×

অর্থনীতি

নিম্ন আয়ের মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৩, ০৯:৩৫ পিএম

নিম্ন আয়ের মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হবে

প্রতীকী ছবি

২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে গরীবমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর বেশি নজর দেয়া উচিত। বিশেষ করে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষদের সহায়তার পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা উচিত। প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ ১ লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকা, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা ছিল। এই খাতে ১২ হজার ৬৯৬ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। তবে, মেট্রপলিট্যান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই) মনে করছে, এই খাতে বরাদ্দ যৌক্তিকভাবে বাড়ানো প্রয়োজন।

এছাড়া, আমদানিকৃত পণ্যসামগ্রীর সম্পূরক শুল্কের হার বৃদ্ধি জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে চেম্বার আশঙ্কা করছে। উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য পেশকৃত বাজেটের ওপর এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এমসিসিআই। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিক্রিয়া জানায় সংগঠনটি।

এমসিসিআই জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে রপ্তানি বাজার সংকুচিত হওয়া; রাশিয়া-ইউক্রেন চলমান যুদ্ধ; স্মার্ট বাংলাদেশের রূপরেখা বাস্তবায়ন ও ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতকরণের সময় বাজেট প্রস্তুত করা অর্থমন্ত্রীর জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। ধারণা করা যাচ্ছে যে, ‘আয়কর আইন, ২০২৩’ অতিসত্বর বাজেট অধিবেশনে উত্থাপিত হতে যাচ্ছে। তবে সংসদে উত্থাপনের আগে অংশীজনদের সঙ্গে বিশেষ করে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে চূড়ান্ত মতামত দেয়ার জন্য শেয়ার করা আবশ্যক বলে চেম্বার মনে করে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাজেটকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেট ব্যবস্থাপনার গতিশীলতা, কর নীতি সংস্কার, কর ব্যবস্থার অটোমেশন, কর সংগ্রহে সামগ্রিক সিস্টেম লস কমানো এবং কর প্রশাসনের সমতা বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। এমসিসিআই সবসময় কর প্রশাসনে অর্থবহ কাঠামোগত পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে আসছে, যেন কর প্রশাসন যথাযথভাবে রাজস্ব সংগ্রহ করতে সম হয়। বিদ্যমান কাঠামোতে উচ্চ আয়ের অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠানও করের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) প্রদত্ত কর ব্যবস্থার সংস্কারের শর্তাবলীর কারণে চূড়ান্ত বাজেট ঘাটতি বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং এমসিসিআই সরকারি প্রকল্পের অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যয় সীমিত করার জন্য যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছে।

এমসিসিআই জানিয়েছে, ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি অর্থনীতিতে একটি বিরূপ প্রভাব তৈরি করতে পারে, যার ফলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য তহবিলের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে বলে এমসিসিআই মনে করে। এমসিসিআই বিশ্বাস করে যে, অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো, ইউটিলিটির সুষম বণ্টনব্যবস্থা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য এখনো প্রধান অন্তরায় হিসেবেই থাকছে। এছাড়া, দুর্বল রাজস্ব আদায় ব্যবস্থা (বর্তমান অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ মধ্যে ৬০ দশমিক ৯৫ শতাংশ সংগৃহীত) ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন (বর্তমান অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস্তবায়িত) অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ আমদানি প্রবণতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিপর্যয় বিবেচনা করে আমাদেরকে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও সারের দামে উচ্চ ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, অন্যথায় ভর্তুকি ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে আরো বৃদ্ধি পাবে বলে এমসিসিআই মনে করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App