×

সাহিত্য

শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের ওপর জাতির আত্মপরিচয় ফুটে ওঠে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৩, ০৯:৩২ পিএম

শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের ওপর জাতির আত্মপরিচয় ফুটে ওঠে

লায়লা শারমীনের প্রদর্শনীতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী শিল্পী লায়লা শারমিন তার দীর্ঘপ্রবাস জীবনে গোল্ডেন বেঙ্গল সিরিজের চিত্রের মাধ্যমে মানসিক ও আধ্যাত্মিকভাবে জন্মভূমির সঙ্গে একাত্ববোধ করেছেন নিবিড় মমতায়। এর সঙ্গে টি এস এলিয়ট, জীবনানন্দ দাশ, কান্ট, দেরিদা, ফুকোর সাহিত্য এবং দর্শন তার কাজে অনুপ্রেরণার জল ঢালে। পাশাপাশি তার কাজের মধ্যে বাংলার নদী, বন, ধানক্ষেত, কচুরিপানা, পাখি, প্রজাপতি, মাছ, কাশফুল, শাপলা, জোনাকি এবং আকাশের বিশাল উন্মুক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়।

এ ছাড়াও প্রদর্শনীতে ইনস্টলেশন, ‘রিটার্ন টু নেচার’ও প্রদর্শিত হয়। তিনি চান শিল্পপ্রেমীরা তার শিল্পকর্মগুলো শুধু দেখবে তাই নয়, বরং তারা এগুলোর সঙ্গে নিজেদের একীভূত মনে করবে। আশাজাগানিয়া ব্যাপার হচ্ছে এই শিল্পী বন উজাড় এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং সম্পর্কেও সচেতনতা তৈরি করতে এবং প্রকৃতিতে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রদর্শিত শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে।

শনিবার (২০ মে) বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডি আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্যা ঢাকার লা গ্যালারীতে এই ব্যতিক্রমী, বর্ণাঢ্য এবং জীবনমুখি শিল্পীর ‘গোল্ডেন বেঙ্গল’ শীর্ষক দশ দিনব্যাপী ১২তম একক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপাই, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াৎ-উল-ইসলাম এবং বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের ওপর একটি জাতির আত্মপরিচয় ফুটে ওঠে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে শিল্পীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা বাংলার ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। শিল্প সংস্কৃতির অমিত সম্ভাবনার পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে লায়লা শারমিনের দ্বাদশ সলো এক্সিবিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

স্পিকার বলেন, শিল্পী লায়লা শারমিনের শিল্পকর্মের মাঝে অপূর্ব রঙের সমাহার, এর মধ্য দিয়ে তিনি প্রকৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছেন, পাশাপাশি কিছু বার্তা তিনি সমাজকে দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের যে বিরূপ প্রভাব জনজীবনে রয়েছে তা সম্পর্কে তিনি শিল্পকর্মের মাধ্যমে সকলকে সচেতন করেছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের জীবনে পড়ছে। সারা বিশ্বের পরিবেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। অনেক আলোচনা, সভা, সম্মেলন সারা বিশ্বে চলমান থাকলেও বৈশ্বিক উষ্ণতা সকলেরই বিবেচ্য বিষয়। প্রকৃতিকে সংরক্ষণে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি। নিজেদের অবস্থান থেকে বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ রোধ ও বৃক্ষরোপণ প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে হবে। শিল্পী লায়লা শারমিন তার শিল্পকর্মের মধ্য দিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করছেন। তার এই প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়ে সকলে মিলে তাকে সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

স্পিকার বলেন, সৃষ্টিশীল জাতি গঠনে শিল্প-সংস্কৃতির চর্চা জরুরি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে মানবিক সমাজ গঠন করা দরকার। উন্নয়ন অগ্রযাত্রার পাশাপাশি মানবিক সমাজ গঠনে শিল্পীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

লায়লা শারমীন ৬০টি আন্তর্জাতিক দলীয় প্রদর্শনীতে কাজ করেছেন। ২০১১ সালে তিনি কোরিয়ার সিউলের ওসিআই মিউজিয়াম অফ আর্ট-এ অনুষ্ঠিত মর্যাদাপূর্ণ ১৬তম স্পেস ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্ট দ্বিবার্ষিকীতে একটি ক্রয় পুরস্কার জিতেছিলেন। তিনি ২০১৭ এবং ২০২২ সালে ভেনিস বিয়েনালে প্রকল্পে তার চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শন করেছিলেন। প্রদর্শনীতে শিলীর ৩০টি চিত্রকর্মস্থান পায়। প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। প্রতিদিন (রবিবার বাদে) বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনীর দরজা খোলা থাকবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App