×

জাতীয়

এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা উচিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ০৯:১৭ পিএম

এনআইডি থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা উচিত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

করের আওতা বাড়াতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) থাকলেই সবার রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার উচিত বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার দুপুরে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মুহিত ভাই অর্থমন্ত্রী থাকার সময় আমি করের আওতা বাড়ানোর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র যাদের আছে, তাদের সবাইকে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেটি হয়নি আমলাতন্ত্রের কারণে, এনআইডি যাদের আছে সবাইকে করের আওতায় আনতে পারলে সাত থেকে আট শতাংশ কর জিডিপির হার বাড়বে। বর্তমানে এক শতাংশ মানুষ করের আওতায় রয়েছে।

তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশ অথচ ট্যাক্স দেয় মাত্র সাড়ে সাত থেকে আট শতাংশ লোক। তখন আমি ভাইকে বলেছিলাম, আমেরিকায় যাদের সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড আছে তাদের ট্যাক্স দিতে হয়। যাদের সাড়ে ৩ হাজার ডলারের নিচে তাদের ট্যাক্স দিতে হয় না। আর যাদের এর ওপরে তাদের ট্যাক্স দিতে হয়। অথচ আমাদের দেশে করদাতা টিন নম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। এমনকি কোম্পানি ও কর্পোরেশনগুলো টিন নম্বর করেছে। এজন্য আমি বলেছিলাম, যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে তাদের সবাইকে ট্যাক্স দিতে হবে। এটা সম্ভব। তিনি এ বিষয়ে আমলাদের যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বলেছেন। এখন এটা আমার দাবি, কারণ আমাদের করদাতা বাড়াতে হবে। এজন্য যারই এনআইডি থাকবে তাকেই ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকারপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল মাল আবদুল মুহিত জুটির কারণে দেশ ও মানুষের মঙ্গল হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা মানুষের মঙ্গল চান। আর এই মঙ্গলকে কীভাবে অর্জন করা যায়, সেই মাধ্যম বের করতেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। একই সাথে সেটা বাস্তবায়ন করার জন্য এই জুটি সব সময় কাজ করেছেন। তার ফলে আজ আমাদের দেশের চেহারা পালটে গেছে। দেশ উন্নত হচ্ছে, আজকে ২৪ ঘণ্টার পথ ৪৫ মিনিটে যেতে পারছি। সেটা সম্ভব হয়েছে এরকম কৃতিপুরুষ ছিল বলে। আমরা তার মাগফেরাত কমনা করছি। ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ২০০১ সালে হুমায়ুন রশীদ হঠাৎ মারা গেলেন। তখন সৌদি আরবে চাকরিতে। তখন নেত্রী (শেখ হাসিনা) আমাকে ফোন করলেন। প্রস্তাব দিলেন নির্বাচনের জন্য। আমি রাজি না হয়ে বললাম আমার কাছে ভালো প্রার্থী আছে। নেত্রী জানতে চাইলে বললাম আমার বড় ভাই। তখন শেখ হাসিনা বলেন, তিনি মেজাজ গরম মানুষ। পরে আমি দায়িত্ব নিলাম। মুহিত ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে সুযোগ দিয়েছেন, যে কারণে দেশে অর্থনৈতিক চিন্তা, অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। তাই এই কৃতিত্বের জন্য সবচেয়ে প্রশংসার দাবিদার শেখ হাসিনা।

ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফজলে কবির এবং সাবেক অর্থ সচিব মাহবুব আহমেদ। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সাবেক গভর্নর ফজলে কবির বলেন, তাকে নিয়ে কথা বলার জন্য প্রস্তুতির প্রয়োজন ছিল না। যে কোন স্থান থেকে শুরু করলেই হলো, খানিক বললেই অনেক বলা যাবে। মুহিত স্যার ছিলেন একজন বড় মনের অর্থনীতিবিদ। সব কিছুকে তিনি সহজভাবে গ্রহণ করতেন।

সাবেক অর্থ সচিব মাহাবুব আহমেদ বলেন, রাত একটা দুইটা পর্যন্ত তিনি জেগে জেগে ফাইল দেখতেন, পড়াশোনা করতেন। কম ঘুমিয়ে কাজ করতে পারতেন। তার প্রচুর প্রাণশক্তি ছিল। তিনি বলতেন, বাংলাদেশ আরও ভালো করতে পারতো। কিন্তু রোহিঙ্গার কারণে করতে পারেনি। তার কথা শুনে মিয়ানমারের প্রতিনিধি নাখোশ হয়েছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App