×

জাতীয়

সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ০৮:৪৩ এএম

বাজেট পেশ বৃহস্পতিবার

একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশন শুরু হচ্ছে আজ বুধবার। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আজ বিকাল ৫টায় এ অধিবেশন শুরু হবে। এর আগে বিকাল ৪টায় কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠক বসবে। সেখানে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাজেট অধিবেশনের দিনক্ষণসহ নানান কার্যবিবরণী ঠিক করা হবে। এই অধিবেশনে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন এবং পাস করা হবে। বৃহস্পতিবার অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে টানা তৃতীয় দফায় ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট প্রস্তাব পেশ করবেন তিনি। প্রতি বছর ৩০ জুন বাজেট পাসের রীতি থাকলেও এবারে ঈদুল আজহার কারণে আগামী ২৫ জুন সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ জিডিপি প্রবৃদ্ধির গতি বজায় রাখার লক্ষ্যে সম্ভাব্য বাজেটের আকার হবে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা- যা হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বাজেট। সরকার এই সময় আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির হার অর্জনের লক্ষ্যে রয়েছে, যেখানে প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। আগামী বছরে মোট বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হবে জিডিপির ৩৩ দশমিক ৮ শতাংশ।

বাজেট পাসের পরে আগামী ১ জুলাই থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট কার্যকর হবে। এটি হবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত আওয়ামী লীগ সরকারের পঞ্চম ও শেষ বাজেট। বাজেট অধিবেশন উপলক্ষে এবারো এমপি, মন্ত্রী, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কোভিড টেস্ট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোভিড নেগেটিভ হওয়ার শর্তে বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়া যাবে।

এদিকে এবারের বাজেটে বেশ কিছু পরিবর্তন আসবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। কিছু ক্ষেত্রে করছাড় থাকবে না এবং কিছু ক্ষেত্রে কমবে। বাজেটে এবার টিআইএনধারীরা বিশেষ কারণ দেখিয়ে তাদের টিন প্রত্যাহারের সুযোগ পাবেন। বরাবরের মতো কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে এবারের বাজেটেও। নতুন করদাতা যুক্ত করা বা করের জাল বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ থাকবে বাজেটে। ভ্যাটের হার ও আওতা বাড়ানো হবে। ফলে মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা মানুষের একটি বড় অংশ নতুন করে আরো চাপে পড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন।

নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী যেমন- প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্র, টয়লেট টিস্যু, কলম, মোবাইল ফোন, গাড়ি ও গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানির ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। নিম্নআয়ের মানুষের কাছ থেকে আয়কর আদায় করতে ন্যূনতম করের প্রস্তাব থাকছে।

এছাড়া ডলার সাশ্রয়ে এবং শুল্ক ফাঁকি রোধে কাজুবাদাম, খেজুরসহ বেশ কিছু ফল বা খাদ্যসামগ্রী, বিলাস সামগ্রীসহ বিদেশি জিনিসপত্রের আমদানি শুল্ক বাড়ানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে আগামী বাজেট জীবনযাত্রার খরচ বাড়াবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও বাজেটে কৃষি উপকরণে কিছটা ছাড় থাকছে।

এবারের বাজেটে সুদহার কম থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি বিনিয়োগে বড় কোনো খবর নেই। এতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ অব্যাহত থাকবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি থমকে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোর লক্ষ্যে আগামী বাজেটে কৃষি, খাদ্য ও বিদ্যুতে ভর্তুকির জন্য বরাদ্দ যথেষ্ট বাড়ানো হবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ভর্তুকি বরাদ্দ হবে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি অর্থবছরের বাজেটে তা ছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা।

সব মিলিয়ে এবারের বাজেটে আইএমএফের প্রেসক্রিপশনের একটা ছাপ দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App