×

জাতীয়

হত্যার জন্য প্রেমিকাই ঘটনাস্থলে ডাকে অতিককে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৭:৪২ পিএম

হত্যার জন্য প্রেমিকাই ঘটনাস্থলে ডাকে অতিককে

ছবি: ভোরের কাগজ

হত্যার জন্য প্রেমিকাই ঘটনাস্থলে ডাকে অতিককে

কেরাণীগঞ্জ উপজেলার কোন্ডা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তৎকালীন আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে নির্বাচনের প্রার্থিতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ নিয়ে গুলজারের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে ওই ব্যক্তি বেশকয়েকবার ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে হুমকিও দিয়ে আসছিলেন। তবে আতিক উল্লাহ চৌধুরী তার কথায় কোন কর্ণপাত না করায় গুলজার ও তাজুল ইসলাম তানু মিলে আতিক তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ভুক্তভোগীর সব বিষয়ে অবগত থাকতে সম্পা নামের এক নারীকেও তারা ব্যবহার করেন। ওই নারী প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীকে কোন্ডা হাসপালের গেটে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। পরে সেখানেই তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।

আতিকুল্লাহ চৌধুরীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দেয়ার মূল পরিকল্পনাকারী পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী তাজুল ইসলাম তানুকে (৩৫) গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। রবিবার (২৮ মে) বিকালে র‌্যাব-১০ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সিও মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, গত ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বিকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরী তার ইউনিয়ন পরিষদের কাজের জন্য দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ থানাধীন হাসনাবাদ এলাকায় যাওয়ার জন্য নিজ বাসা থেকে বের হয়। তবে ওইদিন রাতে তিনি বাসায় ফিরলে পরিবারের লোকজন তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তা বন্ধ পায়। পরেরদিন ভুক্তভোগীর ছেলে দক্ষিন কেরাণীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। তখনই তার ছেলে সংবাদ পায় কোন্ডা ১০ম শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের দেয়ালের পাশে আগুনে পোড়া বিকৃত অবস্থায় একটি লাশ পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে পুলিশের সহায়তায় মরদেহ উলট পালট করে লাশের সঙ্গে থাকা একটি এটিএম কার্ড ও ইউনিয়ন পরিষদের কাগজপত্র দেখে ছেলে নিশ্চিত হয় লাশটি তার বাবার আতিক উল্লাহ চৌধুরীর। পরবর্তীতে ভুক্তভোগীর ছেলে ১২ ডিসেম্বর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে দক্ষিন কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করে।

তিনি আরো বলেন, মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ গুলজার ও তানুসহ ৮জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র জমা দেয়। আদালতেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় গত ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর তাজুল ইসলাম তানু, গুলজার, জাহাঙ্গীর ওরফে জাহাঙ্গীর খাঁ, আহসানুল কবির ইমন, রফিকুল ইসলাম আমিন ওরফে টুন্ডা আমিন, শিহাব আহমেদ শিবু ও মো. আসিফকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তবে পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা ইস্যু করে। তবে এর মধ্যেই অন্যান্য আসামীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হলেও মামলার মূল পরিকল্পনাকারী তাজুল ইসলাম তানু আত্মগোপনে ছিল। তবে র‌্যাব ছায়া তদন্তের ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তার অবস্থান জানতে পেরে গত শনিবার রাজধানী ঢাকার বংশাল এলাকায় অভিযান চালায়। ওই অভিযানেই তাকে গ্রেপ্তারে সমর্থ হই আমরা।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ফরিদ উদ্দিন বলেন, তাজুল ইসলাম তানুর পরিকল্পনা অনুযায়ী গুলজার আতিক উল্লাহ চৌধুরীর গতিবিধি লক্ষ্য রাখার জন্য সম্পা নামক এক নারীকে নিয়োগ করে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সম্পা তার প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ২০১৩ সালের ১১ ডিসেম্বর রাতে আতিক উল্লাহ চৌধুরীকে তার সঙ্গে দেখা করা জন্য কোন্ডা হাসপালের গেটে আসার জন্য বলে। ভুক্তভোগী রিক্সাযোগে হাসপাতালে গেটে আসা মাত্র আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা গুলজার ও তানু রিক্সা থেকে নামিয়ে কৌশলে হাসপাতালে দক্ষিন সীমানা বরাবর রাস্তায় নিয়ে গিয়ে ভাড়াটে খুনিদের সহায়তায় নির্মমভাবে হত্যা করে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App