×

মুক্তচিন্তা

পটুয়াখালী হোক পর্যটন শহর

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২৩, ১২:৪৭ এএম

পটুয়াখালী হোক পর্যটন শহর

পটুয়াখালী শহরের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত বহলগাছিয়া নদীর ওপর নির্মিত ৪টি বাঁধকে কেটে নদীতে পুনরায় সচল করে ১৩টি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। নদীর দুই প্রান্তে যদি দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষা প্রাচীর, ওয়াক ওয়ে, বসার স্থান, সাইকেল লেন, ডিভাইডারসহ দ্বিমুখী রাস্তা নির্মাণ, ডিভাইডারে দৃষ্টিনন্দন সড়ক বাতি ও বৃক্ষরোপণ করে এবং নদীতে রাফটিং বোট, প্রতিটি ব্রিজের পাশে এক্সক্লুসিভ ভাসমান ডেক, নোঙর করা ভাসমান হোটেল (বোট) স্থাপন করা হয় তাহলে পর্যটক আকর্ষণ করা সম্ভব। শহরের উত্তর প্রান্তে উত্তর-দক্ষিণ তীর সংযোগের আওতায় পটুয়াখালী নদীর ওপর লাউকাঠী, কচাঁবুনিয়া, নিউমার্কেট ও ফটিকপট্টি পয়েন্টে ৪টি দৃষ্টিনন্দন ব্রিজ নির্মাণ করে নদীটির দুই প্রান্তে অর্থাৎ পায়রাকুঞ্জ থেকে লঞ্চঘাট (ভাজনা কিসমত থেকে চর লাউকাঠী) এলাকা পর্যন্ত ও লোহালিয়া নদীর পশ্চিম প্রান্ত অর্থাৎ লঞ্চঘাট থেকে ২নং বাঁধঘাট এলাকা পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র স্থাপন। শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত ২নং বাঁধঘাট থেকে ভুরিয়া পর্যন্ত লোহালিয়া নদীর দুই প্রান্তে বন বিভাগের মাধ্যমে রিজার্ভ ফরেস্ট স্থাপনের মাধ্যমে ওয়াচ টাওয়ার, ট্রি হাউস, জঙ্গল সাফারি, রাফটিং বোট, ওয়াটার স্পোর্টস স্থাপন করে পর্যটক আকর্ষণের জন্য ভুরিয়া পয়েন্ট ব্রিজ নির্মাণ। মিঠাপুর ও টেংরাখালীর চরে ইকোপার্ক স্থাপন। পায়রাকুঞ্জ ব্রিজ ও লঞ্চঘাট এলাকায় ল্যান্ডিং ডক নির্মাণসহ নতুনবাজার, লোহালিয়া ব্রিজ, ফেরিঘাট, ফটিকপট্টি, নিউমার্কেট, লাউকাঠী বাজার, চরলাউকাঠী, ভুরিয়া, কচাঁবুনিয়া, মিঠাপুর এলাকায় এক্সক্লুসিভ ভাসমান ডেক নির্মাণ। পায়রাকুঞ্জ এলাকার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বারবিকিউ প্লেস, বোট, লাউঞ্জার, অডিটোরিয়াম, পর্যটক সমাবেশের ব্যবস্থা। পটুয়াখালী লঞ্চঘাট থেকে চরপাড়া পর্যন্ত, পুরানবাজার ও পটুয়াখালী ব্রিজের দক্ষিণ পাড়ের নদীর তীরবর্তী স্থানগুলোতে বোটানিক্যাল গার্ডেনসহ পার্ক নির্মাণ। চরলাউকাঠী (লোহালিয়া ও কাকড়াবুনিয়া মৌজা) মিনি গলফ গ্রাউন্ড নির্মাণ। ভুরিয়া খেয়াঘাটের চর এলাকায় বিনোদন (ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্ড), মিনি চিড়িয়াখানা নির্মাণ। খলিসাখালী খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকার পার্ক নির্মাণসহ ওয়াটার স্পোর্টস ব্যবস্থা, খলিসাখালীর ডিসি পার্ক ও বোতলবুনিয়া রাজ্জাক বিশ্বাসের সাপের খামারকে আধুনিকতার ছোঁয়া প্রদান। লাউকাঠীর ওয়াপদা কলোনিতে পার্ক স্থাপনসহ মাল্টিন্যাশনাল স্পোর্টস কমপ্লেক্স (জিম, সুইমিং পুল, সেলটার), কাদা স্নান পুকুর নির্মাণ। পটুয়াখালী বিমানবন্দরকে সচল করে ছোট বিমান অবতরণের পাশাপাশি হেলিপ্যাড স্টেশনে রূপান্তর। সব পর্যটন পয়েন্টে পর্যটকদের সুবিধার জন্য হোটেল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, বিউটি সেলুন, মেডিটেশন সেন্টার, স্পা সেন্টার, পিকনিক স্পট, রিসাইকিলিং জোন, ঝুলন্ত ব্রিজ, বসার স্থানের ব্যবস্থা। শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার ভরাট এবং দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে দৃষ্টিনন্দন সুরক্ষা প্রাচীর, সড়ক বাতি, ওয়াক ওয়ে, বসার স্থান, সাইকেল লেন স্থাপন। আন্তর্জাতিক পর্যটকদের বিষয় মাথায় রেখে সরকারি জেলা উপজেলা মডেল মসজিদ, পটুয়াখালী বৌদ্ধ বিহারের ন্যায় মডেল গির্জা ও মডেল মন্দির নির্মাণ। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য পটুয়াখালী শহরে ট্যুরিস্ট পুলিশের ডিভিশন ও রিজিয়ন অফিস স্থাপন করে ডিভিশনে পটুয়াখালী ও বরিশাল রিজিয়ন রাখা। কুয়াকাটার পাশাপাশি পটুয়াখালী শহর, সোনারচর, তালতলী ও জাহাজমারায় ট্যুরিস্ট পুলিশের জোন স্থাপন। পটুয়াখালী শহরে নৌপুলিশের আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনসহ পটুয়াখালী নৌপুলিশ থানার পাশাপাশি পায়রাকুঞ্জ নৌপুলিশ ফাঁড়িকে নৌপুলিশ থানায় রূপান্তর। নৌপথে ভ্রমণের জন্য বিভিন্ন স্থানে নৌ-ফায়ার সার্ভিসের সমন্বয়ে রেসকিউ ও ডুবুরি টিম গঠন করে নিয়মিত টহল। জঙ্গল সাফারি ও রিজার্ভ ফরেস্টের জন্য বন বিভাগের রেসকিউ টিম ও মেডিকেল টিম গঠন। কিশোর অপরাধী ও বখাটেদের হাত থেকে রক্ষার্থে পর্যটকসহ সবার জীবন-জীবিকার প্রয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় পুলিশ ক্যাম্প ও নিয়মিত টহল। পায়রা-কুয়াকাটা কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান প্রজেক্টের আওতায় পটুয়াখালী সদর উপজেলাকে অন্তর্ভুক্ত করে পর্যটনবিষয়ক সব কার্যক্রম সম্পাদন করলে দক্ষিণাঞ্চল তথা দেশের অর্থনীতিতে যুগান্তকারী সুফল বয়ে আনবে।

রিপন কুমার দাস : প্রকৌশলী, ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর, ডোনাভান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালী। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App