×

সারাদেশ

খোকন সেরনিয়াবাতকে জয়ী করাতে হবে যে কোনো মূল্যে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১০:৪৯ এএম

খোকন সেরনিয়াবাতকে জয়ী করাতে হবে যে কোনো মূল্যে

ছবি: ভোরের কাগজ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সদস্য ও বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির টিম প্রধান আলহাজ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ্ (এমপি) বলেছেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যে কোনো মূল্যে নৌকার প্রাথী খোকন সেরনিয়াবাতকে জয়ী করাব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী এবং যদি উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে হয়, তাহলে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার কোনো বিকল্প নাই। তাই আগামি ১২ জুন নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতকে জয়যুক্ত করাতে হবে।

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে (খোকন সেরনিয়াবাত) বিজয়ী করার লক্ষ্যে গতকাল শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে গৌরনদীতে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতির বক্তব্যদানকালে তিনি এ কথাগুলো বলেন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে গৌরনদী পৌরসভা মাঠে এ বিশেষ বর্ধিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী (অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল) জাহিদ ফারুক (এমপি), সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, সংসদ সদস্য মো. শাহেআলম, রুবিনা আক্তার মিরা, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর হোসেনসহ অন্য নেতারা।

বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি, জেলার ১০ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, ১০ উপজেলা চেয়ারম্যান, ৬ পৌর সভার মেয়র ও বরিশাল মহানগর ৩০টি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদককে বর্ধিত সভায় আমন্ত্রণ জানানো হলেও সভায় বরিশাল সিটি করপোরেশন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ অনুপুস্থিত ছিলেন। এমনকি নৌকা মার্কার মেয়র প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাতও এ সভায় অনুপস্থিত ছিলেন।

বরিশালে প্রতীক পেয়ে প্রচারণায় প্রার্থীরা : এদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পরপরই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে প্রথমে মেয়র প্রার্থীদের হাতে প্রতীক তুলে দেন রিটার্নিং অফিসার মো. হুমায়ুন কবির। প্রতীক পাওয়া প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্রপ্রার্থী কামরুল আহসান রূপণ (টেবিল ঘড়ি), আলী হোসেন (হরিণ) ও আসাদুজ্জামান (হাতি)।

রিটার্নিং অফিসার বলেন, প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন। ১২ জুন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার ছিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। এদিন ২১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। ফলে এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর পদে ৪২ জন ও কাউন্সিলর পদে ১১৬ জন প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন।

বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর সব প্রার্থী এবারের নির্বাচনে বিজয়ের প্রত্যাশা করছেন। ভোটের লড়াইয়ে জয়ী হলে বরিশালের উন্নয়নসহ নানা কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথাও বলেন প্রার্থীরা। প্রায় সব প্রার্থীর সমর্থকরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। প্রতীক পাওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থীরা খণ্ড খণ্ড প্রচারণা শুরু করেন। এছাড়া দুপুরের পর থেকেই যার যার প্রতীক নিয়ে নগরীতে শুরু হয়েছে মাইকিং।

এছাড়া গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার পর নগরীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মেয়র প্রার্থীর পোস্টার লাগাতে দেখা গেছে তাদের কর্মীদের। তারা বলেন, রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীক থাকায়, তাদের প্রতীক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। তাই তারা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, প্রতীক বরাদ্দের পর এখন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে শহরের বিভিন্ন সড়কে পোস্টার লাগানোর কাজটি শুরু করেছেন। তবে স্বতন্ত্র মেয়র এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীক গতকাল চূড়ান্ত হওয়ায়, তাদের প্রতীকসহ পোস্টার লাগাতে কিছুটা বিলম্ব হবে বলে জানিয়েছেন স্ব-স্ব প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্যরা।

এদিকে মেয়র প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পার আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের পরিচালনা কমিটি ও কর্মীরা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। অন্যদিকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর আগৈলঝাড়ার বাসভবনে বিশেষ বর্ধিত সভা শুরু হয় বিকাল ৪টায়। সেখানে সিটি নির্বাচনে নৌকার বিজয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। তবে ওই সভায় নৌকার প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত বা তার কোনো প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেননি।

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৮৯ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৩৮ হাজার ৮০৯ জন। নির্বাচনে ৩০টি ওয়ার্ডের ১২৬ ভোটকেন্দ্রে ৮৯৩টি ভোট কক্ষ থাকবে।

এদিকে আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিতব্য বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দ্বিতীয় পর্যায়ে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) তিন দিনের কারিগরি প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার সম্মেলন কক্ষে এ প্রশিক্ষণ শেষ হয়।

বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে ৫০ জন অংশ নিয়েছিলেন। প্রথম পর্যায়ে ৮৫ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল জেলা নির্বাচন কমিশন। সব মিলিয়ে ১৩৬ জন প্রশিক্ষণার্থীকে ১২ জুনের নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ইভিএম সুরক্ষায় ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App