×

মুক্তচিন্তা

প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ট্র্যাজেডি

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৩, ১২:২৪ এএম

প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ট্র্যাজেডি

আত্মজৈবনিক গ্রন্থ অ্যান অডেসি : দ্য জার্নি অন মাই লাইফ-এর ‘ডিপারচার ফ্রম প্ল্যানিং কমিশন’ উপ-অধ্যায়ের ইষৎ সংক্ষিপ্ত অনুসৃতি উপস্থাপন করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ১৯৭২-এর ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের যাত্রা। কমিশনের চেয়ারম্যান স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী, সরকারপ্রধান। প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম। ৯ মে ২০২৩ সালে তিনি ৯৬ বছর বয়সে পরলোক গমন করেছেন। ‘অ্যান অডেসি : দ্য জার্নি অব মাই লাইফ’ তারই রচনা। প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের অকাল বিলয়ের কথা স্মরণ রেখে রচনাটির নাম দিলাম : প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের ট্র্যাজেডি। নুরুল ইসলাম লিখেছেন : প্রথম বছর আমরা ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরের বার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করলাম। এর প্রধান ফোকাস যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতির পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন। ১৯৭৩-এর মে মাসের মধ্যে আমাদের প্রধান কাজ প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন সম্পন্ন করলাম। কমিশনের সদস্যসহ আমাদের সবার কঠোর পরিশ্রম ও নিবেদিত প্রচেষ্টার ফল এই পরিকল্পনা দলিল। আমরা সবারই প্রণোদিত ছিলাম এবং এই চ্যালেঞ্জটি আমরা গ্রহণ করেছি। দেড় বছরের মধ্যে পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজে নিয়োজিত হয়ে আমরা নিশ্চিত থাকতে চাচ্ছিলাম যে আমরা বিদেশের সুপরিচিত অর্থনীতিবিদ এবং উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের উপদেশ ও মন্তব্য যেন পুরোপুরি লাভ করি। সে লক্ষ্যে ১৯৭৩-এর জানুয়ারিতে ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করি। ততদিনে খসড়া পরিকল্পনার ওপর কর্মপত্র প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। …আমরা উন্নত বিশ্বের সুপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানাই, তারা মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের। ফোর্ড ফাউন্ডেশন উদারভাবে এই সম্মেলনের ব্যয়ভার বহন করেছে। ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক এসোসিয়েশনের উদ্যোগে সম্মেলনটি হয়েছে; আমি এই এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং কোষাধ্যক্ষ। এই সম্মেলনের কার্যবিবরণী ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অস্টিন রবিনসন এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিথ গ্রিফিনের সম্পাদনায় ১৯৭৪ সালে প্রকাশনা সংস্থা ম্যাকমিলান থেকে ‘ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ উইথ অ্যা সোশ্যালিস্ট ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে প্রকাশিত হয়। সম্মেলনের এক পর্যায়ে বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করার জন্য নিয়ে যাই। উদ্দেশ্য আমাদের আগামী দিনের অর্থনীতি নিয়ে তিনি কী ভাবছেন তারা তার মুখ থেকে শুনবেন এবং প্রস্তুতি পর্বের আমাদের পরিকল্পনা তারা জানবেন। …আমরা মনে করেছি আমাদের সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক লক্ষ্য এবং অর্থনৈতিক নীতিমালা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক শিক্ষাঙ্গনের যেসব বিশেষজ্ঞ দরিদ্র দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজ করছেন তারা অবহিত। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ৭ কোটি মানুষের অত্যন্ত গরিব একটি দেশ বাংলাদেশ তখন ভয়ংকর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। সে সময় আমাদের ‘বাস্কেট কেইস’ না হলেও ‘উন্নয়নের টেস্ট কেইস’ বলা হতো। এটাও স্মরণ রাখতে হবে আমন্ত্রিত আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদরা উন্নত দেশের উন্নয়ন সহায়তা মন্ত্রণালয় এবং এজেন্সির সংশ্লিষ্ট। কাজেই আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সম্প্রদায়ের কাছে তারাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা ব্যাখ্যা করতে পারবেন এবং বাংলাদেশকে উদার সহায়তা প্রদানের সমর্থন জানাতে পারবেন। বিতর্ক, আলোচনা এবং অনুমোদনের জন্য কখনোই এই পরিকল্পনা দলিল জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত হয়নি। মন্ত্রিপরিষদে এর অনুমোদন হয় এবং ১৯৭৩ থেকে তা কার্যকর ঘোষিত হয়। তখন পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন এবং দেড় বছর পেরিয়ে গেছে, ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতিতে তা আলোচিত হয়। পাকিস্তান ইকোনমিক এসোসিয়েশনের যারা পূর্ব পাকিস্তানি নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন তারাই বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির অ্যাডহক কমিটি গঠন করেন। কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মাজহারুল হক। এই সমিতির আলোচনার পর মন্তব্য ও ভাবভঙ্গি থেকে মনে হলো পরিকল্পনা গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যারা বাদ পড়ে গেছেন তাদের অসন্তোষ এতে প্রকাশিত হয়েছে। …অর্থনীতিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করা হোক বা না হোক সেটা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় নয়, বরং ঐতিহ্যগতভাবে তারা চান অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়নের সময় তাদের মতামত চাওয়া হোক। আমাদের তরফ থেকে এটা বাদ পড়ে যাওয়ার দুটো কারণ- প্রথমত, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে আমাদের কাজ করতে হয়েছে; দ্বিতীয়ত, আমাদের বিষয়ভিত্তিক কনসালটেটিভ কমিটিতে বিদেশি অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা তো ছিলেনই। ১৯৭৩-এর মাঝামাঝি সময়ে প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে আমি ও আমার সহকর্মীরা এর উপসংহারে পৌঁছলাম যে, প্ল্যানিং কমিশনে আমাদের যে জীবন তা নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমাদের এ মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক, যা দ্ব›দ্ব ও হতাশায় পরিপূর্ণ, এ সম্পর্কে আমি আগেই বর্ণনা করেছি। অধিকন্তু আমাদের অনেক প্রস্তাবিত পলিসি মন্ত্রিপরিষদে গৃহীত হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রভাবিত ও সমঝোতা করছে না, তারা কার্যত আমাদের সমর্থন জানাচ্ছে না। এর আংশিক কারণ প্রস্তাবিত নীতি বা কর্মসূচি গ্রহণ করতে প্রভাবিত ও সমঝোতা করার কৌশলে আমাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও মেজাজের ঘাটতি আর বাকিটা দেশে উন্নয়নের, যা দ্রুত করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করেছি তার সঙ্গে রাজনীতিবিদ ও চাকুরেরা পুরোপুরি একমত হন। ফলে আমরা হতাশায় ভুগতে থাকি। আমরা যেভাবে নতুন রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেছি, তাতে আমরা যতক্ষণ কাজে লাগাতে পারি, আমরা সে পর্যন্ত পরিকল্পনা কমিশনে থেকে যাওয়ার নৈতিক বাধ্যবাধকতা অনুভব করি। আর তা ঘটেছে পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু করে পূর্ব পাকিস্তানের জন্য অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার আদায়ে আমাদের প্রচেষ্টা এবং ষাটের দশকের শেষভাগে ছয় দফার বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শদানের মধ্য দিয়ে। শেষ পর্যন্ত আমরা ধরে নিয়েছি আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় যে ধারণা ও প্রেক্ষিত আমরা পেয়েছি পরিকল্পনা দলিলে তা অন্তর্ভুক্ত করা। যেহেতু পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে এখন নতুন একদল পেশাদার অর্থনীতিবিদ ও সিভিল সার্ভেন্টের কাছে দায়িত্বভার অর্পণ করা দরকার, যাদের তা বাস্তবায়নের যথার্থ মেজাজ ও সক্ষমতা রয়েছে। …সংক্ষেপে বলতে গেলে এই পরিস্থিতিতে পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা কোনো কার্যকর বা উৎপাদনমুখী ফলাফল বয়ে আনবে না কিংবা ব্যক্তিগতভাবে বা পেশাগতভাবে আমাদের জন্য তৃপ্তিকরও হবে না। কমিশনের সদস্যদের নিয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি এবং আমাদের বক্তব্য পেশ করি। আমরা তাকে আশ্বস্ত করি যদি কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কিংবা ক্ষেত্রে আমাদের সবার তার প্রয়োজন হয় আমরা বরাবরই আসার জন্য প্রস্তুত থাকব এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে তাকে পরামর্শ দেব, এতে তা পরিকল্পনা কমিশনের কোনো সদস্য বা সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে নয়। তিনি জানতেন অতীতেও যখন তিনি চেয়েছেন আমরা নির্দ্বিধায় ও অক্লান্তভাবে তার জন্য কাজ করেছি। অতএব বিরাজমান পরিস্থিতিতে আমরা যা পছন্দের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলাম সেই শিক্ষকতা ও গবেষণায় আমাদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। প্রধানমন্ত্রী আমাদের অবস্থান ঠিক বুঝতে পারলেন না কিংবা পরিকল্পনা কমিশনে নেতৃত্বের সংবেদনশীলতা অনুধাবন করলেন না। তিনি বেশ জোর দিয়ে বললেন, আমরা তাকে ছেড়ে যেতে পারব না। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সমাপ্তির পর এবার আমাদের কাজ শুরু হলো- আমাদের পুরনো কাজের প্রতি আমরা দায়িত্বশীল, আগামীর বাংলাদেশ প্রত্যাশার সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত, আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাব, সরকার কেবল সংগঠিত হচ্ছে, এ অবস্থা আমরা ছেড়ে যাব না। ১৯৭৩-এর সাধারণ নির্বাচনের আগে তিনি পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কেবিনেটে অন্যান্য সদস্য পার্টি ও সংসদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং ডেপুটি চেয়ারম্যানের কার্যকারিতা প্রসঙ্গটি উত্থাপন করলেন। তিনি আচরণে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কেবিনেট সদস্যদের সঙ্গে আমার কোনো ফারাক করতেন না। তিনি আমাকে সংসদে বিজয়ী করে আমার অবস্থান প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমি এই প্রস্তাব গ্রহণে অত্যন্ত অনিচ্ছুক ছিলাম। আমার মধ্যে রাজনীতিবিদ হওয়ার কোনো ধাঁচ নেই, কোনো বাসনা, রাজনীতিতে লেগে থাকার যে শক্তি- আমার কিছুই নেই। তিনি বললেন, আমাকে কোনো নির্বাচনী প্রচার চালাতে হবে না। আমার নির্বাচন এলাকায় দু-একটি সভায় আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে থাকব, যা বলার তিনিই বলবেন, আমি শুধু দু-একটা কথা বলব। এভাবেই তিনি আমাকে রাজনীতিবিদ বানিয়ে নিতে চাচ্ছেন যদিও আমার রাজনীতির কোনো দক্ষতা, মানসিকতা ও সংশ্লিষ্টতা নেই। যখন আমি প্রতিবাদ করে বললাম আমি তার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব না তিনি জোর দিয়ে বললেন, আমার ধারণা ভুল- তিনি যদি কামাল হোসেনকে একজন রাজনীতিবিদ বানাতে পারেন তাহলে আমাকে রাজনীতিবিদ বানাতে না পারার কোনো কারণ নেই। তিনি আফসোস করলেন এবং আমাকে অনির্বাচিত ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যেতে বললেন। ১৯৭৪ সালের মধ্যেই কমিশনের কার্যকারিতায় লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটল। ক্রমে মন্ত্রণালয়ই যুক্তিতে জিতে গেল- বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে একবার যে অর্থ বরাদ্দ করা হবে তার কর্মসূচির অগ্রাধিকার তালিকা প্রণয়ন ও নীতিনির্ধারণ সেই মন্ত্রণালয় বা সেক্টরেরই একক দায়িত্ব হবে। ক্রস-সেক্টরাল প্রোগ্রাম বা আন্তঃমন্ত্রণালয় কর্মসূচির সমন্বয় বা নীতি প্রণয়ন আর পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্ব নয়। অন্যভাবে বলা যায় পরিকল্পনা কমিশনের দায়িত্ব বহুলাংশে কাটছাঁট করে দেয়া হলো। অতএব আমরা কমিশনের সদস্যরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম যে আমাদের ভূমিকা রিডানডেন্ট হয়ে গেছে। অধিকন্তু সে সময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে সম্পদের ঘাটতি এবং উচ্চমাত্রার মুদ্রাস্ফীতি এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে দীর্ঘমেয়াদি দূরে থাকুক, মধ্যমেয়াদি প্রভাব কী হবে তা বিবেচনা না করেই অ্যাডহক ভিত্তিতে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং কায়েমি স্বার্থান্বেষী মহলের চাপে যখন যেমন প্রয়োজন অ্যাডহক কার্যক্রম চলতে থাকে। জোর দিয়েই বলা যায় সে সময় সরকার বিভিন্নমুখী রাজনৈতিক বিষয়ের অভ্যুদয় নিয়ে ব্যতিব্যস্ত ছিল- সব বিষয়ই সরকারের অনুকূলে ছিল এমন নয়। রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি নিবদ্ধ ছিল বিভিন্নমুখী রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি কীভাবে মোকাবিলা করা যায়। কমিশনের খণ্ডকালীন সদস্য আনিসুর রহমান ততদিনে পরিকল্পনা কমিশনের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে ফেলেছেন। আমরা বাকি সবাই কমিশন ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিলাম, তবে সবাই একসঙ্গে যাব না, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে, বিভিন্ন ধরনের অজুহাতে নিঃশব্দে দৃষ্টির অগোচরে বেরিয়ে যাব। সবাই একসঙ্গে বেরিয়ে গেলে বা পদত্যাগ করলে তা অধিকতর দৃষ্টিগোচর হবে এবং তা সরকারকে বিব্রতও করতে পারে। আমাদের সম্মিলিত কার্যক্রম কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে এমন কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত করা থেকে আমরা সতর্ক ছিলাম। অর্থনৈতিক নীতিমালা প্রণয়ন কিংবা উপদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে আমরা যে তুলনামূলকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছি, আমরা মনে করলাম ধীরে ধীরে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে তা নজরে পড়বে না। (পরবর্তী অংশ আগামী সপ্তাহে)

ড. এম এ মোমেন : সাবেক সরকারি চাকুরে, নন-ফিকশন ও কলাম লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App