×

জাতীয়

নগর দরিদ্রদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের দাবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৩, ০৮:০৩ পিএম

নগর দরিদ্রদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের দাবি

ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যথাযথ বাস্তবায়নে নগর দরিদ্রদের সঠিক তালিকা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেন, বর্তমানে ওয়ার্ড ও গ্রাম মহল্লার দরিদ্র, বিধবা ও প্রতিবন্ধিদের তালিকা নেই। প্রকৃত তালিকা না থাকায় অনেকেই রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই তালিকা করার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি, সিভিল সোসাইটি, স্থানীয় বস্তিবাসী ও শ্রমিকদের প্রতিনিধি রাখতে হবে। জাতীয় বাজেট দরিদ্রের মানুষের উন্নয়নে জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখার আ্হ্বান জানিয়েছেন তারা।

ররিবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেস কাবে ‘নগর দরিদ্র বিমোচন: সামাজিক সুরা খাতে বাজেট বরাদ্দ ও বৃদ্ধি’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এসব কথা বলেন তারা। কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর (কাপ) ও কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড আয়োজিত সংলাপ সঞ্চালনা করেন কাপের নির্বাহী পরিচালক খোন্দকার রেবেকা সান ইয়াত। আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক অধ্যাপক এমএম আকাশ, সিপিআরডি প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা, কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড কান্ট্রি ডিরেক্টর মানিশ কুমার আগরওয়াল, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন, গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার মুস্তফা, এসএ টিভির বিজনেস এডিটর সালাউদ্দিন বাবলু, সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শামসুন নাহার, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক ফাতেমা জোহুরা, বস্তিবাসী অধিকার সুরা কমিটির সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজা, বস্তিবাসী ময়না আক্তার প্রমুখ। সংলাপে ধারণাপত্র উত্থাপন করেন উন্নয়নধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল।

সংলাপে অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, আমাদের প্রথম দাবি হওয়া উচিত- নাগরিক স্বাীকৃতি। এরপর দরিদ্রের তালিকা করা। সরকার জাতীয় বাজেটে বৈষম্যহীন ভাবে বাস্তববায়ন করা দরকার। দেশের ১০ শতাংশ ধনীর কাছে ৪০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের ভাগ্য বন্দ্বি। কারণ এই ৪০ শতাংশ মানুষের বাজেটের বরাদ্দ অর্ধেক নিয়ে যায় ধনীক শ্রেণী। বাকি অর্ধেক দিয়ে দরিদ্রের ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভব হয় না। তাই লুটপাট বন্ধে রাজনৈতিক সদিচ্ছা সবার আগে দরকার। বাজেট প্রণয়নে দারিদ্র মানুষের স্বার্থ বিবেচনায় নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গবেষক মো. শামসুদ্দোহা বলেন, শহর ও গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রাষ্ট্রের সেবাখাতসহ অনন্য খাতে চাকরির জন্য মানুষ শহরমুখী হচ্ছে। গ্রামের মানুষ শহরের এসে সর্বপ্রথম আয় বৈষম্য স্বীকার হচ্ছে। অথচ এই দরিদ্র মানুষগুলো কাজ করে ঢাকা সিটির অর্থনীতি চালু রেখেছে। কিন্তু সরকার তাদের মূল্যায়ন করছে না। তাদের মূল্যায়নের রাষ্ট্রের সুযোগ সুবিধা যারা বেশি ভোগ করছে, তাদের ওপর ট্যাক্স আরোপ করতে হবে। আদায়কৃত অর্থ অর্থনীতি চালু রাখার কারিগর দরিদ্রদের মাঝে বণ্টন করতে হবে।

কনসার্ন ওয়াল্ডওয়াইড কর্মকর্তা মানিশ কুমার আগওয়াল বলেন, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে আছি। যারা যত বেশি দরিদ্র তারা ততো বেশি ঝুঁকিতে আছে। তাই সকলে মিলে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করতে হবে। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। আগামী জাতীয় বাজেটেও তার প্রতিফলন থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সংলাপে বক্তারা বলেন, বাজেট বড় হলে দরিদ্র লোক বাড়বে। তাই বড় বাজেট থামাতে হবে। কারণ বাজেটে টাকা ধনীর শ্রেণির মানুষের পকেট চলে যায়। লুটপাট ও দুর্নীতি না কমালে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে। দুনীতি-লুটপাট বন্ধে আরো বেশি কঠোর পদপে নিতে হবে। টিসিবি পণ্য বণ্টনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার বাড়ানোর দাবি জানান তারা।

সংলাপে উত্থাপিত নয়দফা দাবি তুলে ধরে বলা হয়, নগরের দারিদ্র বিমোচনে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পরিধি ও বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে এবং নগরের ওয়ার্ড ও অঞ্চলভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন করতে হবে। নগর দারিদ্রের ওপর পৃথক গবেষণা করতে হবে। ওই গবেষণার ফলাফল ও প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সামাজিক সুরক্ষার কর্মসূচি প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে নগর নীতিমালা অনুমোদন ও সেই নীতিমালা অনুযায়ী নগর দরিদ্রদের জন্য কৌশল ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি উল্লেখ করে দাবিনামায় আরো বলা হয়, অতিদারিদ্র্য ও দারিদ্র্যের হার কমাতে প্রয়োজনে নগর দরিদ্র্যদের জন্য পৃথক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। বিশেষ করে নগরের অতিদরিদ্র কিশোরী, কিশোর ও নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দতা বৃদ্ধিমূলক কর্মসূচি অর্ন্তভুক্তি করতে হবে। সামাজিক সুরা কর্মসূচির আওতায় নগর দরিদ্রদের জন্য বিধবা ভাতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারকে নগর দরিদ্রদের জন্য সামাজিক সুরা খাতে প্রয়োজন অনুসারে খাত ও বরাদ্দ বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে। নগর অতিদরিদ্রদের জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বোপরি নগর দারিদ্র্য কমতে স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App