হাফেজিয়া মাদ্রাসার দুই শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে রবিবার (৪ জুন) দুপুরে জয়পুরহাট কারাগারে পাঠিয়েছেন ক্ষেতলাল থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুই মাদ্রাসা শিক্ষক হলেন বগুড়া জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার থালতা মাঝগ্রামের মৃত তবিবর রহমানের ছেলে আয়নুল হক (৩৫) ও ক্ষেতলাল উপজেলার সুহলী গ্রামের বাবু আকন্দের ছেলে খায়রুল ইসলাম (২৩)।

জানা গেছে, বগুড়া কাহালু উপজেলার হারলতা গ্রামের দরিদ্র কৃষক নগর আলীর ছেলে বায়েজিদ বোস্তামি (১৫) গত চার বছর আগে ক্ষেতলাল উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের শিবপুর মতিয়ার রহমান হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। গত এপ্রিলে রোজার শেষ দিকে ওই মাদ্রাসা থেকে শিক্ষক আয়নুল হকের একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায় এবং এ ঘটনায় ছাত্র বায়েজিদকে চুরির সঙ্গে জড়িত বলে সন্দেহ করেন ওই শিক্ষক। ওই ঘটনার দুই দিনপর ওই মাদ্রাসা থেকেই মোবাইল ফোনটি খুঁজে পায়। এ কারণে বাবা নগর আলী ছেলে বায়েজিদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে গত মে মাসে দুপচাঁচিয়ার তালোড়া পৌর এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। ওই কারনে শিবপুর মতিয়ার রহমান হাফেজিয়া মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র বায়েজিদকে মোবাইল হারানোর ঘটনার জেরে ও মাদ্রাসা পরিবর্তন করে অন্য মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ায় গত ১ জুন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই অভিযুক্ত দুই শিক্ষক বায়েজিদের বর্তমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুপচাঁচিয়ার তালোড়া জামিয়া ইসলামীয়া দারুল উলুম (লুৎফর রহমান) কওমি মাদ্রাসায় গিয়ে শিবপুর মতিয়ার রহমান হাফেজিয়া মাদ্রাসায় বড় খাবারের আয়োজন আছে এমন প্রলোভন দেখিয়ে সেখান থেকে তাকে মোটরসাইকেলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শিবপুর মতিয়ার রহমান হাফেজিয়া মাদ্রাসায় তুলে নিয়ে যান। পরে ছাত্র বায়েজদকে ওই মাদ্রসার একটি কক্ষে আটকে রেখে গামছা ও দড়ি দিয়ে হাত-পা বেধে শারীরিক ও মাসনসিকভাবে লাঞ্ছিত করেন ও ব্লেড দিয়ে তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেন। এতে বায়েজিদের মাথায় রক্তক্ষরণ হয়। এ ঘটনার পরদিন সে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ওই দুই অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে মোটরসাইকেলযোগে তালোড়া পৌর এলাকার জামিয়া ইসলামীয়া দারুল উলুম লুৎফর রহমান কওমি মাদ্রাসা গেটের সামনে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। ওই ছাত্র বিষয়টি মাদ্রাসা প্রিন্সিপাল মাওলানা মো. আনোয়ার হোসেনকে বিস্তারিত জানান ও পরে তিনি বিষয়টি ওই ছাত্রের বাবাকে জানায়।

এ কারণে নির্যাতনে শিকার ছাত্র বায়েজিদের বাবা নগর আলী বাদি হয়ে ওই দুই শিক্ষককে অভিযুক্ত করে গত শনিবার দুপুরে ক্ষেতলাল থানায় নারী ও শিশু নির্তন দমন আইন ও অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করলে ওই দিন সন্ধ্যায় অভিযুক্ত দুই মাদ্রাসা শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেন। পরদিন রবিবার দুপুরে তাদের দুইজনকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠান।

উল্লেখ্য, গত ২ জুন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় চুরি সন্দেহে অপর এক ছাত্র মহরম ইসলামকে (১৫) শিবপুর মাদ্রাসায় একই কক্ষে আটক রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালান এমন অভিযোগ উঠেছে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিবুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা ছাত্র নির্যাতন ও অপহরণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে ও আসামি দুজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App