×

শিক্ষা

ঢাবিতে গবেষণায় স্বচ্ছতা আনতে প্লেজারিজম নীতিমালা চূড়ান্ত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৩, ০৬:২৫ পিএম

গবেষণায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ‘চৌর্যবৃত্তি’ (কুম্ভীলকবৃত্তি) নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। নীতিমালায় গবেষণায় নকল বা সামঞ্জস্যের মাত্রা অনুযায়ী সংশোধনের সুযোগ দেওয়া সাপেক্ষে জরিমানা, ডিগ্রি বাতিল ও পদাবনতি, এমনকি সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুতির বিধান রাখা হয়েছে।

এছাড়া, পিএইচডি গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে প্লেজারিজমের (তথ্য চুরি) অভিযোগ তদন্ত কমিটি গঠন ও একই সঙ্গে বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করা ব্যবসায় শিক্ষা প্রশাসনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক ক্ষণিকা গোপের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের (সিন্ডিকেট) এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় জনসংযোগ দফতর থেকে বিষয়টি জানানো হয়।

নীতিমালায় গবেষণায় ২০ শতাংশ পর্যন্ত সামঞ্জস্যকে ‘গ্রহণযোগ্য’ (লেভেল-০) বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একক উৎস থেকে সর্বোচ্চ ২ শতাংশের বেশি তথ্য ব্যবহার করা যাবে না। এর বেশি মাত্রার সামঞ্জস্যের জন্য জরিমানা, পদাবনতি, ডিগ্রি বাতিল থেকে চাকরিচ্যুতি পর্যন্ত শাস্তির মুখে পড়তে হবে দায়ী ব্যক্তিদের।

নীতিমালায় অন্য মাত্রাগুলো হলো নিম্ন (লেভেল-১), মধ্য (লেভেল-২), উচ্চ (লেভেল-৩) ও পুনরাবৃত্তি (লেভেল-৪)। গবেষণায় ২০-৪০ শতাংশ পর্যন্ত সামঞ্জস্য নিম্ন, ৪০-৬০ শতাংশ মধ্য এবং ৬০ শতাংশের বেশি সামঞ্জস্য উচ্চমাত্রার সামঞ্জস্য হিসেবে গণ্য হবে।

ঢাবি দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রেবেকা সুলতানার লেখা ‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চর্চা’ শীর্ষক প্রবন্ধে ৫৩ শতাংশ নকলের প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। প্রবন্ধটি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল করিম স্টাডি সেন্টারের জার্নাল অব সোশিওলজির (সমাজবিজ্ঞান পত্রিকা) একাদশতম ভলিউমের দ্বিতীয় সংখ্যায় (২০২০ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে প্রকাশিত) লিখেছিলেন।

নীতিমালা ও দুজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্থা বিষয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, গবেষণা ও প্রকাশনায় স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্লেজিয়ারিজম নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ নীতিমালায় গবেষণা নকলের মাত্রা অনুযায়ী সংশোধন করা সাপেক্ষে জরিমানা, ডিগ্রি বাতিল ও পদাবনতি, এমনকি সর্বোচ্চ শাস্তি, চাকরিচ্যুতিসহ বিভিন্ন শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আইবিএর একজন শিক্ষক বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করার অভিযোগে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এটা নিয়ে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি বিষয়টি সত্যতা পেয়েছে। অধিক তদন্তের জন্য উপ-উপাচার্যকে (শিক্ষা) প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ‘দ্য রুলস ফর দ্য প্রিভেনশন অব প্লেজারিজম’ শীর্ষক নীতিমালাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের (একাডেমিক কাউন্সিল) সভায় নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর সেটি ডিনস কমিটির মিটিংয়ে উত্থাপন করার পর সিন্ডিকেট সভায় চূড়ান্ত করা হয়। বলা হচ্ছে ২০২০ সালের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির এক সুপারিশের আলোকে এই নীতিমালা করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App