বিএনপির ৮ নেতাকর্মী রিমান্ড শেষে কারাগারে

আগের সংবাদ

সব বিমানবন্দর থেকে কোভিড বিধিনিষেধ তুলে নিলো বেবিচক

পরের সংবাদ

হাইকোর্টের পূণাঙ্গ রায়

ইউপিতে ইউএনও মুখ্য কর্মকর্তা নয়

প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৩ , ১০:৪০ অপরাহ্ণ আপডেট: মে ২৭, ২০২৩ , ১০:৪০ অপরাহ্ণ

উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আর্থিক শৃঙ্খলাসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) সাচিবিক দায়িত্ব পালনে উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া আদেশের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। প্রকাশিত রায়ে রায়ে বলা হয়, জাতীয় সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে ইউএনওদের উপজেলা পরিষদের সব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। ইউএনওদের সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের কাছে কোনো জবাবদিহিতা না রেখেই এ সংশোধনী করা হয়। আইনের এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অসাংবিধানিক। তাই এ বিধান বাতিল যোগ্য।

১৯৯৮ সালের উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা ২০১১ সালে সংশোধনী আনা হয়। সংশোধীত আইনের ৩৩ ধারায় বলা হয়েছিল, (ক) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন ও পরিষদকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন। (খ) পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, আর্থিক-শৃঙ্খলা প্রতিপালন ও বিধিতে নির্ধারিত অন্যান্য কার্যাবলী পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সম্পাদন করবেন। এক রিটের ভিত্তিতে এই ৩৩ ধারা কেন বাতিল করা হবে না, এই মর্মে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ধারা ১৩ (ক) ১৩ (খ) ও ১৩ (গ) কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ রুল জারি করেন। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। ২০২১ সালের ১৫ জুন উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতা খর্ব করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের ক্ষমতা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। একই বিষয়ে পৃথক তিনটি রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩৩ ধারা বাতিল করে গত ২৯ মার্চ রায় দেয়। সেই রায়ের প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ কপি আজ শনিবার ভোরের কাগজের কাছে আসে। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ রায় প্রকাশ করেন।

হাইকোর্টের ২৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হবেন- আইনের এমন বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অসাংবিধানিক। এর কারণ হিসেবে পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা জাতীয় সংসদে সংশোধনীর মাধ্যমে উপজেলা পরিষদের সব প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদের কাছে দায়বদ্ধ না করে প্রশাসনকে (ইউএনওদের) দিয়েছে, যা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত পরিষদ ও সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। অতএব, উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারা (যা ২০১১ সালের আইন নং ২১ অনুযায়ী সংশোধিত) সংবিধানের ৭(২) অনুচ্ছেদ অনুসারে বাতিলযোগ্য। উপজেলা পরিষদ আইন, ১৯৯৮ সালের ২৬ ধারা লঙ্ঘন করে উপজেলা পরিষদের জায়গায় ইউএনও কর্তৃক তাদের চিঠিপত্রে উপজেলা প্রশাসন পরিভাষাটির ব্যবহার করা হয়। এতদ্বারা বৈধ কর্তৃত্ব ছাড়াই তা ঘোষণা করা হয়। তাই এর কোনো আইনি প্রভাব নেই।

উল্লেখ্য, উপজেলা পরিষদ আইনের ৩৩ ধারাকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া হাইকোর্টের রায় গত ৫ এপ্রিল স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আগামী ৫ জুন পর্যন্ত এ রায় স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

ডি- এইচএ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়