দেশের ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজম খানের আজ ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১১ সালের এই দিনে (৫ জুন) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। প্রতি বছর এই দিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন তার পরিবার, বন্ধু-স্বজন, শুভাকাঙক্ষী ভক্ত-শিষ্য সবাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও তাকে ঘিরে অনেকের স্মৃতিচারণা চোখে পড়ে।
মাত্র ২১ বছর বয়সে ঢাকা উত্তরের সেকশন কমান্ডার হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৯’র গণ-অভ্যুত্থানের সময়েই ব্যাপক সোচ্চার হয়ে ওঠেন প্রগতিশীল চেতনার ধারক এই পপ তারকা। সে সময়ের ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য হিসেবে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণসংগীত প্রচারে অংশ নেন তিনি।
দেশ স্বাধীন হয়ার পর গান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এই কিংবদন্তি। আখন্দ ভ্রাতৃদ্বয় আরো কয়েকজনকে নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন অর্থাৎ বিটিভিতে এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে এবং চার কালেমা সাক্ষী দেবে গান দুটি গেয়ে মুহূর্তেই দেশজুড়ে পরিচিতি পেয়ে যান আজম খান। রীতিমতো প্রশংসা আর তুমুল জনপ্রিয়তায় ভাসতে থাকে ব্যান্ডদল ‘উচ্চারণ’।
সংগীত জগতে আজম খানের ১৭টি গানের অ্যালবামসহ বেশ কিছু মিক্সড অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। তার অসংখ্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো- ‘আমি যারে চাইরে’, ‘অভিমানী তুমি কোথায়’, ‘একদিন-তো চলে যাব’, ‘জীবনে কিছু পাব নারে’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘ও চাঁদ সুন্দর চাঁদ’, ‘চুপ চুপ অনামিকা চুপ’, ‘হারিয়ে গেছ খুঁজে পাব না’, ‘ঘুম আসে না’-সহ আরও অসংখ্য খান।
১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ১০ নম্বর কোয়ার্টারে জন্ম নেন আজম খান। ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৮১ সালের ১৪ জানুয়ারি সাহেদা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। তখন তার বয়স ছিল ৩১ বছর। তার সহধর্মিণী মারা যাওয়ার পর থেকে একাকী জীবন কাটাতেন জনপ্রিয় এই পপ তারকা। ২০১০ সালে তিনি ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি চলে গেলেও ভক্তদের ভালোবাসার মাঝে রয়ে গেছেন ঠিকই। রয়ে যাবে চিরকাল ভক্তদের হৃদয়ের মণিকোঠায়। তবে তার শুন্যতা কখনই পূরণ হবার নয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।