×

জাতীয়

মাসে ১৬ হাজার কোটি টাকা পাচার: এবিবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৩, ০৯:৩৮ এএম

মাসে ১৬ হাজার কোটি টাকা পাচার: এবিবি

ফাইল ছবি

* বাণিজ্যের আড়ালে কারসাজি করছে বড় শিল্পগ্রুপ

বাণিজ্যের আড়ালে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার পাচার হতো। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী দেশীয় মুদ্রায় এ অংঙ্ক ১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণের পর এটি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বড় শিল্প গ্রুপগুলো ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এ অর্থ পাচার করতো।

সোমবার ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) আয়োজিত ‘ব্যাংকিং সেক্টর আউটলুক-২০২৩’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এবিবির এমন তথ্যের সঙ্গে একমত বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একটি সূত্রে জানা গেছে, পণ্যের দাম কম-বেশি দেখিয়ে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ কারণে বিপুল এসলি আটকে দেয়া হয়েছে। প্রতি মাসে পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ দেড় বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে এটি অনেকটা কমিয়ে আনা হয়েছে। তবে পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, আমদানি পণ্যের দাম ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি দেখিয়ে অর্থপাচার করা হচ্ছে। তাই বড় অঙ্কের এলসি পরীক্ষা করে দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এবিবি জানায়, শুধু বাণিজ্যিক ব্যাংকের পক্ষে দেশের ঋণ খেলাপি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তারা মনে করে, এটা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক সময় ব্যাংকারদের কিছু করার থাকে না। যেমন শক্তিশালী কিছু বৃহৎ শিল্প গ্রুপ ঋণ নিয়ে খেলাপি হলে হাইকোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আসে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতার কারণে সেই টাকা আদায় করতে পারে না ব্যাংক। একইভাবে খেলাপির নাম প্রকাশ করাও সম্ভব হয় না। ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন না থাকাটাও এখানে বড় বাধা। তাই দেশের স্বার্থেই সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। এবিবি জানায়, অনেক বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত। তাদের দৌরাত্ম্য কমানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি সংশোধনের মাধ্যমে আমদানিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। ফলে প্রতি মাসে দেড় বিলিয়ন ডলার অবৈধ লেনদেন বন্ধ হয়েছে।

দেশের ডজন খানেক ব্যাংক একটি শিল্প গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। আরো বেশ কয়েকটি ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ ব্যবসায়ীদের হাতে রয়েছে। সেগুলো ব্যাংকিং ব্যবসাও ভালো করতে পারছে না।

একটি ব্যাংক গত বছরে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি লোকসান দিয়েছে। এসব ব্যাংকের পর্ষদের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ রয়েছে কি –না; এমন প্রশ্নের উত্তরে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী বলেন, ‘‘পর্ষদের কাছ থেকে কোনো প্রকার চাপ নেই। এটি সত্য যে আমরা তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেই। নিতে হয়, কারণ আমরা পেশদার ব্যাংকার হিসেবে পরিচালকদের কাছ থেকে পরামর্শ নেই।’’

এসময় বৈদেশিক মুদ্রার বিপুল চাপ এখনো ব্যাংকিং খাতে অনুভূত হচ্ছে জানিয়ে মিডল্যান্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান উজ-জামান বলেন, ‘‘বাজারভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা হওয়ার কারণে যুক্তারষ্ট্রের মতো দেশে ব্যাংক পতন হয়েছে। তারা পতন হতে দেয়।’’

আর ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বলেন, ‘‘বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যাচ্ছে। আমার ব্যাংকেও আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধি গত বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। এতেই বুঝা যায় সব ব্যাংকেই বৈদেশিক বাণিজ্য বাড়ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App