×

সম্পাদকীয়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে এখনই সতর্ক হতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৩, ০২:০৩ এএম

ডেঙ্গুর দাপটে রাজধানীবাসী আতঙ্কের মধ্যে জীবনযাপন করছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৬ গুণ বেড়েছে মশাবাহিত এ রোগ। জানা গেছে, গত এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৯৪১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছরের গত ৫ মাসে ১ হাজার ৯২৭ জন ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন। আর এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১৩ জন। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যু। এখনই মশক নিধনে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া না হলে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। বর্ষা মৌসুম এখনো শুরু হয়নি। বর্ষা মৌসুমে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সবাইকে সতর্ক এবং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্ষা আসার আগেই থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে, ওয়াসার মিটারের গর্তে জমে থাকা পরিষ্কার পানি, ফুলের টবে জমে থাকা পানি, ফ্রিজের নিচে জমে থাকা পানিতে ডেঙ্গুজ্বরের বাহক এডিস মশার প্রজনন ও বংশ বিস্তার ঘটে। গত কয়েক বছরের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এ বছর এ সময় পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের কয়েকগুণ বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে হাসপাতালে এ বছর জানুয়ারিতে ৫৬৬, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬, মার্চে ১১১, এপ্রিলে ১৪৩ এবং মে মাসের ২০ দিনে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন ৪৬১ জন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে ডেঙ্গু রোগে তখন ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা বলছেন, যথাযথ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া অনুসরণ ও জনসচেতনতা সৃষ্টি হলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এখনো ডেঙ্গুজ্বরের কোনো প্রতিষেধক বের করতে পারেনি সরকার। ডেঙ্গু থেকে রেহাই পেতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আইইডিসিআরের তথ্য মতে, সাধারণত জুন-জুলাই থেকে শুরু করে অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বিস্তার থাকে। সাধারণত মশক নিধন কার্যক্রমের স্থবিরতা, গাইডলাইনের অভাব এবং মানুষের অসচেতনতাই ডেঙ্গুর প্রকোপের জন্য দায়ী। হঠাৎ থেমে থেমে স্বল্পমেয়াদি বৃষ্টিতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা খুব বেশি মাত্রায় প্রজনন সক্ষমতা পায়। ফলে এডিস মশার বিস্তারও ঘটে বেশি। এ মশা যত বেশি হবে ডেঙ্গুর হারও তত বাড়বে। উৎস বন্ধ না করতে পারলে ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকেই যাবে। ডেঙ্গুর প্রকোপ চলাকালে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। এরপর দুই সিটি মশক নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সেগুলো ছিল কিউলেক্স মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে দুই সিটির তেমন কোনো উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত এক জরিপে উত্তর সিটির ৬৩টি এবং দক্ষিণ সিটির ৯৬টি বাড়িতে এডিস মশা অতিরিক্ত মাত্রায় চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ২২টি ওয়ার্ডে বিভিন্ন মাত্রার ঝুঁকি চিহ্নিত করা হয়। প্রথমত, ঝুঁকি চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলোতে মশা নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বিশেষ করে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এডিস নিধন এবং এডিসের বংশবিস্তার রোধে জোরদার অভিযান পরিচালনা করবে- এ প্রত্যাশা রাজধানীবাসীর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App