×

সারাদেশ

বিএনপি-আ.লীগের আজকের সমাবেশ নিয়ে উত্তপ্ত যশোর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১১:১৮ এএম

বিএনপি-আ.লীগের আজকের সমাবেশ নিয়ে উত্তপ্ত যশোর

ছবি: সংগৃহীত

যশোরে আজ শনিবার সমাবেশ করবে বিএনপি। এ সমাবেশ ঘিরে কয়েকদিন ধরে প্রতিহতের হুমকি দিচ্ছে যশোর জেলা আওয়ামী লীগ। তবে হুমকি আমলে নিচ্ছে না বিএনপি। হুমকি-ধামকি ও বাধা উপেক্ষা করেই সমাবেশ সফল করবেন বলে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন। এ সমাবেশে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তিনি অসুস্থ থাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে প্রেস ক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত এ সব কথা বলেন। একই দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদও বিএনপির পাশাপাশি সমাবেশ করার ঘোষণায় যশোরের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। উভয় পক্ষের মিছিল সমাবেশে শক্তির মহড়া জানান দেয়ার চেষ্টা করবে দুই দল। এতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে বিচলিত নন পুলিশ ও বিএনপির নেতারা। তবে, দুদলের সমাবেশকে ঘিরে আতঙ্কিত ও শঙ্কায় সাধারণ মানুষ।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, গায়েবি মামলায় গ্রেপ্তার, নির্যাতনসহ সরকার পদত্যাগের ১০ দফা দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে যশোর জেলা বিএনপি। সমাবেশ সফল করতে জেলা বিএনপি ইতোমধ্যে সব উপজেলা ও ইউনিয়নে প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন করেছে। বিএনপির জনসভাকে ঘিরে যখন সব প্রস্তুতি চলছে, সেই মুহূর্তে বিএনপির সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দেয় যশোর আওয়ামী লীগ।

বিএনপি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরের ভোলাট্যাংক রোডে জনসমাবেশের জন্য গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক অনুমতি পেয়েছে বলে জানিয়েছে। দুপুর ১২টা থেকে জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মরহুম তরিকুল ইমসলামের স্ত্রী অধ্যাপক নার্গিস বেগম।

এদিকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুমতি পাওয়ার পর জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে সঙ্গে নিয়ে সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেছেন।

প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, ২৭ মে যশোরে বিএনপির সমাবেশ করার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে পুলিশ নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তারে নেমেছে। এই গণগ্রেপ্তারের মধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় প্রথমে আমরা শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগা ও টাউন হল ময়দানে অনুমতি চেয়েছিলাম। কিন্তু ঈদগার ঈদের প্যান্ডেল থাকাতে অনুমতি দেয়নি। আর টাউন হল ময়দানে আমারা সমাবেশের অনুমতি চাইলে আমাদের না দিয়ে সরকার দলীয় শ্রমিক সংগঠনটিকে অনুমতি দেয়। তবে শহরের ভোলা ট্যাংক রোডে তাদের সমাবেশ করার মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়েছে।

সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের হুমকি উপেক্ষা করেই এই সমাবেশ সফল করা হবে। আমাদের যে দাবি সেই দাবি জনগণের দাবি। সেই দাবি আদায়ে আমরা আমাদের নৈতিক অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াবো না। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তারা পাহারা দেবে। সে ক্ষেত্রে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান আমাকে সভা সমাবেশ করার অধিকার দিয়েছে। সেই সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছেন; কিংবা সংবিধান সমন্বিত রাখবার জন্য যে সব সরকারি কর্মকর্তা যশোরে দায়িত্ব পালন করছেন তারা নিশ্চয়ই এটা বিবেচনা করবেন। দায়িত্বটা তাদের। আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকারের বাইরে কিছু বলছি না। আওয়ামী লীগ সব জায়গায় সংঘাত সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করেছে। প্রশাসন দিয়ে চেষ্টা করেছে, গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে দিয়ে চেষ্টা করেছে তারা তো কোনো পথই বাকি রাখেনি। নতুন কোনো পথ খোলাও রাখেনি। আমরা সংঘাত এড়িয়েই সমাবেশ করব।

এই বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, বিএনপি ভোলা ট্যাংক রোডে সমাবেশ করবে বলে পুলিশকে অবহিত করেছে। সমাবেশ কেন্দ্র করে পুলিশ তৎপর থাকবে। যাতে কোনো সহিংসতা না হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসেন আরো বলেন, একই দিনে দুটি সমাবেশ হলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা নেই। কারণ, শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য পুলিশ দুই পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের অতিরিক্ত সতর্কতা থাকবে বলে তিনি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App