×

জাতীয়

মনিরা পারভীন হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ০৫:৩০ পিএম

মনিরা পারভীন হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় যৌতুকের জন্য শিকার হন নববধূ মনিরা পারভীন। এক দশক আগে সেই হত্যা মামলায় ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত না হওয়ায় মনিরার স্বামী নাসির হোসেনকে খালাস দেয়া হয়েছে রায়ে। কয়েক দফা পেছানোর পর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক মাফরোজা পারভীন বৃহস্পতিবার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিত আসামিদের সবাই জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। মনিরার স্বামী নাসিরের ভাই মাসুদ, বোন হাসিনা ও তার স্বামী মিলন, মিলনের ভাই দেলোয়ার হোসেন ও নাসিরের চাচা দ্বীন ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। রায়ে বিচারক বলেন, এটা একটি ঠাণ্ডা মাথার খুন। দণ্ডিতরা যেন কাঠগড়া থেকে পালাতে না পারে। রাষ্ট্রপক্ষকে বিচারক বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ ডাকুন। এদের সাবধানতা অবলম্বন করে কারাগারে নিয়ে যান। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য শুনে বৃহস্পতিবার পাঁচজনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিল আদালত। রায় শুনে মনিরার বাবা মো. মোস্তফাকে কাঁদতে দেখা যায়। আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আসামিদের সাজা যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়। মনিরার চাচাতো বোন হাবিবা আক্তার ইতি রায়ের পর সাংবাদিকদের বলেন, নাসির খালাস পাওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট, তার বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ নেই, সে হত্যাকাণ্ডে ছিল না। আমরা তার বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্যও দিইনি। মনিরাকে হত্যার অভিযোগে ২০১৩ সালে ২৩ জুন খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন রিকশা চালক বাবা মো. মোস্তফা। সেখানে নাসির ও তার চাচাসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা খিলক্ষেত থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কেএম আশরাফ উদ্দিন। পরে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। মামলায় বলা হয়, খিলক্ষেতে মনিরা পারভীন ও নাসির হোসেনের বাসা ছিল পাশপাশি। ২০১৩ সালের ১৮ জুন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে মনিরা ওষুধ কেনার জন্য বাসা থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির পর পরিবার জানতে পারে, কাজী অফিসে নিয়ে গিয়ে মনিরাকে বিয়ে করেছেন নাসির। মনিরার বাবা মোস্তফা এই খবর শোনার পর নাসিরদের বাসায় যান এবং তার বাবা হাছেন আলীকে বলেন। তিনি তার মেয়েকে খুঁজে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। তখন হাছেন আলী ক্ষিপ্ত হয়ে মোস্তফার কাছে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন বলে অভিযোগে বলা হয়। যৌতুক না দিলে বাবা-মেয়েকে খুনের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করা হয়। আরো বলা হয়, ওই ঘটনার পরদিন মনিরাকে নিয়ে নাসির তার বাসায় যান। বাড়িতে ঢোকার পরপরই নাসিরের বাবা, মাসহ পরিবারের অন্যরা মিলে মনিরাকে ক্রিকেটের স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে, কিলঘুষি মেরে গুরুতর জখম করে বাড়ির কাছে একটি বালুর মাঠে ফেলে রাখে। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আশিয়ান সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৩ সালের ২২ জুন মনিরার মৃত্যু হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App