খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরসহ ১৫ জন প্রার্থীর আপিল শুনানি মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে শুনানি শেষে জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী, ৪ জন কাউন্সিলর ও দুজন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে আপিল বিভাগ মেয়র পদে ৩ জন, কাউন্সিলর পদে ৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে।

মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও আপিল বিভাগের প্রধান মো. জিল্লুর রহমান চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে বাতিল হওয়া প্রার্থিতা ফিরে পেতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন মেয়র প্রার্থী এস এম মুশফিকুর রহমান ও কাউন্সিলর প্রার্থী মো. শমশের আলী মিন্টু।

খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কেসিসি নির্বাচনে গত ১৬ মে মেয়র পদে ৭ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জনসহ মোট ১৯৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। ১৮ মে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে ৪ মেয়র প্রার্থীসহ ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন। ১৯ থেকে ২১ মে পর্যন্ত ১৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে আপিল করেন। ২২ ও ২৩ মে দুদিনে ১৫ জনের আপিলের শুনানি হয়। প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন জাকের পার্টির মেয়র প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. দেলোয়ার হোসেন মাতব্বর, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ইউসুফ আলী খান, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জাকির হোসেন, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. অহিদুল ইসলাম, সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোসা. মাসুদা খানম ও সংরক্ষিত ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাছিমা আক্তার।

মঙ্গলবার আপিল শুনানিতে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে ৫ জনের। তারা হলেন- স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী আল আমিন মো. আব্দুল্লাহ চৌধুরী, এস এম মুশফিকুর রহমান ও সৈয়দ কামরুল ইসলাম, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ হুমায়ুন কবির ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর মো. শমশের আলী মিন্টু। আগের দিন সোমবার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. জাহিদুল ইসলাম, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী জামান মোল্লা ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আমিন উল্লাহ বাহারের প্রার্থিতা বাতিল হয়।

এদিকে ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী কাজী তালাত হোসেন কাউট হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন- এমন অভিযোগ তুলে তার প্রার্থিতার বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেও পরে তা প্রত্যাহার করেছেন অপর কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফুল ইসলাম।

খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আপিল শুনানির দুদিনে মেয়র পদে এক প্রার্থীসহ ৭ জনের আপিল মঞ্জুর হয়েছে। আর ৮ জনের আপিল নামঞ্জুর করা হয়েছে। একজনের বৈধতার বিরুদ্ধে আপিল করেও আজ তা প্রত্যাহার করেছে। আপিলে যাদের মনোনয়ন নামঞ্জুর হয়েছে, তারা হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, এবারের কেসিসি নির্বাচনে মোট ভোটার ৫ লাখ ৩৫ হাজার। ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি এবং ভোটকক্ষ থাকবে ১ হাজার ৭৩২টি। আগামী ২৫ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৬ মে প্রতীক বরাদ্দ এবং ১২ জুন ভোটগ্রহণ করা হবে।