×

অর্থনীতি

শেয়ার বাজার প্রশ্নে মন্ত্রী-আমলারা বিব্রত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৩, ০৫:৫১ পিএম

শেয়ার বাজার প্রশ্নে মন্ত্রী-আমলারা বিব্রত

শুক্রবার বিকেল তিনটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটউত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ছবি: ভোরের কাগজ

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজার নিয়ে কোনো কিছু বলা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে প্রশ্ন করা হয়। কিন্তু তিনি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। পরে কে এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন সেটিও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে অর্থ সচিবকে উত্তর দিতে বললে তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে উত্তর দিতে বলা হয়। পরে এ বিষয়ে কথা বলেন গভর্নর।

শুক্রবার (২ জুন) বিকেল তিনটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়ে‌ছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রশ্নোত্তরে এমন বিব্রত হন মন্ত্রী ও আমলারা।

সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রশ্নটি কে নেবেন? অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মহোদয় আসেন। যদি বলতে চান বলতে পারেন তিনি।

এসময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফা‌তেমা ইয়াস‌মিন বলেন, শেয়ার বাজারের বিষয়ে আমাদের বাজেটে উল্লেখযোগ্য কোনো বিষয় উপস্থাপনায় রাখা হয়নি। এ বিষয়ে কী কী কার্যক্রম নেয়া হয়েছে, এ বিষয়ে এখন আমরা গভর্নর স্যারের কাছ থেকে জানতে পারি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর স্যার আমাদের সঙ্গে আছে। প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটি এক্সেস কমিশনারের ভেতরে শেয়ার বাজার নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। আমরা সিকিউরিটি এক্সেস কমিশনারের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে যে সমস্ত সমস্যা পলিসি ছিল, গত এক বছরের তিন থেকে চারটি সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেটে দুইটি অংশ, একটা ইকুইট মার্কেট আরেকটা বন্ড মার্কেট। বন্ড মার্কেট কীভাবে ডেভেলপ করা যায় সেটি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক থেকে যে সমস্ত সাপোর্ট দেয়া দরকার আমরা সেগুলো দিচ্ছি।

অর্থমন্ত্রীর স‌ঙ্গে উপস্থিত আছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী (এলজিআরডি) মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বা‌ণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন‌শি, ‌শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব ফা‌তেমা ইয়াস‌মিন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুন) ‘উন্নয়নের অভিযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে’ শিরোনামে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বিকেল তিনটায় তিনি ডিজিটাল উপস্থাপনার মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। তারপর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাজেটে সম্মতি জানিয়ে সই করেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা যা মোট জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ঠিক করা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ।

বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। করবহির্ভূত ও অন্যান্য আয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২০ হাজার কোটি টাকা। কর ছাড়া প্রাপ্তি ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান থেকে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ নেয়া হবে এক লাখ দুই হাজার ৪৯০ কোটি টাকা।

অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঋণ নেওয়া হবে ব্যাংক খাত থেকে। যার পরিমাণ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা। এছাড়া, সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ও অন্য খাত থেকে ৫ হাজার ১ কোটি টাকা নেয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।

এবারের বাজেট আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম আর বাংলাদেশের ৫২তম বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট আগামী ২৬ জুন অনুমোদন করা হবে। তার আগে বাজেট নিয়ে সংসদে ৪০ ঘণ্টা আলোচনা হবে। ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছর শুরু হবে। নতুন অর্থবছর চলবে নতুন বাজেটের বরাদ্দ ও পরিকল্পনা অনুযায়ী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App