×

অর্থনীতি

বাজেট রপ্তানিবান্ধব নয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৩, ০৯:৫০ পিএম

বাজেট রপ্তানিবান্ধব নয়

ছবি: সংগৃহীত

প্রস্তাবিত বাজেট তৈরি পোশাক খাতের জন্য রপ্তানিবান্ধব হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।

শুক্রবার (২ জুন) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিজিএমইএর সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। ফারুক হাসান বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় আমরা রপ্তানিমূখী বস্ত্র ও তৈরি পোশাকখাতের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো দিক নির্দেশনা খুঁজে পাইনি। বিশেষকরে আমরা উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব না করে ২০২১-২২ অর্থবছরের যেটি ছিল, অর্থাৎ শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করার জন্য প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু, তা করা হয়নি।’

বর্তমান উৎপাদন কার্যক্রমে সংকট ও রপ্তানি খাতে প্রণোদনার বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘এমনিতেই কোভিডের কারনে আমাদের শিল্পে যে ক্ষতি হয়ে গেছে সেটি পুষিয়ে নিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তার ওপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে বিশ্বেব্যাপী মন্দা চলছে। খুচরা বিক্রয় চাহিদা কমে এসেছে। অপরদিকে, জ্বালানি তেলসহ সব কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধির ফলে আমাদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের রপ্তানি আয় কমতে শুরু করেছে। তবে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত আমাদের যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল সেটিও এই উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির ফলে ইউনিট ভ্যালু বেড়ে যাওয়ায় কারণে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাজেট বক্তব্যে অনান্য বছরের মত রপ্তানিখাতগুলোর জন্য প্রণোদনা বাবদ অর্থ বরাদ্দের কোন ঘোষণা আসেনি। তবে আমি মনে করি বাজেট প্রস্তাবনায় বিষয়গুলো উল্লেখ না থাকলেও বিস্তারিত কাঠামোতে এগুলো সন্নিবেশিত আছে। কারণ এই মুহূর্তে আমাদের রপ্তানি খাতগুলোকে সুরক্ষা দেয়ার কোন বিকল্প নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা একটি বৈশ্বিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই অবস্থায় কিভাবে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে পারি, সেটি হবে আমাদের কৌশল।’

সংবাদ সম্মেলনে ফারুক হাসান দাবি তুলে বলেন, ‘চলমান সংকটময় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎসে কর ২০২১-২২ অর্থবছরের ন্যায় শূণ্য দশমিক ৫০ শতাংশ ধার্য করে আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর করার জন্য পুনরায় সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষন করছি। একইসঙ্গে নগদ সহায়তার উপর আরোপকৃত ১০ শতাংশ কর প্রতাহারের অনুরোধ জানাই।’

নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্থাপনের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘দেশে জ্বালানি সংকট নিরসনের জন্য সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানি শিল্পখাতে ব্যবহারের জন্য উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করলেও সোলার পিভি সিস্টেম শিল্প প্রতিষ্ঠানে স্থাপনের ক্ষেত্রে উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করার কারণে উদ্যোক্তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আবার বিদেশী ক্রেতারা শিল্প কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্সের আওতাভূক্ত হওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছেন। শিল্প কারখানায় সোলার প্যানেল সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব শিল্প কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ১০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের ভিশন নিয়েছেন। পরিবেশবান্ধব শিল্প স্থাপন ও জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য সোলার পিভি সিস্টেমের সবগুলো সরঞ্জাম আমদানিতে ১ শতাংশ হারে শূল্ক রেয়াতি প্রদানের জন্য পুনরায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।’

বিজিএমইএর দাবিগুলো পুনরায় বিবেচনায় নেয়ার প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, ‘আমরা মনেকরি শিল্পের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সরকারের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে এবং যৌক্তিক ক্ষেত্রে তা আরো বাড়বে। বাজেট কেবল পেশ করা হয়েছে। এখনও সরকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের সাথে আলাপ আলোচনা করে অর্থনীতির প্রয়োজনে বাজেটে আরও কিছু পরিবর্তন করতে পারেন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App