×

জাতীয়

সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়েছে অনেক দেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৩, ০৮:৩১ এএম

সুদহার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি কমিয়েছে অনেক দেশ

বিশ্বের যেসব দেশ সুদের হার বাড়িয়েছে তারা মূল্যস্ফীতি কমাতে সফল হয়েছে। ২০২২ সালের আগস্টে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, যা চলতি বছরের মে মাসে ৯ দশমিক ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গতকাল শনিবার মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ঢাকার মতিঝিলে এমসিসিআইয়ের নিজস্ব কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ফর্ম ভালনারিবিলিটি টু রেজিলিয়েন্স এন্ড র‌্যাপিড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এ আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। আরো উপস্থিত ছিলেন এমসিসিআই পরিচালক মো. আদিব এ খান, পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার, ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে পিআরআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ বলেন, বাজেটে বিদেশি বিনিয়োগের কোনো দিকনির্দেশনা আসেনি। মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী। তিনি বলেন, শেষ ৫ বছরে রাজস্ব বেড়েছে ১০ শতাংশের মতো। এ বছর ৮ দশমিক ৯%। কিন্তু অর্জনের চেয়ে নতুন বাজেটে ৩৭% প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে। এটা কখনোই হয়নি। এনবিআর পুলিশি সংস্থা হয়ে যাচ্ছে। হেনস্তা করে কর আদায় সম্ভব নয়, উচিতও নয়। তিনি আরো বলেন, দুর্নীতি, কর ফাঁকি না কমিয়ে গরিবের ওপর চাপ দেয়া ঠিক হচ্ছে না। কর ব্যবস্থায় সুশাসন আনতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত দরকার।

মূল্যস্ফীতির বিষয়ে এ গবেষক বলেন, ২০২২ সালের জুনে থাইল্যান্ডের মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এটি চলতি বছরের এপ্রিলে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৭ শতাংশে। অর্থাৎ এই সময়ের মধ্যে থাইল্যান্ড ৬৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি কমাতে সক্ষম হয়েছে। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ২০২৩ সালের এপ্রিলে ৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা এর আগের বছরের জুনে ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ। এদিকে যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি ২০২৩ সালের এপ্রিলে ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে যার পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৬ শতাংশে। অর্থাৎ আলোচিত এই সময়ের মধ্যে দেশটির মূল্যস্ফীতি কমেছে ৩৪ শতাংশ। সাদিক আহমেদ বলেন, আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে দেশে আমদানির পরিমাণ কিছুটা কমানো হয়েছে। এতে ডলারের ওপর চাপ কমেছিল। কারেন্ট একাউন্ট ব্যালেন্সের কিছুটা উন্নতি হলেও ক্যাপিটাল একাউন্ট বাড়ানো সম্ভব হয়নি। কারণ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়েনি। তাই আমদানি নিয়ন্ত্রণ কোন স্থায়ী সমাধান নয়।

এমসিসিআই পরিচালক আদিব এইচ খান বলেন, স্বাধীনতার পরে ১৯৭৬ সাল থেকে অব্যাহতি পাওয়া বিদেশি ঋণের সুদের ওপর কর যোগ হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এটা পাস হলে বিদেশি ঋণ পরিশোধের সময়ে সুদের বিপরীতে কর দিতে হবে ব্যবসায়ীদের। এতে করে বিদেশি ঋণদাতারা সুদের ওপর যে কর ধার্য হবে, তা দেবেন না। সুদ কর ব্যবসায়ীদের খরচ বাড়িয়ে দেবে। এ সুদহার কত হবে, সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, ২০-৩০ শতাংশ হতে পারে। সরকার এখনো তা পরিষ্কার করেনি। নন-রেসিডেন্সিয়ালদের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে যে হারে কর দেয়ার বিধান, তা এখানেও প্রযোজ্য হতে পারে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সরকার যদি ভ্যাট কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে তাহলে এ খাতে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। আমি সরকারকে বলব সঠিকভাবে এ কাজটি করতে। কারণ ভ্যাট একটি ভালো ট্যাক্স। পরীক্ষামূলকভাবে ৭ জেলায় ট্যাক্স কালেক্টর দিয়ে রাজস্ব আহরণ করা যায়। এটা ভালো ফল দিলে স্থায়ী হতে পারে। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সরবরাহ স্বাভাবিক করতে হবে। বাজারকে স্থিতিশীল রাখতে হবে। ২ হাজার টাকা করের পদ্ধতি মানুষকে করের সঙ্গে সম্পৃক্ত করবে, অভ্যাস তৈরি করবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের অর্থনীতি টিকিয়ে রেখেছে কৃষি, শিল্প ও রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। তাই বাজেটে সরকার কৃষি খাতে ভর্তুকি দেবে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই সরকার ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসবে। ভর্তুকি থেকে বের হয়ে আসতে পারাটা অনেক ভালো একটি ব্যাপার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App